Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

ভারত-পাকিস্তান নিজেদের মধ্যে বিষয়টির ‘খুব ভাল সমাধান’ করতে পারে, কাশ্মীর প্রসঙ্গে বললেন ট্রাম্প

কাশ্মীর নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এহেন অবস্থান বদলকে কূটনৈতিক জয় হিসেবেই দাবি করছে বিদেশ মন্ত্রক। মোদীও স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন কাশ্মীর ভারত-পাকিস্তানের নিজেদের সমস্যা। এই নিয়ে অন্য কোনও দেশকে ‘কষ্ট’ দিতে ভারত চায় না!

খোশমেজাজে: জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: রয়টার্স।

খোশমেজাজে: জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৯ ০৪:০৮
Share: Save:

গত কয়েক সপ্তাহে তিন-তিন বার কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালনের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। কিন্তু আজ ফ্রান্সের বিয়ারিৎজ় শহরে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পাশে নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়ে দিলেন, ভারত-পাকিস্তান নিজেদের মধ্যে বিষয়টির ‘খুব ভাল সমাধান’ করতে পারে বলে তিনি নিশ্চিত।

কাশ্মীর নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এহেন অবস্থান বদলকে কূটনৈতিক জয় হিসেবেই দাবি করছে বিদেশ মন্ত্রক। মোদীও স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন কাশ্মীর ভারত-পাকিস্তানের নিজেদের সমস্যা। এই নিয়ে অন্য কোনও দেশকে ‘কষ্ট’ দিতে ভারত চায় না!

ঠিক এক মাস আগে ওয়াশিংটনে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে যে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছিল, তা নতুন মাত্রা পায় মোদী সরকার সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করে নেওয়ায়। আর আজ মোদী-ট্রাম্প বৈঠকের পরে সাময়িক ভাবে বিতর্কে ধামাচাপা পড়ল বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। সূত্রের বক্তব্য, আফগানিস্তান থেকে যত দ্রুত সম্ভব সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে পাকিস্তানের উপরে নির্ভর করতে হচ্ছে হোয়াইট হাউসকে। পাকিস্তানের ভূ-কৌশলগত অবস্থান এমনই যে কাবুলে শান্তি বজায় রাখতে হলে ইসলামাবাদকে সঙ্গে রাখতেই হবে আমেরিকাকে। তবে তা ভারতকে ব্রাত্য করে নয়। এক কূটনৈতিক কর্তার বক্তব্য, ‘‘এ ক্ষেত্রে দু’টি লেনদেনের কথা মাথায় রাখছেন ট্রাম্প। এক, ভারতকে সঙ্গে রাখলে পাকিস্তানকে চাপে রেখে নিজেদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করা, অর্থাৎ আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা সম্ভব। দুই, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত সম্পর্ক এই মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্ত হতে দিতে চাইছে না আমেরিকা। কারণ, চিনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পর, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতকে নিয়ে চলাটা তাদের জাতীয় কৌশলের মধ্যে পড়ে।’’

গত কাল রাতেই বিয়ারিৎজ় শহরে পৌঁছে গিয়েছিলেন মোদী এবং ট্রাম্প। নৈশভোজে দুই নেতার মধ্যে ঘরোয়া ভাবে কথা হয়, যার মধ্যে ছিল কাশ্মীরও। আজ যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বিষয়টির উত্থাপন করেছেন ট্রাম্প। তাঁর কথায়, ‘‘গত রাতে আমরা কাশ্মীর নিয়ে কথা বলেছি। প্রধানমন্ত্রী সত্যিই মনে করেন যে, কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাঁরা পাকিস্তানের সঙ্গে কথাও বলবেন। আমি নিশ্চিত যে তাঁরা দুই পক্ষ মিলে খুব ভাল কিছু করবেন।’’ নৈশভোজে ভারত-আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্য সম্ভাবনা এবং সামরিক সমন্বয় নিয়েও কথা হয়েছে বলে জানান ট্রাম্প।

আজ কাশ্মীর নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে মোদী তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে জানিয়েছেন, ‘‘১৯৪৭ সালের আগে পর্যন্ত ভারত এবং পাকিস্তান একসঙ্গেই ছিল। আমি যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী যে আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে পারব। এই নিয়ে তৃতীয় কোনও দেশকে কষ্ট দিতে চাই না আমরা।’’ তাঁর কথায়, ‘‘নির্বাচনের পর আমি যখন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ফোন করি, তখন বলেছিলাম যে, পাকিস্তানকে দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। নিরক্ষরতা এবং অসুখের বিরুদ্ধে লড়তে হবে। বলেছিলাম, মানুষের কল্যাণের জন্য আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।’’

তবে স্বাভাবিক ভাবেই মোদীর এই ‘কল্যাণপ্রস্তাব’ ভাল ভাবে নেয়নি পাকিস্তান। আজ মোদী-ট্রাম্প বৈঠকের পর তাদের রক্তচাপও বেড়েছে। ইমরান বলেছেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি, আমাদের গোটা দেশের উচিত কাশ্মীরের পিছনে দাঁড়ানো। বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছি। রাষ্ট্রপুঞ্জেও বিষয়টি তুলব।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy