Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Israel War

ইজ়রায়েল যুদ্ধে নিহত বেড়ে ৫০০, প্যারাগ্লাইডিং করে, সমুদ্রপথে, গাড়ি নিয়ে হামলা হামাসের

ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজ়ায় হামাস জঙ্গিদের সমস্ত ডেরা নিশ্চিহ্ন করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। তিনি বলেন, “সেনার পুরো শক্তিকে কাজে লাগানো হয়েছে হামাসদের খতম করতে।”

গাজ়া শহরে ইজ়রায়েলি সেনার রকেট হামলা। ছবি: রয়টার্স।

গাজ়া শহরে ইজ়রায়েলি সেনার রকেট হামলা। ছবি: রয়টার্স।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
তেল আভিভ শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৩ ১১:১৮
Share: Save:

আকাশ, জল এবং স্থল— এই তিন পথেই ইজ়রায়েলে হামলা চালাচ্ছে প্যালেস্তিনীয় জঙ্গিগোষ্ঠী হামাস। পাল্টা জবাব দিচ্ছে ইজ়রায়েলি সেনাও। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি অনুযায়ী, এই যুদ্ধে গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সাধারণ মানুষ, সেনা এবং জঙ্গি-সহ ৫০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজ়ায় হামাস জঙ্গিদের সমস্ত ডেরা নিশ্চিহ্ন করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। তিনি বলেন, “সেনার পুরো শক্তিকে কাজে লাগানো হয়েছে হামাসদের খতম করতে। ইজ়রায়েলে এই হামলার জবাব এমন ভাবে দেব, ওরা কল্পনা করতে পারবে না।”

ইজ়রায়েলি সেনা সূত্রে খবর, ২২টি জায়গায় হামাস জঙ্গিদের সঙ্গে ব্যাপক লড়াই চলছে। ইজ়রায়েলি সেনার মেজর জেনারেল ঘাসান আলিয়ান হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, হামাসদের উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজ়ায় একশোরও বেশি বাড়ি হামাসের রকেট হামলায় গুঁড়িয়ে গিয়েছে। ইজ়রায়েলি সেনার এক মুখপাত্র রিচার্ড হেক্ট বলেন, “জঙ্গিরা সাধারণ মানুষের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালিয়েছে। ঘরে ঢুকে হত্যা করেছে নিরীহ মানুষকে। এর জবাব আমরা দেবই।”

ইজ়রায়েলের এক বাসিন্দা দাবি করেছেন, সশস্ত্র জঙ্গিরা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হামলা চালিয়েছে। বহু মানুষকে বন্দি করেও নিয়ে গিয়েছে। সবচেয়ে ভয়ানক অবস্থা ইজ়রায়েলের দক্ষিণের শহর সেরোটের। সেখানে দু’পক্ষের মধ্যে জোর লড়াই চলছে। সেরটের বাসিন্দা শ্লোমি এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “রাস্তায় লাশের স্তূপ। গাড়িতে, বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে গুলি করে মারা হচ্ছে।”

ইজ়রায়েলের হামলাকে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নাম দিয়েছে হামাসরা। এই হামলারা পাল্টা অভিযান ‘অপারেশন আয়রন সোর্ডস’ শুরু করেছে ইজ়রায়েলি সেনা। সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, এই যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ২৩০ জন নিহত হয়েছেন। যদিও বেসরকারি হিসাব বলছে, নিহতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। রবিবার সকাল থেকেও মুহুর্মুহু রকেট, মর্টার, বোমা হামলা অনবরত চলছে। দক্ষিণ ইজ়রায়েলের সেরট, কিবুজ নির আম, ইয়াড মর্ডেশাই এবং নেটিভ হাসারায় দু’পক্ষের মধ্যে লড়াই চলছে। এগুলি সবই গাজ়া ভূখণ্ডের কাছাকাছি।

শনিবার স্থানীয় সময় তখন সকাল সাড়ে ৬টা হবে। তখনও পুরোপুরি জেগে ওঠেনি ইজ়রায়েলের শহরগুলি। আচমকা আকাশ ধোঁয়ায় ঢেকে ইজ়রায়েলের মাটিতে বন্যার জলের মতো আছড়ে পড়তে শুরু করল ক্ষেপণাস্ত্র। ২০ মিনিটে প্রায় ৫ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে হামাস জঙ্গিরা। আচমকা এই হামলায় প্রথম দিকে একটু দিশাহারা হয়ে পড়লেও তৎপরতার সঙ্গে জঙ্গিদের পাল্টা জবাব দেওয়া শুরু করে ইজ়রায়েলি সেনা। প্রশ্ন উঠছে ইজ়রায়েলের কাছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ‘এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম’ থাকা সত্ত্বেও এই হামলা রুখতে পারল না কেন? ইজ়রায়েলের কাছে শক্তিশালী ‘এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম’ আয়রন ডোম রয়েছে। রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হলে এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তা আটকায়। ভূমি থেকে আকাশ স্বল্প পাল্লার এই ‘ডিফেন্স সিস্টেম’ রকেট, মর্টার, গোলা এবং ড্রোনকে গুলি করে নামাতে অত্যন্ত দক্ষ। ৭০ কিলোমিটারের মধ্যে যে কোনও লক্ষ্যবস্তুকে নিমেষে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। এত উন্নত এবং শক্তিশালী হওয়ার পরেও কেন হামাসের রকেট হামলা আটকাতে ব্যর্থ হল আয়রন ডোম?

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, হামাস জানত, ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষার অন্যতম সেরা শক্তি এই আয়রন ডোম। তাই এই ‘এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম’-এর দুর্বলতার খোঁজ চালাচ্ছিল তারা। খুব অল্প সময়ের মধ্যে যদি প্রচুর রকেট দিয়ে হামলা চালানো হয়, তা হলে সব লক্ষ্যবস্তুকে একসঙ্গে আটকানোর ক্ষমতা থাকবে না আয়রন ডোমের। আর সেই দুর্বলতা খুঁজেই একসঙ্গে কয়েক হাজার রকেট হামলা চালানো হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

israel War hamas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy