সেই বইয়ের প্রচ্ছদ।
গাঁধী অহিংস কেন? কারণ তিনি রেগে গেলে হাল্কের মতো মস্ত এক অতিমানবে বদলে যান মুহূর্তে। তাই পারতপক্ষে রাগ করেন না তিনি!
হ্যাঁ কল্পনাই। যা কমিক্সের চেহারা দিয়েছেন অ্যান্টনিয়ো রোজ়ো ও জেসন মিচস্কি নামে দুই মার্কিন তরুণ। মিচস্কির লেখায় ও রোজ়োর আঁকায় ‘গাঁধী: দ্য বিস্ট উইদিন’ কমিক্সে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী এক সুপারহিরো। তবে সব সময় নয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকার সময়ে নাকি রহস্যময় এক অতিমানবিক শক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন গাঁধী। আর তার পর থেকেই প্রচণ্ড রাগ হলে বিরাটাকার এক দৈত্যে বদলে যান তিনি।
‘‘বন্ধুদের যখন এই ভাবনাটা জানাই, ওরা পাগল ভেবে হেসেছিল। কিন্তু যখন বইটা দেখল, বুঝল আমি আর অ্যান্টনিয়ো দারুণ একটা কিছু করেছি’’, নিউ ইয়র্ক থেকে বলেন মিচস্কি। তিনি জানিয়েছেন মার্বেল কমিক্সের ‘হোয়াট ইফ’ সিরিজ তাঁদের এই পাগলামির অনুপ্রেরণা। ‘সাধারণ ভাবে যে যা করেন, তা না করে যদি এমনটা করতেন, তবে কী হত?’— এই ছিল তাঁদের ভাবনা। নিজের মাথায় যে ভাবনা ছিল, এক এক পাতায় ছকে ফেলে রোজ়োকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন মিচস্কি। আর তার কয়েক মাসের মধ্যে আঁকায়-লেখায় তৈরি হয় ‘গাঁধী: দ্য বিস্ট উইদিন’। যার শুরুটাই হচ্ছে এ রকম ভাবে— একটা বিমানে বোমার সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে গাঁধীকে। বিমানটি উড়ছে জার্মানির উপর দিয়ে। রয়েছেন উইনস্টন চার্চিল, ফ্র্যাঙ্কলিন রুজ়ভেল্ট ও জোসেফ স্তালিন। হিটলারের গোপন ঘাঁটির উপরে গাঁধীকে ফেলে দেওয়ার ছক এঁটেছেন তাঁরা। এর ফলে কী হতে পারে তা ওই তিন জনকে পইপই করে বোঝানোর চেষ্টা করছেন বাপু। বলছেন, ‘‘এর ফল কী মারাত্মক হতে পারে হয়তো আপনারা জানেন না।’’ শুনেই চোখ পাকিয়ে তাকালেন স্তালিন। রুজ়ভেল্ট নির্দেশ দিলেন, ‘‘ফেলা হোক গাঁধী বোমা।’’ মাটিতে পড়ে বোমা ফাটা মাত্রই সেখান থেকে বেরিয়ে এল দৈত্যাকার গাঁধী। দানবের মতো যার পেল্লাই চেহারা, ফুলে ওঠা হাতের পেশি, বড় বড় দাঁত, চশমা পরা ভাঁটার মতো চোখ। মনিটরে যা দেখে হিটলার চিৎকার করে উঠলেন, ‘‘না..না..না’’।
১০১ পাতার সাদা-কালো এই কমিক বইয়ের সব ক’টি চরিত্রেই ছাপ রয়েছে ব্যাটম্যান বা হাল্কের মতো সুপারহিরোদের। রোজ়ো-মিচস্কি দেখিয়েছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষের মুখে রাক্ষস, নাৎসি ডায়নোসর, ভিন্গ্রহ থেকে আসা উড়ন্ত চাকি এমনকি খুনি রোবটদের সঙ্গেও লড়েছেন গাঁধী। ভারতীয় পাঠকরা কী ভাবে নেবেন এই বই? রোজ়োর কথায়, ‘‘আগে ভাবিনি। এখন মনে হচ্ছে ভারতের পাঠকরা এই বইয়ের কদরই করবেন। এমনকি ছবিও হতে পারে সুপারহিরো গাঁধীকে নিয়ে।’’
বইটি শেষ হওয়ার পরে ছাপার খরচ বাবদ ২ হাজার ডলার জোগাড় করার জন্য জোরদার প্রচার চালান তাঁরা। এবং তা জোগাড় করেও ফেলেন। মিচস্কি বলেছেন, ‘‘আমরা চাই কোনও প্রকাশক বইটা ছাপাক অথবা এটা নিয়ে কোনও অ্যানিমেশন ছবি হোক। কারণ আমেরিকার মতো জায়গায় নিজেরা বারবার বই ছেপে বার করা সম্ভব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy