হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। ছবি: পিটিআই।
শিক্ষকের গলা কেটে খুনের দু’সপ্তাহের মধ্যে ফের নোত্র দাম গির্জায় একই কায়দায় এক মহিলার গলা কেটে খুন! ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত আরও দু’জন। ইসলামি জঙ্গিদের এমন পরপর হামলায় যখন কাঁপছে ফ্রান্স, ঘটনাচক্রে সেই সময়েই এক সপ্তাহের সফরে আজ ইউরোপে পা রাখলেন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। আর তাঁর সফর সূচনাতেই হিংসার বাতাবরণ তৈরি হওয়া নিয়ে সরব হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফ্রান্সের ওই নাশকতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী টুইট করে বলেছেন, ‘ফ্রান্সে এই হামলার তীব্র নিন্দা করছি। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে ভারত ফ্রান্সের পাশে রয়েছে।’
গত কালই বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ-র পাশে দাঁড়িয়েছিল ভারত। ইসলামি মৌলবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ফলে মুসলিম বিশ্বের রোষের মুখে পড়েন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। নয়াদিল্লির মতে, শালীনতার সীমা ছাড়িয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত স্তরে অত্যন্ত কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইপ এর্ডোয়ান-সহ অনেকেই। মাকরঁ-র বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী ইমরান খানও। পাকিস্তান থেকে মৌলবাদীদের ইউরোপে গিয়ে ঘাঁটি গাড়া নিয়ে ভারত এর আগেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনায় ধারাবাহিক ভাবে সেই দেশগুলিকে সতর্ক করেছে। নয়াদিল্লির বক্তব্য, এই শক্তি যে কোনও গণতান্ত্রিক দেশের পক্ষেই ঝুঁকিপূর্ণ। সূত্রের মতে, বিদেশসচিব তাঁর চলতি সফরে এ ব্যাপারে বিশদে আলোচনা করবেন। যথাক্রমে ফ্রান্স, জার্মানি এবং ব্রিটেন সফর করে তিনি ফিরবেন আগামী মাসের ৪ তারিখ। কোভিড সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরে এই প্রথম বিদেশসচিবের প্রতিবেশী বলয়ের বাইরে পূর্ণাঙ্গ সফরটি সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবাদের পরিপ্রেক্ষিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেল বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। আজ ফ্রান্সে পা দেওয়ার পরে এক আলোচনা সভায় বিদেশসচিব বলেন, ‘‘ভারত ও ফ্রান্স মৌলবাদ ও সন্ত্রাসের একই ধরনের বিপদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ফ্রান্সে সাম্প্রতিক হামলার মধ্যে একটির উৎস পাকিস্তান।’’ শ্রিংলার কথায়, ‘‘অতিমারির মধ্যেও ভারত সীমান্তে চিনা সঙ্কট সামলাতে পরিণতমনস্কতার পরিচয় দিয়েছে।’’
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব আজ জানিয়েছেন যে, শ্রিংলার ইউরোপ সফরে অতিমারি আক্রান্ত বিশ্বে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পুনরুদ্ধার, টিকা প্রয়োগের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সমন্বয় বাড়ানো, রাষ্ট্রপুঞ্জে বহুপাক্ষিক সহযোগিতা তৈরি করা এবং ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মুক্ত এবং উদার নীতি প্রণয়ন নিয়ে আলোচনা করা ও পরামর্শ নেওয়ার বিষয়ে কথা হবে।
আরও পড়ুন: ‘পুলওয়ামা হামলা ইমরানের সাফল্য’, পার্লামেন্টে দাবি পাক মন্ত্রীর
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, ফ্রান্স ভারতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত মিত্র। সে দেশের সঙ্গে অসামরিক পরমাণু চুক্তি হয়েছে। বহু রাজনৈতিক বিতর্ককে পিছনে ফেলে দফায় দফায় রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে মোদী সরকার। ফলে তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দিল্লির দায়বদ্ধতাও যথেষ্ট।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী যুদ্ধে যাচ্ছেন আর্মেনিয়ায়, সংঘাত আজারবাইজানের সঙ্গে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy