গোহর আলি খান।
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা দুর্নীতির দায়ে জেলবন্দি ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন গোহর আলি খান। নির্বাচনী প্রতীক বজায় রাখতে পিটিআইয়ের সাংগঠনিক নির্বাচন সেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন পরিচালনকারী শীর্ষ সংস্থা ইলেকশন কমিশন অব পাকিস্তান (ইসিপি)। তার পরেই গোহরকে শীর্ষ পদে
বসানো হয়।
গোহরের পাশাপাশি শনিবার পিটিআইয়ের সাংগঠনিক বৈঠকে সেক্রেটারি জেনারেল হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন ওমর আয়ুব খান। বালুচিস্তানের দলীয় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মুনির আহমেদ বালোচ। সিন্ধু প্রদেশে হালিম আদিল শেখ, খাইবার পাখতুনখোয়ায় আলি আমিন গন্দপুর এবং পঞ্জাবে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইয়াসমিন রশিদকে।
১৯৯৬ সালে পিটিআই তৈরির পরে এই প্রথম বার ইমরানের পরিবর্তে অন্য কাউকে নির্বাচিত করা হল দলীয় চেয়ারম্যান হিসাবে।
পেশায় আইনজীবী গোহর ইমরান ও পিটিআইয়ের বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন মামলায় যুক্ত রয়েছেন। পিটিআইয়ের গড় পেশোয়ারে শনিবার দলের অভ্যন্তরে নির্বাচনের আয়োজন করা হয়। সেখানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন গোহর।
৪৫ বছরের গোহর জেলে প্রায়ই ইমরানের সঙ্গে দেখা করেন। তোষাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার জেরে ইমরানের পক্ষে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সম্ভব ছিল না। তাই নতুন মুখ অনিবার্য ছিল।
পাক নির্বাচন কমিশন গত ২৩ নভেম্বর ২০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিল চেয়ারম্যান নির্বাচনের জন্য। সেই নির্দেশ অমান্য করলে পিটিআইয়ের নির্বাচনী প্রতীক ‘ব্যাট’ কেড়ে নেওয়া হত। দেশে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন। তার আগে বিড়ম্বনা এড়াতেই ইমরানের স্থলাভিষিক্ত করা হয় খাইবার পাখতুনখোয়ার বাসিন্দা গোহরকে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, গোহরের মতো অনভিজ্ঞ এক জনকে দলীয় শীর্ষ পদে নিয়ে আসা বিস্ময়কর! বিশেষত এমন একটা সময়ে গোহরকে দায়িত্ব দেওয়া হল, যখন গোটা দল সঙ্কটে। যদিও পিটিআই সূত্রে খবর, আইনি জটিলতা এড়াতেই আপাতত গোহরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ইমরানের অনুমোদন নিয়েই গৃহীত হবে।
এক সময়ে পাকিস্তান পিপলস পার্টির সদস্য ছিলেন গোহর। ২০০৮ সালে ওই দলের তরফে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করেছিলেন। তবে হেরে যান। এর পরেই রাজনীতি ছেড়ে নিজের পেশায় মনোনিবেশ করেন তিনি। পরে ইমরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সূত্রে রাজনীতিতে আসেন।
শনিবার দায়িত্ব গ্রহণের পরে সাংবাদিকদের গোহর জানিয়েছেন, ইমরানের প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করবেন তিনি। আগামী নির্বাচনে জয় আসবেই বলে আত্মবিশ্বাসী নবনির্বাচিত পিটিআই চেয়ারম্যান। তাঁর অভিযোগ, পিটিআই-কে বিড়ম্বনায় ফেলতেই পাক নির্বাচন কমিশন দলীয় চেয়ারম্যান নির্বাচনের জন্য নির্দেশ জারি করে।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেও গোহরের বিরুদ্ধে দলের অভ্যন্তরে চোরাস্রোত রয়েছে। কারণ দলীয় নেতৃত্বের একাংশের নজর ছিল শীর্ষ পদের জন্য। যদিও গোহরের নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত কাজ করেছে ইমরানের সমর্থন।
আকবর এস বাবর নামে পিটিআইয়ের এক প্রতিষ্ঠাতা সদস্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন। তাঁর অভিযোগ, এই পরিস্থিতিই বলে দিচ্ছে দলে কতটা স্বচ্ছতা রয়েছে। দলের অন্দরের পাশাপাশি বিরোধীদেরও কটাক্ষের মুখে পড়েছেন গোহর। পিএমএলএন মুখপাত্র মারিয়ম ঔরঙ্গজ়েবের কথায়, “নির্বাচন নয় মনোনীত করা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy