প্রস্তুত কানাডাবাসী। আগামিকাল ভোট। এই নির্বাচনেই স্থির হয়ে যাবে, প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির নেতৃত্বাধীন লিবারাল পার্টিই ক্ষমতায় থাকবে, নাকি ক্ষমতা হস্তান্তর হবে কনজ়ারভেটিভ পার্টির পিয়ের পয়লিভ্রের হাতে।
এ বারের নির্বাচনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন এমন এক জন, যিনি কানাডিয়ান-ই নন। তিনি হলেন পড়শি দেশ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে যদি এই নির্বাচন হত, তা হলে লিবারালদের হার একপ্রকার সুনিশ্চিত ছিল। কিন্তু ট্রাম্প আসার পরে আমূল বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। কানাডার উপর বিপুল আমদানি শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প। কানাডার অর্থনীতি ও সার্বভৌমত্ব, দুই-ই বিপাকে। এমনকি কানাডাকে আমেরিকার ৫১তম প্রদেশে ঘোষণা করার মনোবাসনাও প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। এ হেন অস্তিত্ব সঙ্কটে ট্রাম্প-সমর্থক ও প্রশংসক পয়লিভ্র সাধারণ মানুষের বাঁকা নজরে পড়েছেন। অনেকে এমনও বলছেন, কনজ়ারভেটিভ পার্টির পিয়ের পয়লিভ্র ট্রাম্পেরই আর এক রূপ।
৪৫ বছর বয়সি পয়লিভ্র পেশাদার ও পোড়খাওয়া রাজনীতিক। ট্রাম্পের মতো তিনিও নির্বাচনী প্রচারে ‘দেশের স্বার্থ সবার আগে’ বলে গলা ফাটিয়েছেন। যা তাঁকে বেশ জনপ্রিয়তা দিয়েছে। ঠিক এই জায়গাতেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর আসন টলমল হয়েছিল। সেই সঙ্গে জিনিসপত্রের বাড়তে থাকা দামও একটা কারণ ছিল। কিন্তু ট্রুডোকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় আসেন লিবারাল পার্টির কার্নি। তিনি কিন্তু এর আগে কখনও প্রশাসনিক পদে ছিলেন না। ৬০ বছরের কার্নি এর আগে কখনও ভোটে দাঁড়াননি। তিনি ছিলেন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার। কানাডা ও ব্রিটেন, দুই দেশেই সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের গভর্নর ছিলেন। সে সব ছেড়ে তিনি রাজনীতিতে ঝাঁপ দিয়েছেন হালে। ট্রুডোকে সরিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন গত মাসেই। লিবারাল পার্টির শূন্যতাও অনেকটা ভরেছেন। ট্রুডোর নেতৃত্বে দলের প্রতি সাধারণ মানুষের যে বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়েছিল, কার্নির দৌলতে তা অনেকটাই গিয়েছে। ফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। তবে সমীক্ষা রিপোর্টগুলি বলছে, ভোটাররা এগিয়ে রাখছেন প্রাক্তন ব্যাঙ্কারকেই। তাঁদের মতে, ট্রাম্পকে জব্দ করতে পারবেন এই কার্নি-ই।
রাজনীতির অঙ্কে ভারতেরও পছন্দ কার্নিকে। কারণ এই এক মাসেই দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি। ট্রুডোর জমানায় খলিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরের হত্যার ঘটনার পর থেকে ভারতের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল। কার্নি সেই সম্পর্ক ফের ভাল করতে চান। কিন্তু পয়লিভ্রের ভিন্ন পথে হাঁটার আশঙ্কাই বেশি। সংবাদ সংস্থা
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)