নেপালের পাশাপাশি ভারতের পক্ষেও গত কয়েক মাসে সুর নরম করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়। —ফাইল চিত্র।
ভারত-নেপাল সম্পর্ক শোধরানোর ইঙ্গিত আগেই পাওয়া গিয়েছিল। এ বার দু’দেশের মধ্যে শুরু হতে পারে বিদেশসচিব স্তরের বৈঠকও। তবে গোটা বিষয়টি নির্ভর করছে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির সঙ্গে ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল এম এম নরবণের বৈঠক কতটা ফলপ্রসূ হয়, তার উপর। আগামী ৫ নভেম্বর নেপাল সফরে যাবেন জেনারেল নরবণে।
নেপাল সেনাবাহিনীর সাম্মানিক শীর্ষাধিকারিকের পদ গ্রহণ করতে সে দেশে যাচ্ছেন জেনারেল নরবণে। তবে কূটনৈতিক মহলে অন্য কারণে গুরুত্ব পাচ্ছে এই সফর। ৩ দিনের সফরে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন জেনারেল নরবণে। সাম্প্রতিক কালে দু’দেশের সম্পর্ক নিয়ে জলঘোলার মাঝে যা বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। কারণ, ওই বৈঠক ইতিবাচক হলে শুরু হতে পারে দু’দেশের মধ্যে স্থগিত থাকা বিদেশসচিব স্তরের আলোচনা।
ভারত-নেপাল সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয় গত জুন থেকে। সে সময় এ দেশের অন্তর্গত তিনটি ভূখণ্ড নিজেদের বলে দাবি করে নেপাল। এমনকি নরেন্দ্র মোদী সরকারের আপত্তি গ্রাহ্য না করে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে উত্তরাখণ্ডের কালাপানি, লিপুলেখ গিরিপথ এবং লিম্পিয়াধুরাকে নিজেদের মানচিত্রে সংযোজিত করে কে পি শর্মা ওলি সরকার। এর পিছনে যে চিনের মদত রয়েছে, তা স্পষ্ট করেছে ওয়াকিবহাল মহল। মূলত, নিজের দেশে অতি জাতীয়তাবাদী হাওয়া ছড়াতে এবং নেপালি কমিউনিস্ট পার্টিতে নিজের কর্তৃত্ব আরও বাড়াতেই ওলি সরকারের এই পদক্ষেপ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক মহলের একাংশ। তবে ভারতের আপত্তি সত্ত্বেও ওই নতুন মানচিত্র সম্বলিত পাঠ্যবই প্রকাশ করে নেপালের শিক্ষা দফতর। এ নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং গুগলেরও দ্বারস্থ হয় নেপাল। এর পর থেকে দু’দেশের মধ্যে তিক্ততা শুরু হয়। জুন থেকে নেপালের সঙ্গে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা স্থগিত করে ভারত সরকার।
আরও পড়ুন: রাত পোহালেই ভোট আমেরিকায়, এগিয়ে বাইডেন॥ সমীক্ষা ‘ভুয়ো’, পাল্টা ট্রাম্পের
আরও পড়ুন: অভিনন্দন বর্তমান নিয়ে মন্তব্য, বিরোধী নেতার বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গের মামলা করছে পাকিস্তান
সম্পর্কের টানাপড়েন সত্ত্বেও দু’দেশই নিজেদের মনোভাব নরম করার ইঙ্গিত দিতে শুরু করে গত কয়েক মাস থেকে। সেপ্টেম্বরে ভারতের অনুরোধ মেনে নতুন মানচিত্র সম্বলিত পাঠ্যপুস্তক বিলি করা স্থগিত করে নেপালে শিক্ষা দফতর। এর পর গত মাসে ওলি সরকার জেনারেল নরবণের নেপাল সফরে সবুজ সঙ্কেত দেয়। পাশাপাশি, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে ঈশ্বর পোখরেলের মতো কট্টর ভারতবিরোধী নেতাকেও সরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী ওলি। জেনারেল নরবণেকে স্বাগত জানাতে পোখরেলের আপত্তি রয়েছে বলে ওই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ভারতের পক্ষেও সুর নরম করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়। দেশের গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র)-এর প্রধান সমন্তকুমার গয়াল গত সপ্তাহেই নেপালে গিয়ে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ওলির সঙ্গে এক প্রস্থ বৈঠক করেছেন। বৈঠকে দু’পক্ষই ভারত-নেপালের সভ্যতা, সংস্কৃতি এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উপর জোর দিয়েছেন।
এই আবহে জেনারেল নরবণের সঙ্গে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক। তাতে সদর্থক বার্তা পাওয়া গেলে দু’দেশের সম্পর্ক জোড়া লাগবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy