Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
United States of America

আমেরিকা-রাশিয়া-চিন, বিশ্ব রাজনীতির ‘বারমুডা ট্র্যাঙ্গল’-এ দিশাহারা অবস্থা দিল্লির

ভারতের কাছে সব চেয়ে সুবিধাজনক পরিস্থিতি তৈরি হবে যদি আমেরিকা এবং রাশিয়ার মধ্যে কিছুটা বোঝাপড়া তৈরি হয়।

ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২১ ০৬:৪৪
Share: Save:

এক ত্রিমুখী ধাঁধার মধ্যে মোদী সরকারের বিদেশনীতি। যাকে কূটনৈতিক ত্রিভুজ বলেই অভিহিত করছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি ইউরোপ এবং আমেরিকার বেশ কয়েকটি বৈঠকের পর এই সঙ্কটের প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি করে টের পাচ্ছে ভারত।

আমেরিকা-রাশিয়া-চিন। এই তিন শক্তিধর রাষ্ট্রের পারস্পরিক সম্পর্কের ওঠাপড়ার সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে ভারতের স্বার্থ। কূটনৈতিক সূত্রে খবর— কৌশলগত, বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক এবং প্রতিরক্ষা— সব ক্ষেত্রেই এই পারস্পরিক সম্পর্কের ছায়া পড়ছে।

প্রথমত আমেরিকা-রাশিয়া সম্পর্ক অথৈ জলে। সম্প্রতি জেনিভায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকেও সে বরফ গলার সম্ভাবনা দেখা যায়নি। দুই, ইউরোপ যত রাশিয়াকে জঙ্গি সামরিক রাষ্ট্র হিসাবে দাগিয়ে দিতে চাইছে, মস্কো ততোই কাছে ঘেঁষছে বেজিং-এর। তিন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে চিন এবং রাশিয়ার সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হচ্ছে।

এই বিচিত্র পরিস্থিতির কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে ভারত। সাম্প্রতিক জি-৭, আমেরিকা-ইইউ এবং আমেরিকা-ন্যাটো বৈঠক থেকে একটি তথ্য সামনে আসছে। তা হল, পশ্চিমের চিন-বিরোধী সমস্ত পরিকল্পনায় সঙ্গী হিসাবে ভারতকে রাখা হচ্ছে। কোয়াড যার একটা উদাহরণ। কিন্তু এটাও নয়াদিল্লিকে মাপতে হচ্ছে, আমেরিকার প্রবল চিন-বিরোধিতার জাহাজে চড়াটা কতটা বাস্তবোচিত হবে। পাঁচগুণ শক্তিধর প্রতিবেশী চিনের সঙ্গে প্রবল সঙ্কট তৈরি হলে ওয়াশিংটনের উপর কতটা নির্ভর করা যাবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ে রয়েছে সাউথ ব্লক। বরং আমেরিকার যুদ্ধে নিজেরা শামিল না-হয়ে একটি চাঁছাছোলা চিন-নীতি যদি ভারত নিজে তৈরি করতে পারে, সেটা দ্বিপাক্ষিক এবং আঞ্চলিক স্তরে ভারতের জন্য ভাল।

আবার অস্ত্রসরঞ্জাম আমদানি এবং প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সমন্বয়ের প্রশ্নে রাশিয়া ভারতের প্রাচীনতম মিত্র। কিন্তু ভারত-আমেরিকার ঘনিষ্ঠতা বাড়তে দেখে সেই রাশিয়াও খুশি
নয়। আমেরিকার নেতৃত্বাধীন কোয়াড-এর প্রকাশ্য সমালোচনা করে মস্কো পৃথক ভাবে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কৌশল রচনা করতে চায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এক দিকে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন পশ্চিমি বিশ্ব এবং অন্য দিকে চিন-রাশিয়া— আসন্ন বিশ্বনীতি যদি এই স্পষ্ট দু’ভাগ হয়ে যায়, ভারতের কূটনৈতিক দর কষাকষির সম্ভাবনাও সীমিত হয়ে পড়বে। এই পরিস্থিতির ফায়দা তুলতে চাইবে চিন এবং পাকিস্তান।

ভারতের কাছে সব চেয়ে সুবিধাজনক পরিস্থিতি তৈরি হবে যদি আমেরিকা এবং রাশিয়ার মধ্যে কিছুটা বোঝাপড়া তৈরি হয়। সে ক্ষেত্রে রাশিয়ার চিন-নির্ভরতা কমবে। ওয়াশিংটনের পক্ষেও রাশিয়া-চিনের যৌথ শত্রুতা কাম্য নয়। বরং শুধুমাত্র চিনের দিকেই নিজেদের নিশানা স্থির রাখলে তা বেশি কার্যকরী হবে। কারণ রাশিয়া এখনও একা আমেরিকাকে চাপে ফেলার মতো বড় শক্তি নয়। তবে কূটনৈতিক সূত্রের মতে, বিভিন্ন কারণে ভারত চাইলেই রাতারাতি আমেরিকা-রাশিয়ার করমর্দন ঘটছে না। ফলে এই চাপ আপাতত বহালই থাকছে মোদী সরকারের উপর।

অন্য বিষয়গুলি:

United States of America China Russia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy