Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
India-Canada Relation

কানাডার সরকারি কর্তা জঙ্গি তালিকায়, প্রত্যর্পণ চায় ভারত

ভারতীয় গোয়েন্দাদের রিপোর্ট অনুযায়ী সিধুর সঙ্গে পাকিস্তানের বাসিন্দা খলিস্তানি নেতা লখবীর সিংহ রোডে এবং কয়েক জন আইএসআই কর্তার যোগাযোগ আছে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:০২
Share: Save:

শিখ সন্ত্রাসবাদীদের তালিকায় এ বার কানাডা সরকারের এক কর্মকর্তার নাম যুক্ত করে তাঁকে প্রত্যর্পণের দাবি জানাল দিল্লি। কানাডিয়ান বর্ডার সার্ভিস এজেন্সিজ়-এ কর্মরত এই যুবকের নাম সন্দীপ সিংহ সিধু। ভারতের দাবি, সিধু নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল শিখ ইয়ুথ ফেডারেশনের সদস্য। পঞ্জাবে সন্ত্রাসবাদের প্রসারে এই সংগঠন কাজ করে চলেছে।

ভারতীয় গোয়েন্দাদের রিপোর্ট অনুযায়ী সিধুর সঙ্গে পাকিস্তানের বাসিন্দা খলিস্তানি নেতা লখবীর সিংহ রোডে এবং কয়েক জন আইএসআই কর্তার যোগাযোগ আছে। এরাই ২০২০ সালে খলিস্তানি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে শৌর্যচক্র পাওয়া সেনা অফিসার বলবিন্দর সিংহ সাঁধুকে হত্যা করেছিল। সন্দীপকে সুপারিন্টেন্ডেন্ট পদে প্রোমোশন দিয়েছে কানাডার জাস্টিন ট্রুডো সরকার। সম্প্রতি রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ সে দেশে নিহত খলিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিংহ নিজ্জরের খুনে জড়িত বলে ভারতের হাই কমিশনার সঞ্জয়কুমার বর্মা-সহ কয়েক জন কূটনীতিকের নাম ঘোষণা করে। তারই জবাবে ভারত এ বার সরকারি কর্তা সন্দীপ সিংহকে প্রত্যর্পণের দাবি জানাল।

ট্রুডো সরকারের খলিস্তানি প্রীতি নিয়ে সে দেশের বিরোধীরাও সরব হয়েছে। ভারতের সঙ্গে এত দিনের বন্ধুত্বের সম্পর্কে চিড় ধরার জন্য বিরোধী নেতারা প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোকে দুষছেন। তাঁদের দাবি খলিস্তানি জঙ্গি নিজ্জরের হত্যাকাণ্ড নিয়ে অনাবশ্যক উত্তেজনা তৈরি করে ট্রুডো সরকার অন্য বিষয়ে তাদের অকর্মণ্যতাকে আড়াল করতে চাইছে। কানাডার পিপলস পার্টির নেতা ম্যাক্সিম বার্নিয়ারের কথায় নিজ্জর এক জন বিদেশি সন্ত্রাসবাদী। এর পরেও তাঁকে ২০০৭-এ কানাডার নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। বার্নিয়ারের দাবি, ট্রুডো সরকারের উচিত প্রশাসনিক ভ্রান্তি দূর করে মরণোত্তর ভাবে নিজ্জরের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া। তা না করে তারা অযথা হইচই করে চলেছে। পুলিশ যে ভারতীয় কূটনীতিকদের নাম করে নিজ্জর খুনে দায়ী বলে ঘোষণা করেছে, সেটা অত্যন্ত বড় বিষয়। কিন্তু পুলিশের হাতে তথ্যপ্রমাণ কোথায়? কীসের ভিত্তিতে তারা এত বড় অভিযোগ করল? কেবল আর এক জন খলিস্তানি জঙ্গির অভিযোগের ভিত্তিতে? বারনিয়ার বলেন, কানাডা সরকারের উচিত এক জন জঙ্গির মৃত্যু নিয়ে এত জটিলতা তৈরি না করে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করে মতভেদ মিটিয়ে ফেলা। কারণ ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি কানাডার পক্ষেও গুরুত্বপূর্ণ।

কানাডা-ভারত সাম্প্রতিক টানাপড়েন নিয়ে বিরোধীদের মধ্যে আবার ভিন্ন সুর দেখা গিয়েছে। সিপিএম বৃহস্পতিবার বিবৃতি দিয়ে খলিস্তানি জঙ্গিদের ভারত-বিরোধিতার কড়া নিন্দা করে কেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতীয় স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে দেশের সব রাজনৈতিক দল কেন্দ্রের পাশে আছে। কিন্তু কেন্দ্রেরও উচিত বিরোধীদের পরামর্শ নিয়ে কানাডা-সমস্যায় এগোনো। তৃণমূলের রাজ্যসভার সদস্য সাকেত গোখলে ট্রুডো সরকারের সমালোচনা করে সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘সন্ত্রাসবাদীকে আন্দোলনকারী আখ্যা দিয়ে মিথ্যাচার করছে কানাডা।’ আবার তৃণমূলের আর এক রাজ্যসভার সদস্য সাগরিকা ঘোষ এ বিষয়ে কামান দেগে চলেছেন সরকারকে নিশানা করে। তাঁর দাবি, কানাডা যে গুরুতর অভিযোগ তুলেছে, সে বিষয়ে ভারতকেই নিষ্কলুষতার প্রমাণ দিতে হবে।

ভিন্নমত কংগ্রেসেও। দলের নেতা জয়রাম রমেশ কানাডার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির জন্য যখন মোদী সরকারের বিদেশনীতিকে দুষছেন, কানাডার অভিযোগে ভারতের ভাবমূর্তি নষ্টের অভিযোগ করছেন, আর এক নেতা মণীশ তিওয়ারি খলিস্তানিদের সাহায্য সহযোগিতার জন্য কানাডা সরকারের সমালোচনা করছেন। ১৯৮৪-তে শিখ জঙ্গিরা খুন করেছিল মণীশের বাবা বিশ্বনাথ তিওয়ারিকে। মণীশের কথায়, খলিস্তানি খুনিদের স্রেফ আন্দোলনকারী আখ্যা দিচ্ছে কানাডা, যা ক্ষমার অযোগ্য।

অন্য বিষয়গুলি:

Justin Trudeau canada
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy