(বাঁ দিকে) ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র। ফেরানো হচ্ছে আটকে পড়া ভারতীয়দের (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
মঙ্গলবারই যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে ৭৫ জন ভারতীয়কে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে প্রথম দেশের মাটিতে পা রেখেছেন গাজ়িয়াবাদের বাসিন্দা রবি ভূষণ। এই মূহূর্তে কী রকম পরিস্থিতি সিরিয়ায়? রবিই শোনালেন সেই কাহিনি।
রবিবার গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধের পর সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন হয়েছে। সিরিয়ার দখল নিয়েছেন বিদ্রোহীরা। পশ্চিম এশিয়ার এই দেশে তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে আটকে পড়েছিলেন সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয়েরা। তাঁদের মধ্যে গাজ়িয়াবাদের ব্যবসায়ী রবিও ছিলেন। দেশে পা রেখে প্রথমেই রবি বলেন, ‘‘ভারত সরকার সিরিয়ায় আটকে থাকা ভারতীয়দের ফেরানোর জন্য উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। আমরাই প্রথম দল, যারা দেশে ফিরতে পেরেছি। গোটা প্রক্রিয়া চলাকালীন আমাদের প্রত্যেকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন আধিকারিকেরা। বার বার জানতে চেয়েছেন আমরা ঠিক আছি কি না।’’
সংবাদ সংস্থাকে রবি জানিয়েছেন, বিমানে ওঠার আগে দেখেছেন, ছোট শিশুদের নিয়ে প্রবাসী মহিলারা ৪-৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় বসে আছেন দেশে ফেরার অপেক্ষায়। উল্টো দিকে ভারতীয় দূতাবাস এতই তৎপরতার সঙ্গে কাজ করেছে, যে এরকম ধরনের কোনও অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়নি তাঁদের। প্রতি ঘণ্টায় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন সিরিয়ার ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীরা। খাদ্য, জল থেকে শুরু করে যে কোনও রকম অসুস্থতা— সব কিছুরই খেয়াল রাখা হয়েছিল। এ জন্য ভারত সরকার এবং সিরিয়া, লেবাননের ভারতীয় দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রবি। তবে এখন কেমন পরিস্থিতি সিরিয়ায়? রবি জানাচ্ছেন, এখনও আতঙ্কিত সেখানকার মানুষ। প্রকাশ্য রাস্তায় গোলাগুলি চলছে। বোমা হামলা, লুটপাট লেগেই আছে। বিমানবন্দর, ব্যাঙ্ক, হোটেল, পার্কিং লট— সর্বত্র তাণ্ডব চালিয়েছেন বিদ্রোহীরা। রবির আশঙ্কা, আগামী কয়েক দিনে পরিস্থিতি আরও সঙ্গিন হতে চলেছে সিরিয়ায়।
মঙ্গলবার রাতে গৃহযুদ্ধে ধ্বস্ত সিরিয়া থেকে ৭৫ জন ভারতীয়কে নিরাপদে বার করে আনা হয়। উদ্ধার হওয়া ভারতীয়দের মধ্যে ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের ৪৪ জন বাসিন্দা। তাঁরা সিরিয়ার সাইদা জ়নাব অঞ্চলে আটকে পড়েছিলেন। ৭৫ জন ভারতীয়কেই সিরিয়ার সীমান্ত পার করে সংলগ্ন লেবাননে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বিমানে ভারতে ফেরানো হয় তাঁদের।
রবিবার সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী এইচটিএস-এর যোদ্ধাবাহিনীর রাজধানী দামাস্কাস দখলের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন ঘটেছে। তদারকি সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন মহম্মদ আল-বশির। দামাস্কাস-সহ দেশের বড় বড় শহরগুলি চলে গিয়েছে বিদ্রোহীদের দখলে। কিন্তু এখনও সিরিয়ার বেশ কিছু অংশ আসাদ-অনুগত বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। দক্ষিণ দুয়োরে কড়া নাড়ছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। অনেকের আশঙ্কা, টালমাটাল সিরিয়ায় ফের হতে পারে ক্ষমতা হস্তান্তর। হয়তো বা এই সুযোগকেই কাজে লাগাতে চাইছেন নেতানিয়াহু। সেই আবহেই উদ্বেগ বাড়ছে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের। আটকে পড়া নাগরিকদের নিরাপদে সিরিয়া থেকে ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy