সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পর থেকেই ভারত বিরোধিতার সুর চরমে তুলেছিল পাকিস্তান। কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলকে ‘ভাবিয়ে তুলতে’ কূটনৈতিক স্তরে চেষ্টার কসুর করেনি ইসলামাবাদ। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভাতেও এ নিয়ে ‘শোরগোল’ তুলতে চায় তারা। কিন্তু, এ বার তা নিয়ে হতাশার সুর ফুটে উঠল পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গলায়। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে হতাশ ইমরানকে বলতে শোনা যায়, ‘কাশ্মীর নিয়ে মোদীর উপর কোনও চাপই তৈরি হয়নি এখনও।’ এ নিয়ে তিনি ‘দোষারোপ’ করেছেন আন্তর্জাতিক মহলকেই।
জম্মু-কাশ্মীরের ‘বিশেষ মর্যাদা’ খর্ব করা এবং দু’টি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভেঙে দেওয়া— গত ৫ অগস্ট মোদী সরকারের এই দুই সিদ্ধান্তের পর সব থেকে বেশি প্রতিক্রিয়া এসেছিল ওয়াঘার ওপার থেকেই। এ নিয়ে ইসলামাবাদ যখন এক দিকে দিল্লিকে নিয়মিত ভাবে বিদ্ধ করার প্রক্রিয়া জারি রেখেছিল, সেই সঙ্গে তা নিয়ে শক্তিধর দেশগুলিকেও ভাবিয়ে তোলার চেষ্টা জারি রেখেছিল। কিন্তু, তাতে যে ইসলামাবাদ ‘সুফল’ পায়নি তা মঙ্গলবার ইমরানের কথাতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় যোগ দিতে এই মুহূর্তে নিউইয়র্কে ইমরান খান। সেখানেই একটি সাংবাদিক বৈঠকে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘কাশ্মীর নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের ভূমিকায় আমি হতাশ। মোদীর উপর এখনও কোনও চাপই নেই।’’
আন্তর্জাতিক মহলের ভূমিকা নিয়ে ‘হতাশা’ প্রকাশ করলেও তিনি যে কাশ্মীর নিয়ে ‘হাল ছাড়বেন না’ তা-ও জানিয়েছেন ইমরান। তিনি বলেন, ‘‘আমরা এ নিয়ে চাপ বজায় রাখব।’’ ওই সাংবাদিক বৈঠকে ইমরানের পাশেই ছিলেন পাক বিদেশ মন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি ও রাষ্ট্রপুঞ্জে নিযুক্ত পাক রাষ্ট্রদূত মালিহা লোদী। ইমরান খানের দাবি, ভারতের অর্থনীতির প্রভাব-প্রতিপত্তি এবং গুরুত্ব অনেক বেশি, তাই পাকিস্তানের বক্তব্যকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। কেন আন্তর্জাতিক মহল ভারতের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করছে না? সে কারণ ব্যাখ্যা করে ইমরান বলেন, ‘‘ভারতে ১২০ কোটি মানুষের বাজারের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন মানুষ।’’ এর আগেও এমন হতাশা ব্যক্ত করে ফেলেন পাক অভ্যস্তরীণ মন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার ইজাজ আহমেদ শাহ। তিনি বলেন, ‘‘লোকে আমাদের নয়, ভারতকেই বিশ্বাস করে।’’
আরও পড়ুন: মোদীকে ‘কাশ্মীর প্রতিশ্রুতি’ পালন করতে বললেন ট্রাম্প
গত রবিবার হিউস্টনে হাই ভোল্টেজ ‘হাউডি-মোদী’র পর দিনই অর্থাৎ সোমবার ইমরান খানের সঙ্গে পার্শ্ববৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাতে কাশ্মীর নিয়ে ফের এক বার মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তার পরেও আন্তর্জাতিক মহলের ভূমিকা নিয়ে কেন ইমরানের ‘হতাশা’ প্রকাশ ভিন্ন ইঙ্গিতই দিচ্ছে। পাক কূটনীতি যে ব্যর্থ হয়েছে তা এ দিন পরোক্ষে স্বীকার করে নিয়েছেন ইমরান। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার মোদীর সঙ্গে বৈঠকে ফের নতুন সমীকরণের কথা তুলে ধরেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘মুসলিম মৌলবাদের সমস্যার মোকাবিলা মোদী করতে পারবেন বলেই আমার বিশ্বাস।’’ আরও বলেন, “আমি আশাবাদী, মোদী ও ইমরান পরস্পরকে জানলে তাঁদের বোঝাপড়া ভাল হবে। আর তার ফলাফল শুভ হবে বলেই আমার বিশ্বাস।’’
আরও পড়ুন: উরির কায়দায় আত্মঘাতী হামলা চালাতে পারে জইশ, সতর্কতা জারি হল বায়ুসেনা ঘাঁটিগুলিতে
কিন্তু, পাকিস্তান নিয়ে নিজের অবস্থানেই অনড় নয়াদিল্লি। বুধবার নিউইয়র্ক থেকে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জোর দিয়েই জানান, পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা শুরু হতেই পারে। একই সঙ্গে ইসলামাবাদের উপর চাপ বাড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু, টেররিস্তানের সঙ্গে কথা বলতে আমাদের সমস্যা আছে। তাদের একাই কথা বলতে হবে, তারা যেন অন্য কারও দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে কথা বলে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy