প্রতিরক্ষা কর্তা আলি রেজ়া আকবরিকে ফাঁসিতে ঝোলাল ইরান। প্রতীকী চিত্র।
আন্তর্জাতিক মহলের অনুরোধ উড়িয়ে প্রাক্তন প্রতিরক্ষা কর্তা আলি রেজ়া আকবরিকে ফাঁসিতে ঝোলাল ইরান। শনিবার এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে। আকবরি ইরান এবং ব্রিটেনের দ্বৈত নাগরিক ছিলেন। তাঁর মৃত্যুদণ্ডে তাই ক্ষোভ উস্কে দিয়েছে ব্রিটেনের। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক এই ঘটনাকে ‘বর্বর সরকারের কাপুরুষোচিত কাজ’ বলে বর্ণনা করেছেন।
মাহসা আমিনির মৃত্যুদণ্ডকে কেন্দ্র করে এমনিতেই উত্তাল ইরান। তার উপরে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে ক্রমাগত বোমারু ড্রোন জুগিয়ে চলেছে ইরান সরকার। তার মধ্যেই আকবরির ফাঁসি পশ্চিমি দুনিয়ার সঙ্গে ইরানের সংঘাত আরও বাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে। ১৯৭৯-এর ইসলামি বিপ্লবের পর সামরিক বাহিনীর হত্যালীলার স্মৃতিও ফিরে আসছে অনেকের মনেই।
কেন মরতে হল আকবরিকে? ইরান সরকারের দাবি, তিনি গোপনে ব্রিটেনের গুপ্তচর সংস্থা সিক্রেট ইনটেলিজেন্স সার্ভিস ওরফে এম১৬-এর হয়ে কাজ করছিলেন। যদিও এ বিষয়ে কোনও তথ্যপ্রমাণ দাখিল করেনি তারা। ইরানের বিচারবিভাগ শুধু জানিয়েছে, ব্রিটেনকে তথ্য সরবরাহের বিনিময়ে আকবরি ব্রিটেনের নাগরিকত্ব, বিপুল টাকা এবং লন্ডনে নানাবিধ সুযোগসুবিধা পেয়েছিলেন। আকবরির হত্যায় আজ তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছে ব্রিটেন। সুনক বলেছেন, ‘‘এটা একটা বর্বর সরকারের কাপুরুষোচিত কাজ। নিজের নাগরিকদের মানবাধিকারের প্রতিও কোনও সম্মান দেখাল না তারা।’’ ব্রিটিশ বিদেশসচিব জেমস ক্লেভারলির হুঁশিয়ারি, ‘‘এই ঘটনা চুপচাপ মেনে নেওয়া হবে না।’’
শনিবার ইরানের বিচারবিভাগের সঙ্গে যুক্ত মিজ়ান সংবাদ সংস্থা আকবরির ফাঁসির খবর জানায়। তবে কখন তাঁর ফাঁসি হয়েছে, সেটা স্পষ্ট নয়। জল্পনা জোরদার যে, হয়তো কয়েক দিন আগেই ফাঁসি হয়ে গিয়েছে। একটি বেসরকারি থিঙ্ক ট্যাঙ্কের কর্ণধার আকবরিকে ২০১৯ সালে গ্রেফতার করা হয় বলে খবর। এক সময় তিনি প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রীও ছিলেন। তবে তাঁর ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমে লেখালেখি শুরু হয় সম্প্রতিই। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে আকবরির একটি অডিয়ো ক্লিপ সম্প্রচারিত হয়, যেখানে আকবরি বলছেন, তাঁর উপরে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন চলছে। বন্দুকের মুখে দাঁড় করিয়ে তাঁকে দিয়ে ভুয়ো অপরাধ কবুল করানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহল তার পর থেকেই আকবরির মৃত্যুদণ্ড রদ করার ব্যাপারে ইরানকে চাপ দিতে থাকে। শুক্রবার আমেরিকার বিদেশ দফতর এ বিষয়ে তাদের প্রতিবাদ জানায়। কিন্তু লাভ কিছুই হল না।
তবে ইরান সরকারের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের সম্ভাবনাও থেকেই যাচ্ছে। কারণ আকবরি ছিলেন ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ সু্প্রিম সিকিউরিটি কাউন্সিলের সচিব আলি শামখানির ঘনিষ্ঠ। অডিয়ো ক্লিপে আকবরিকে বলতে শোনা গিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে শামখানির থেকে তথ্য আদায় করার অভিযোগ তোলা হয়েছে। এর পর শামখানিও কোপে পড়েন কি না, তার দিকে নজর রাখছে আন্তর্জাতিক মহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy