Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

উঠে এল ‘এক টুকরো ভারত’, ‘হাউডি মোদী’-তে মৈত্রীর জয়গান

নরেন্দ্র মোদী তখনও পৌঁছননি হিউস্টনের এনআরজি স্টেডিয়ামে। ‘হাউডি মোদী’-র মঞ্চে চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কথায়-সুরে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে আমেরিকার ভারতীয় বংশোদ্ভূত সমাজ।

হাইডি মোদী সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এপি।

হাইডি মোদী সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এপি।

অগ্নি রায়
নিউ ইয়র্ক শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৭
Share: Save:

ফিরে ফিরে আসছে গানের লাইনগুলো। ‘‘হাম বুলবুলে হ্যায় আমরিকি, হ্যায় হিন্দুস্তানি আওয়াজ।’’ আমরা ছিলাম, আছি, থাকব। জোর গলায় বলো, আমরা যা, তাতেই আমরা গর্বিত।

নরেন্দ্র মোদী তখনও পৌঁছননি হিউস্টনের এনআরজি স্টেডিয়ামে। ‘হাউডি মোদী’-র মঞ্চে চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কথায়-সুরে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে আমেরিকার ভারতীয় বংশোদ্ভূত সমাজ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রগতিতে যাদের অবদানের কথা ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যেই নিজের বক্তৃতায় বললেন খোদ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যাদের সঙ্গে হিউস্টনের ‘অসাধারণ’ সম্পর্কের স্মারক হিসেবে মোদীর হাতে সোনালি রঙের স্মারক-চাবি তুলে দিলেন শহরের মেয়র সিলভেস্টার টার্নার।

উদ্যোক্তারা বলেছিলেন, ৫০ হাজার দর্শকাসনের একটিও ফাঁকা থাকবে না। ভারতীয় সময় ৯টা ৪০ মিনিটে মোদী আসার সময়ে দেখা গেল, প্রায় ঠাসা স্টেডিয়ামে হাতে-হাতে উড়ছে ভারতের পতাকা। পাক খাচ্ছে ‘মোদী-মোদী’ স্লোগান। বাইরেও কত রং! রাজস্থানী পোশাক আর তেরঙ্গা পাগড়ি পরে নেচে চলেছেন এক মাঝবয়সি। বিকোচ্ছে ‘হাউডি মোদী’ লেখা টি-শার্ট। রমেশ মোদী নামে এক ব্যক্তি ‘গাঁধী’ সেজে এসেছেন। বললেন, ‘‘গাঁধী-মোদী একই। দু’জনেই ফকির। তাই গাঁধী সেজে ওঁকে স্বাগত জানাতে এসেছি।’’

মূল সুর অবশ্য ভারত-মার্কিন মেলবন্ধনের। মঞ্চও সাজানো হয়েছিল দু’দেশের পতাকায়। যে মঞ্চে টানা দেড় ঘণ্টা বিচিত্রানুষ্ঠান করলেন ২৭টি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর চারশো শিল্পী। যে মঞ্চে উঠে নিজস্বী তুলতে দেখা গেল আমন্ত্রিত মার্কিন রাজনীতিকদের।

শিখ সম্প্রদায়ের কীর্তনে অনুষ্ঠান শুরুর পরে মঞ্চে এল খুদেরা। তাদের পরে যুবক-যুবতীরা। জায়ান্ট স্ক্রিনে তখন চলছে মানানসই ভিডিয়ো। যে ভিডিয়ো বলছে, নবীন ভারতীয় বংশোদ্ভূতেরা একই সঙ্গে সামোসা এবং বার্গারের, ব্র্যাড পিট এবং অমিতাভ বচ্চনের ভক্ত। মাঝে মাঝেই পর্দায় ‘বিশেষ’ কয়েক জন ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে নিয়ে ভিডিয়ো ক্লিপিং। কেউ দাতব্য সংস্থায় খাবার দেন, কেউ যত্ন নেন আশ্রয়হীন পোষ্যদের। কেউ বানান পরিবেশবান্ধব কাগজের ব্যাগ। পর্দায় ফুটে ওঠা হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাপটে ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণী শোনালেন, কী ভাবে দুই দেশই মিশে আছে তাঁর রক্তে।

এ ভাবেই বারবার ফিরে যাওয়া ‘এক টুকরো ভারতে’। কখনও প্রয়াত জগজি‌ৎ সিংহের গজ়ল, কখনও জনপ্রিয় বলিউডি গানের ‘মেডলি’। ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্যে মঞ্চ মাতালেন শ্বেতাঙ্গ তরুণী। তবলায় ঝড় তুললেন এক মার্কিন যুবক। যোগাসনকে ভারতীয় তথা নিজস্ব ব্র্যান্ড করে তুলেছেন মোদী। হিউস্টনের মঞ্চে ম্যাট পেতে যোগাসন প্রদর্শনীও হল এক প্রস্ত। গাঁধীর সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে তাঁকে এবং মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রকে শ্রদ্ধা জানিয়ে নতুন আঙ্গিকে পরিবেশিত হল ‘বৈষ্ণবজনতো’। মোদী আর ট্রাম্প যখন মঞ্চে পাশাপাশি, তখন ‘জনগনমন’ গাইল ভারতীয় বংশোদ্ভূত কিশোর-কিশোরীরা।

আর রইলেন রবীন্দ্রনাথ। ভারতীয় সংস্কৃতির বহুত্ববাদের কথা শোনাতে গিয়ে পর্দায় ভেসে উঠল দুর্গার মুখ। বেজে উঠল, ‘‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy