প্রতিদিনের মতোই গাজ়ায় আজও ইজ়রায়েলি হামলা হয়েছে। প্রতিদিনের মতো আজও সেই হামলায় মারা গিয়েছেন প্যালেস্টাইনিরা।
গাজ়া প্রশাসন সূত্রের খবর, শনিবার ইজ়রায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে। প্যালেস্টাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রের খবর, গত ১৮ মার্চ ইজ়রায়েল সংঘর্ষ বিরতি ভেঙে গাজ়ার মাটিতে ফের হামলা চালানোর পর থেকে ১৫০০ জনেরও বেশি প্যালেস্টাইনি নিহত হয়েছেন। শনিবারের হামলায় গাজ়ার তুফা এলাকায় দু’জন প্রাণ হারান। দু’টি শিশু জখম হয়েছে। বেট লাহিয়ায় নিহত হন আরও দু’জন। মধ্য গাজ়ার দের অল-বালাহ হাসপাতালে এ দিন এক জখম সদ্যোজাত শিশুকন্যাকে আনা হয়। শাম নামে ওই শিশু ও তার পরিবার ক্ষেপণাস্ত্র হানায় আহত হয়েছিল। গুরুতর জখম শামের হাত অস্ত্রোপচারে বাদ পড়ে। কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি। কারণ শামকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিকাঠামো গাজ়ার কোনও হাসপাতালে নেই। অস্ত্রোপচারের এক ঘণ্টার মধ্যে মারা যায় শাম। এ দিকে, খান ইউনিসের তথাকথিত নিরাপদ এলাকা বলে পরিচিত অল-মাওয়াসি, শুজাইয়ার ত্রাণ শিবিরে ফের হামলা চলেছে। ভিটেহারা মানুষগুলোর অস্থায়ী তাঁবুগুলি লক্ষ্য করে ছুটে এসেছে ক্ষেপণাস্ত্র, শ্র্যাপনেল। শনিবার নতুন করে ওই এলাকা খালি করার নির্দেশ দিয়েছে ইজ়রায়েল বাহিনী। পরিবার, সন্তান নিয়ে ওই সমস্ত আশ্রয় শিবিরে ঠাঁই নেওয়া প্যালেস্টাইনিরা জানেন না, এ বার কোথায় যাবেন তাঁরা। কোথায় গিয়ে পালিয়ে বাঁচবেন।
ভূমধ্যসাগরের তীর বরাবর এক চিলতে গাজ়া ভূখণ্ডের কোনও জায়গা আর নিরাপদ নয়। এক দিকে সমুদ্র। অন্য দিকের সীমান্ত বরাবর জমি দখল করে একটু একটু করে এগিয়ে আসছে ইজ়রায়েল। দক্ষিণে বাকি যেটুকু অংশ মিশরের সীমান্ত বরাবর রয়েছে, সেই রাফা শহরটিকে পরিকল্পনা করে ধ্বংস করেছে ইজ়রায়েল। এমনই মনে করছেন, লন্ডনের কিংস কলেজের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক অধ্যাপক রবার্ট জিস্ট পিনফোল্ড। সম্প্রতি ইজ়রায়েল বাহিনী জানিয়েছে, রাফায় মোরাগ করিডর তৈরির কাজ শেষ। এই করিডরটি গাজ়া ভূখণ্ড থেকে রাফাকে আলাদা করে দিচ্ছে। সংবাদমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক পিনফোল্ড বলেন, হামাসকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং নিজেদের ঘুঁটি সাজাতে মোরাগ করিডর বানিয়েছে ইজ়রায়েল। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েই তৈরি করা হয়েছে এই করিডর। এর ফলে গাজ়া ভূখণ্ড পুরোপুরি ইজ়রায়েলের নজরবন্দি থাকবে। সংবাদ সংস্থা
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)