জি-২০ বৈঠক থেকে বেরোচ্ছেন আইএমএফের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। শনিবার বেঙ্গালুরুতে। ছবি: রয়টার্স।
বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বিভিন্ন দেশের ঋণ পুনর্গঠন যে কতটা জরুরি, সেই কথা ফের উঠে এল জি-২০ বৈঠকের মঞ্চে। গোষ্ঠীর অর্থমন্ত্রী এবং শীর্ষ ব্যাঙ্কের কর্তাদের বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বার্তা, সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের ঋণদাতাদেরই একজোটে সমস্যা মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে হবে। সেই প্রক্রিয়া যাতে সুষ্ঠু ভাবে এবং দ্রুত চালানো যায়, তার জন্য প্রথমে তাদের এক টেবিলে টেনে আনা দরকার। ঋণগ্রস্ত দেশগুলিকে যাতে পুনর্গঠনের জন্য বেশি দিন অপেক্ষা করতে না-হয়, সেটা নিশ্চিত করাও জরুরি। পাশাপাশি নির্মলা জানান, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ব্যাঙ্কগুলিকে শক্তিশালী করতে বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করেছেন তাঁরা। তিন মাসে তারা রিপোর্ট দেবে।
আজ এই ঋণের ঝুঁকি নিয়ে আলাদা আলোচনায় বসেছিল আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারও (আইএমএফ)। নির্মলা ছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব ব্যাঙ্ক, চিন, সৌদি আরব এবং জি-৭ দেশগুলির প্রতিনিধিরা। যদিও সেখানে গরিব দেশগুলির ঋণ পুনর্গঠন জরুরি জানিয়েও, এ বিষয়ে কোনও ঐকমত্যে পৌঁছনো যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন আইএমএফের কর্ণধার ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। শুধু জানান, এই ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের যে এক মত হওয়া দরকার, তা আরও স্পষ্ট হয়েছে। সেই সঙ্গে অবশ্য ফের ভারতের আর্থিক স্থিতিশীলতার প্রশংসাও শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে।
করোনার সঙ্কট মোকাবিলা করতে গিয়ে বিভিন্ন দেশকেই ঋণ নিতে হয়েছে। তার উপরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়েছে। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা দেশগুলির উপরে ঋণের বোঝা বেশি চেপেছে। এ প্রসঙ্গেই বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে আরও শক্তিশালী করা, ঋণ পুনর্গঠনের উপরে জোর দিয়েছেন জর্জিয়েভা। কথা হয়েছে ঋণদানকারী দেশগুলির বকেয়ায় ছাড় দেওয়া নিয়েও। তবে এ ক্ষেত্রে চিনের উপরে বকেয়া ছাড় দেওয়ার চাপ বাড়লেও অনড় বেজিং। শুক্রবারই জি-২০ বৈঠকে সে দেশের অর্থমন্ত্রী লিউ কুন ভিডিয়ো বার্তায় বলেছেন, শুধু কোনও দেশ নয়, বরং বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানকেও এই ছাড় দেওয়ার জন্য রাজি হতে হবে। এর আগে অবশ্য আমেরিকার অর্থসচিব জ্যানেট ইয়ালেন বলেছেন, চিনের মতো দেশ যাতে বকেয়া ছাড় দেয়, তার জন্য জোর দেবেন তাঁরা।
পাশাপাশি শনিবার জর্জিয়েভা বলেন, সারা বিশ্বে ভারত এখন ‘উজ্জ্বল বিন্দু’। ২০২৩ সালে সারা পৃথিবীর জিডিপি-তে যাদের অংশীদারি দাঁড়াবে ১৫%। কিন্তু এ বছরে বিশ্ব অর্থনীতি শ্লথ হওয়ার সম্ভাবনা। যার মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক আর্থিক কাঠামো ঢেলে সাজানো উচিত। তাঁর কথায়, ‘‘বহু দেশে অসংখ্য মানুষ শুধু জীবনধারণের লড়াই করছেন। এর আগে জি-২০ গোষ্ঠীর নীতি তৈরির ক্ষেত্রে যে কথা বলেছিল, এখনও বলব এই পরিস্থিতিতে ওই সব মানুষকে সুরাহা দিতে সব দেশকে একসঙ্গে মিলে রফাসূত্র খুঁজতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy