প্রতীকী ছবি
মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে চিনের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালো আমেরিকার নেতৃত্বে ৩৯টি দেশ। কিন্তু ভারত তাতে যোগ দিল না!
আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং ভারতকে নিয়ে গঠিত কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ (কোয়াড)-এর বৈঠকের পরে কোভিড এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন নিয়ে চিনের নাম করে বিরোধিতা করল ওয়াশিংটন। কিন্তু সেই সুরে সুর মেলাল না নয়াদিল্লি। সংশ্লিষ্ট বিবৃতিতে চিনের নামও করলেন না ভারতের বিদেশমন্ত্রী!
পূর্ব লাদাখে চিনের সঙ্গে যুযুধান ভারতের এহেন ‘নরম মনোভাব’ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে কূটনৈতিক শিবিরে। উঠছে নানা প্রশ্ন এবং বিতর্ক। সূত্রের বক্তব্য, একাধিক কারণ বিবেচনা করেই আমেরিকার চিন-বিরোধিতার অংশ হতে চাইছে না ভারত। প্রথমত, আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আসন্ন। এর পর সে দেশের চিন-নীতি কী হবে, তাতে কোনও পরিবর্তন আসবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। তাই আগ বাড়িয়ে আমেরিকার রাজনৈতিক কৌশলে সিলমোহর লাগাতে চাওয়া হচ্ছে না। দ্বিতীয় কারণ, চিনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। আলোচনার মাধ্যমেই সীমান্তে শান্তি ফেরানোর জন্য শক্তি ব্যয় করছে সাউথ ব্লক। বহু দূরবর্তী তৃতীয় একটি দেশের স্বার্থের সঙ্গে নিজেদের জুড়তে গিয়ে এই প্রক্রিয়াটি ভেস্তে দেওয়া কাম্য নয় বলেই মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক। তৃতীয়ত, রাশিয়ার সঙ্গে আগের মতো না-হোক, সামরিক ক্ষেত্রে নির্ভরতার সম্পর্ক গড়ে তুলেছে মোদী সরকার। রাশিয়া পিছনে থেকে ভারত এবং চিনের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রকাশ্যে আমেরিকাপন্থী হয়ে চিনকে গালি দিলে, রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের সুতো ছেঁড়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।
গত কয়েক মাস ভারতীয় ভূখণ্ডে লাল-ফৌজ থানা গেড়ে বসে থাকার পরেও দিল্লি কেন কথায় ও কাজে চরম আক্রমণাত্মক হচ্ছে না, এই প্রশ্ন বার বার তুলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। চিন গত কাল ‘ভারত লাদাখকে অবৈধ ভাবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করেছে’ বলে হুমকি দেওয়ার পরেও মুখ খোলেনি বিদেশ মন্ত্রক। কংগ্রেসের অভিযোগ, চিনকে চটানোর মতো বুকের ছাতি মোদীর নেই। তাই অন্য দেশ সরাসরি চিনের বিরুদ্ধে মুখ খুললেও ভারত তা করছে না।
সম্প্রতি আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন-সহ ৩৯টি দেশ রাষ্ট্রপুঞ্জের থার্ড কমিটি (সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত কমিটি)-র কাছে পেশ করা বিবৃতিতে বলেছে তিব্বত, হংকং এবং ঝিংঝিয়াং-এ মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে চিন। বিশেষ করে তিব্বত এবং ঝিংঝিয়াং-এ ধর্মীয় এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের উপর প্রবল অত্যাচার হচ্ছে। ঝিংঝিয়াং-এ বলপূর্বক কয়েক লাখ মানুষকে আটক রাখার বিষয়টিরও উল্লেখ করা হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে চিন-বিরোধী এই আন্তর্জাতিক প্রচারে ভারত যোগ দেয়নি।
আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির বৈঠকের পরে অবশ্য চিন নিয়ে বুক ঠুকেছে কেন্দ্র। বৈঠকের অন্যতম আলোচ্য ছিল প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতি। বৈঠকের পরে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর সাংবাদিকদের বলেন, “আপনারা দেখেছেন যে, ২০১৪ সালের পরের ভারত, আর আগের ভারত এক নয়। চিন সীমান্তে যে ভাবে পাহারা দেওয়া হচ্ছে, তেমনটা আগে কখনও হয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy