চিড় ধরেছিল মাস ঘোরার আগেই। দেড় মাসের মধ্যেই পুরোপুরি ভেঙে গেল নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল ওরফে প্রচণ্ডের সঙ্গে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, ‘চিনপন্থী’ নেতা কেপি শর্মা ওলির দল কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল (ইউএমএল)-এর সমঝোতা। সোমবার ‘কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল’ (মাওয়িস্ট সেন্টার)-এর নেতা প্রচণ্ডের সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছে ওলির সিপিএন (ইউএমএল)।
তবে ওলির দলের সমর্থন প্রত্যাহারে আপাতত প্রচণ্ডের সমস্যা নেই কারণ নেপাল পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ, ২৭৫ আসন বিশিষ্ট হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসের বৃহত্তম দল নেপালি কংগ্রেস এবং তাদের সহযোগী চার দলের সমর্থন রয়েছে প্রচণ্ডের দিকে। প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরে নেপালি কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন পাঁচ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক হিসাবে হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসের ভোটে লড়েছিল প্রচণ্ডের দল সিপিএন (মাওয়িস্ট সেন্টার)। কিন্তু নেপালি কংগ্রেস প্রধান শের বাহাদুর দেউবা প্রধানমন্ত্রিত্বের ভাগ দিতে অস্বীকার করায় ডিসেম্বরে ওলির সিপিএন (ইউএমএল), রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্র পার্টি (আরএসপি) এবং ছোট দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রী হন প্রচণ্ড।
আরও পড়ুন:
ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে প্রচণ্ড-ওলির চুক্তি হলেও গোড়া থেকেই দু’দলের সম্পর্ক মসৃণ ছিল না। এই পরিস্থিতিতে গত ১৫ জানুয়ারি প্রচণ্ড সরকারের আস্থাভোটের দিন নাটকীয় ভাবে দেউবার নেতৃত্বাধীন নেপালি কংগ্রেসের জোট প্রচণ্ডকে সমর্থন করেন। এর পরে সিপিএন (ইউএমএল)-সিপিএন (মাওয়িস্ট সেন্টার) টানাপড়েন আরও তীব্র হয়। এর পর চলতি মাসে আরএসপি মন্ত্রীরা ইস্তফা দিয়ে জোট ছাড়ার কথা ঘোষণা করায় সরকারের অন্দরে টানাপড়েন আরও বাড়ে।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, ২৭৫ আসনের হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসের বৃহত্তম দল নেপালি কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা ৮৯। ওলির সিপিএন (ইউএমএল)-এর ৭৯ এবং প্রচণ্ডের সিপিএন (মাওয়িস্ট সেন্টার)-এর ৩২ জন রয়েছেন। আরএসপির ১৯, রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টির ১৪, জনতা সমাজবাদী পার্টির ১১ এবং ২৩ জন নির্দল সদস্য রয়েছেন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে। পরবর্তী সরকারে নেপালি কংগ্রেসের পাশাপাশি, আরএসপি যোগ দিতে পারে বলে বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরে জল্পনা রয়েছে। তবে চিনপন্থী ওলি ক্ষমতা থেকে দূরে সরায় নয়াদিল্লির স্বস্তি বাড়বে বলেই কূটনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা।