নরেন্দ্র মোদী এবং ইমরান খান। ফাইল ছবি।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মঙ্গলবার যাবেন শ্রীলঙ্কা সফরে। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এটাই তাঁর প্রথম শ্রীলঙ্কা সফর। সেখানে যাওয়ার জন্য তাঁর বিশেষ বিমানকে ভারতীয় আকাশসীমা ব্যবহার করার অনুমতি দিল ভারত। ২০১৯ সালে যদিও বিদেশ সফরের জন্য নরেন্দ্র মোদীর বিমানকে আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি পাকিস্তান। কিন্তু পাকিস্তানের পথে হাঁটেনি ভারত। আন্তর্জাতিক নিয়ম বজায় রেখে ইমরানের বিমানকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালে আমেরিকা এবং সৌদি আরব সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সে সময় তাঁর বিমান যাওয়ার জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল ইসলামাবাদের কাছে। কিন্তু কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে— এই অভিযোগে মোদীর বিমানকে অনুমতি দেয়নি ইমরানের দেশ। বিষয়টি সে সময় আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থায় (সিভিল অ্যাভিয়েশন সোসাইটি) জানিয়েছিল ভারত।
সাধারণত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের বিমান যাতায়াতের জন্য আন্তর্জাতিক ওই সংস্থার নিয়ম মেনে অনুমতি দেয় বিভিন্ন দেশ। কিন্তু ২০১৯ সালে তা লঙ্ঘন করেছিল পাকিস্তান।
ইমরান শ্রীলঙ্কা সফরে গেলেও তাঁর বক্তৃতার পূর্বঘোষিত কর্মসূচি বাতিল করেছে শ্রীলঙ্কা পার্লামেন্ট। বুধবার শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে ইমরানের বক্তৃতা দেওয়ার কথা জানিয়েছিল শ্রীলঙ্কার বিদেশ দফতর। কিন্তু গত বুধবার পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা অভয়বর্ধন বলেন, ‘‘বিশেষ কারণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পার্লামেন্টে বক্তৃতা বাতিল করা হয়েছে।’’
সরকারি ভাবে শ্রীলঙ্কা পার্লামেন্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণেই ইমরানের বক্তৃতা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বুধবার কলম্বোয় সর্বদল বৈঠকের পর রাজনৈতিক মহলের খবর, পার্লামেন্টের বক্তৃতায় ইমরান কাশ্মীর সমস্যার প্রসঙ্গ তুলতে পারেন। সেটা হলে ভারত চটে য়েতে পারে আঁচ পেয়েই তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের সরকার। পার্লামেন্টের বক্তৃতা বাতিল হলেও গোতাবায়া, মাহিন্দা-সহ রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের কর্মসূচি অপরিবর্তিত রয়েছে বলে শ্রীলঙ্কা সরকার জানিয়েছে।
সর্বদল বৈঠকে হাজির এক রাজনৈতিক নেতা বুধবার বিকেলে একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘পার্লামেন্টে ইমরান বক্তৃতা করলে, কাশ্মীর প্রসঙ্গের অবতারণা করতে পারেন বলে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।’’ ঘটনাচক্রে, গত সপ্তাহেই দিল্লি সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেছিলেন গোতাবায়ার দাদা তথা শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে সন্ত্রাস দমনে দ্বিপাক্ষিক পদক্ষেপের পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক আর্থিক, বাণিজ্যিক এবং সাংস্কৃতিক যোগাযোগ নিবিড় করার কথা বলা হয়েছিল। গত নভেম্বরে ‘চিন ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত গোতাবায়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরেই কলম্বোর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্রিয় হয়েছিল নয়াদিল্লি।
এই আবহে ভারতের তথাকথিত ‘বন্ধুরাষ্ট্র’ শ্রীলঙ্কায় ভারতেরই আরও এক প্রতিবেশী তথা চিনের ‘বন্ধুরাষ্ট্র’ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সফর কূটনৈতিকভাবে বেশ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy