Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
India

নেপাল নিয়ে উদ্বেগেই দিল্লি

ঘরোয়া ভাবে জানানো হচ্ছে, এই ঘটনায় আপাত ভাবে নেপালে বেশ কিছু বছর ধরে তৈরি হওয়া ভারত-বিরোধী আবেগ কিছুটা থমকে যাবে।

কে পি শর্মা ওলি। —ফাইল চিত্র।

কে পি শর্মা ওলি। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:২০
Share: Save:

নেপালের পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির সুপারিশে প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভান্ডারী অন্তর্বর্তী নির্বাচনের কথা ঘোষণা করার ফলে সেখানে রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। বিষয়টির দিকে সতর্ক নজর রাখলেও এখনও প্রকাশ্যে কোনও বিবৃতি দেয়নি নয়াদিল্লি। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, হাওয়া কোন দিকে বইবে তা না বুঝে আগে থেকে কোনও মন্তব্য করে নেপাল বিতর্কে নিজেদের জড়াতে চায় না সাউথ ব্লক।

তবে ঘরোয়া ভাবে জানানো হচ্ছে, এই ঘটনায় আপাত ভাবে নেপালে বেশ কিছু বছর ধরে তৈরি হওয়া ভারত-বিরোধী আবেগ কিছুটা থমকে যাবে। হয়তো কিছু দিনের জন্য রাজনৈতিক ডামাডোলের বাজারে নেপালকে ব্যবহার করে চিনের ভারতের উপরে চাপ তৈরির প্রয়াসও মুলতুবি থাকবে। মানচিত্র পরিবর্তন করে ভারতের তিনটি সীমান্তবর্তী এলাকাকে নেপালের অন্তর্ভুক্ত বলে দেখানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওলি সরকার, নতুন সরকার এলে হয়তো তাকেও বদলানো সহজতর হবে। কিন্তু এ হেন টালমাটাল পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে গণতন্ত্র বির্পযস্ত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী ভাবে বেজিং-এর প্রভাব বাড়বে বই কমবে না। গোটা বিষয়টিই সীমান্ত রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে উদ্বেগজনক বলেই মনে করা হচ্ছে।

এক কূটনৈতিক কর্তার বক্তব্য, “ভারত ঐতিহাসিক ভাবে নেপালে গণতন্ত্র এবং প্রগতিশীল পরিবর্তনের পক্ষে নিজের সমর্থন দিয়ে এসেছে। নেপালের সুস্থিতি এবং নিরাপত্তা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সে দেশে দীর্ঘদিন অস্থিরতা বহাল থাকলে বিভিন্ন বাইরের শক্তির উত্থান ঘটবে। তার মধ্যে রয়েছে তৃতীয় কোনও দেশ বা স্বার্থ।’’ তাঁর মতে, এই অস্থিরতা চললে, প্রাথমিক ভাবে নেপালের কমিউনিস্ট জোট দুর্বল হবে। আর দীর্ঘমেয়াদী ভাবে ক্ষতি হবে সে দেশের গণতন্ত্রের।

নয়াদিল্লির মতে, নেপাল বেশ কয়েক মাস ধরেই বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হচ্ছিল। কোভিড মোকাবিলার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ভূমিকা নিতে না পারা, অর্থনীতিতে টালমাটাল পরিস্থিতি, শাসক দলের মধ্যে বিরুদ্ধ স্বর, রাস্তায় রাজতন্ত্র এবং হিন্দু রাষ্ট্রের পক্ষে আন্দোলন—সব মিলিয়ে অস্থির করে রেখেছিল ওলি সরকারকে। ওলির সঙ্গে চিনের সম্পর্কের সুতোও কেটে গিয়েছিল বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। নেপাল কমিউনিস্ট পার্টিকে একজোট রেখে নিজেদের বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত লক্ষ্য পূরণেই চিন বেশি ব্যস্ত, ওলির নেতৃত্বকে চোখ বুজে সমর্থন করায় নয়—এটা তিনি নিজে বোঝার পরই ভারতকে বার্তা দিয়েছিলেন। ভারত-বিরোধিতার পুরনো তাসকে বাতিল করে ভারতের নেতৃত্বের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করেছে তাঁর সরকার গত কয়েক মাসে। র-এর প্রধান থেকে ভারতের সেনাপ্রধান—কাঠমান্ডু সফর
করেছেন সম্প্রতি।

কিন্তু গোটা দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়াটিই আপাতত থমকে গেল। কত দিনের জন্য সঠিক ভাবে বলা সম্ভব নয়। আপাতত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নেপালে নির্বাচন হবে কি না তা স্পষ্ট নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। তা না হলে সে দেশে ফের তৈরি হবে সাংবিধানিক সঙ্কট। যা ভারতের জন্যও যথেষ্ট সমস্যার বলেই মনে করা হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

India Nepal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy