খালিদ মাসুদ। এই ছবি প্রকাশ করেছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড।
এই নিপাট ভদ্রলোক কখনও জঙ্গি হতে পারে?
দেখলেই হাসি। মিষ্টি ব্যবহার, কথাবার্তায় অসম্ভব ভদ্র। কারও সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়নি কোনও দিন। স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে বাড়িতে নিজেকে একটু গুটিয়ে রাখলেও, রোজ সকালে তাঁকে দেখা যেত বাগানের পরিচর্যা করতে। বেড়ে ওঠা গাছগুলির মাথা সমান ভাবে কেটে-ছেঁটে দিতে। রোজ দেখা যেত নিজের গাড়ি ধুতে। বাগানে ছেলেমেয়েদের নিয়ে ফুটবলও খেলতে দেখা যেত। আর দেখা যেত রোজ সকালে বাগানে ব্যায়াম করতে। অনেক সময় প্রতিবেশীর ছেলেটিকেও ডেকে নিতে দেখা গিয়েছে বাগানের ফুটবলে। পাশের বাড়ির ছেলেটিকে ফুটবল নিয়ে টিপ্সও দিতে দেখা গিয়েছে।
প্রতিবেশীদের শুধু এক দিনই সন্দেহ হয়েছিল কিছুটা। গত ডিসেম্বরে যে দিন ওই বাড়ির সামনে খুব ভোরে পুলিশের গাড়ি এসে দাঁড়িয়েছিল।
আর তার পর প্রতিবেশীরা টেলিভিশনে দেখলেন, গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যাওয়া সেই লোকটাকে স্ট্রেচারে শুইয়ে নিয়ে যাচ্ছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের পুলিশ।
খালিদ মাসুদ ইসলামিক স্টেটের মতো কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সদস্য হতে পারে, গত তিন বছর ধরে বাড়ির পাশের প্রতিবেশীদের পক্ষে তা বিশ্বাস করাটাই কঠিন হয়ে পড়ত, যদি না পার্লামেন্ট ভবনে হামলার পর গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যাওয়া মাসুদের দেহটি নিয়ে পুলিশকে যেতে দেখা যেত।
মাসুদের পাশের বাড়ির ভদ্রমহিলা কাওডি ক্যাম্পবেল বলছেন, ‘‘পাগলেও বিশ্বাস করবে না, ওই লোকটা জঙ্গি হতে পারে! টিভিতে ওর মৃতদেহ না দেখলে আর ও চারটে মানুষ খুন করেছে, এ কথা না জানলে কোনও দিন বিশ্বাসই করতে পারতাম না ও জঙ্গি হতে পারে! ওর স্ত্রী নিজেকে একটু গুটিয়ে রাখলেও, ও (মাসুদ) তো বাড়ি থেকে বেরোতে, ঢুকতে দেখা হলে একগাল হেসে কথা বলত। কোনও দিনও মুখ ঘুরিয়ে চলে যায়নি।’’
২৭ বছরের যুবক সিয়ারান মোল্লয় থাকেন মাসুদের বাড়ির কাছেই। মাসুদকে চিনতেন। বললেন, ‘‘এক বার আমাকে ডেকে কী ভাবে ফুটবলটা খেলতে হয়, তা নিয়ে নানা কথা বলেছিল। কী ভাবে পাস বাড়াতে হয়, কী ভাবে পায়ের আলতো টাচে বল পাঠাতে হয় বিপক্ষের নেটে, ওর বাড়ির বাগানে নিজে ফুটবল খেলে আমাকে এক দিন বুঝিয়ে দিয়েছিল। খুব ভদ্র মনে হোত লোকটাকে। খুব মিশুকেও ছিল। বাড়িতে থাকলে বেশির ভাগ সময়েই ট্র্যাকস্যুট পরে থাকতো। তবে ওর স্ত্রী মুখ না ঢেকে বোরখা পরে থাকতেন। ওর কতগুলি বাচ্চাকাচ্চা, আমার ধারণা নেই। তবে একটা বাচ্চাকে দেখে মনে হয়েছে, বড়জোর বছরতিনেকের হবে।
তবে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড বলছে, পুলিশের খাতায় অতীতে নানা ঘটনায় বেশ কয়েক বার নাম উঠেছে মাসুদের। আর মাসুদ জেল খেটেছিল শেষ বার ১৪ বছর আগে। তখন তার বয়স ছিল ৩৯ বছর। সঙ্গে ছুরি রাখার অভিযোগে কারদণ্ড হয়েছিল মাসুদের।
আরও পড়ুন- শিশুপুত্র সহ ভারতীয় মহিলা আইটি কর্মী খুন আমেরিকায়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy