প্রতীকী চিত্র।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার টিকার প্রথম ডোজ় নেওয়ার চার সপ্তাহ পরে যদি ফাইজ়ারের দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়া যায়, তা হলে শরীরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। তাঁদের সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় এমনই দাবি করেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। ল্যানসেট মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত এই সংক্রান্ত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, একই প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ়ের বদলে চার সপ্তাহের ব্যবধানে প্রথমে অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা ও পরে ফাইজারের টিকা নিলে সবচেয়ে বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এর আগের একটি গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দাবি করেছিলেন, ভিন্ন টিকার দু’টি ডোজ় মিলিয়ে-মিশিয়ে নিলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঘটনাও বেশি ঘটছে। উপরোক্ত গবেষণায় জানা গিয়েছে, সে ক্ষেত্রে মানবশরীরে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাও বেড়েছে অনেকটা।
অতিমারি পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিনের জোগান নিয়ে যখন সঙ্কটে ভুগছে অধিকাংশ দেশ, তখন আগামী দিনে অক্সফোর্ডের এই গবেষণা আশার আলো দেখাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
পাশাপাশি অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার দু’টি ডোজ়ের মধ্যবর্তী সময়ের ব্যবধান নিয়েও পরীক্ষা চালাচ্ছেন গবেষকেরা। প্রথমে এই প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ়ের ব্যবধান ২৮ দিন থাকলেও বর্তমানে ব্রিটেন দু’টি ডোজ়ের মধ্যবর্তী ব্যবধান বাড়িয়ে ৪৮ দিন ও ভারতে তা ৮৪ দিন করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ১০ মাসের ব্যবধানে দু’টি ডোজ় নিলেও শরীরে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। ফলে আগামী দিনে টিকা-সঙ্কটে থাকা দেশগুলিতে আরও সুরাহা মিলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্য দিকে, শিশু ও আঠারো অনূর্ধ্বদের ক্ষেত্রে আশার আলো দেখাচ্ছে চিনা ভ্যাকসিন করোনাভ্যাক। ল্যানসেটে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে চিনা বিজ্ঞানীদের দাবি, করোনাভ্যাকের দু’টি ডোজ় ৩ থেকে ১৭ বছর বয়সিদের শরীরে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি করে শক্তিশালী রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের উপরে এই পরীক্ষার তৃতীয় ট্রায়াল যদিও বাকি। এ মাসের গোড়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহারের জন্য করোনাভ্যাক প্রতিষেধকটিকে ছাড়পত্র দিয়েছে।
তবে আজ সবচেয়ে বেশি তাক লাগিয়েছে কিউবা। লাতিন আমেরিকার প্রথম দেশ হিসেবে তারা ঘরের মাটিতে তৈরি করোনা প্রতিষেধক ‘আবদালার’ সাফল্যের কথা জানিয়েছে। কিউবার দাবি, আবদালার কার্যকারিতা ৯২ শতাংশেরও বেশি। আগামী দিনে যা অনায়াসে প্রতিযোগিতার মুখে ফেলতে পারে ফাইজ়ার, মডার্নাকে।
বিশ্ব জুড়ে এখন চোখ রাঙাচ্ছে করোনাভাইরাসের ডেল্টা স্ট্রেন। ডেল্টার কারণে অস্ট্রেলিয়ায় সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় আজ থেকে কড়াকড়ি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে স্কট মরিসন সরকার। সিডনি, ডারউইন, পার্থের পরে এ বার তিন দিনের জন্য কড়া লকডাউন জারি হয়েছে ব্রিসবেনেও। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আগামী তিন দিন বাড়ি থেকে না-বেরোনোর নির্দেশিকা জারি হয়েছে। এক সময়ে প্রায় কোভিড-শূন্য হয়ে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ায় বাইরে থেকে আসা যাত্রীদের কারণেই সংক্রমণ ফের বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। এখনও পর্যন্ত পর্যাপ্ত হারে টিকাকরণ না-হওয়াও সমান ভাবে দায়ী বলে মনে করছেন অস্ট্রেলিয়ার মানুষ।
ডেল্টার ধাক্কায় ধরাশায়ী রাশিয়াও। প্রশাসনের দাবি, আচমকা দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। ধাক্কা খাচ্ছে টিকাকরণের কাজ। এ বছর গরমের মধ্যে ৬০% দেশবাসীকে টিকা দেওয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল সরকার, তা শেষ করা সম্ভব হবে কিনা, সে বিষয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy