লঞ্চ দুর্ঘটনায় জখমদের চিকিৎসা চলছে বরিশালের এক সরকারি হাসপাতালে। শুক্রবার। ছবি পিটিআই।
বাংলাদেশে নদীর বুকে ছুটে চলা লঞ্চে আগুন লেগে অন্তত ৪১ জন প্রাণ হারালেন। পুড়ে জখম শ’দেড়েক। বৃহস্পতিবার শেষ রাতে বরিশালের ঝালকাঠিতে সুগন্ধা নদীর উপরে লঞ্চটিতে আগুন লেগে গেলে সারেং সেটিকে পাড়ে এনে নোঙর করতে সমর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু নদীর হাওয়ায় তত ক্ষণে আগুন লঞ্চের তিনটি তলাকেই গ্রাস করে ফেলে। বহু মানুষ প্রাণের ভয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ভেসে যান। বাকিরা হতাহত হন আগুনে পুড়ে।
ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে দক্ষিণের বরগুনার উদ্দেশে ‘অভিযান-১০’ নামে লঞ্চটি রওনা হয়েছিল বৃহস্পতিবার বিকেলে। ক্রিসমাসের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার হিড়িকে এ দিন অন্য দিনের চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী পেয়েছিল লঞ্চটি। ঠিক কত যাত্রী নির্দিষ্ট ভাবে জানা না-গেলেও ফেরিঘাটের কর্মীরা বলছেন, ৪৫০ থেকে ৫৫০ জন যাত্রী ছিলেন ‘অভিযান-১০’ লঞ্চে। লঞ্চের মালিক মহম্মদ জালাল জানান, রাত ৩টে পাঁচে এক জন সারেং তাঁকে জানান, দ্বিতলে একটি বিস্ফোরণের পরে বেশ বড় মাপের অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। আগুন দ্রুত তিন তলাতেও ছড়িয়ে পড়ছে। যাত্রীরা তখনই অনেকে নদীতে লাফ দিতে শুরু করেন। তবে সারেং লঞ্চটিকে পাড়ে এনে নোঙর করেন। আগুন দেখে স্থানীয়রা এগিয়ে এলেও প্রচণ্ড তাপের জন্য তাঁরা কাছে যেতে পারছিলেন না। বেশ কিছু ছোট ছোট নৌকা ও জলযানও যাত্রীদের উদ্ধারে এগিয়ে আসে। কিন্তু আগুন খুব দ্রুত ছড়িয়ে যায়। ইতিমধ্যে ঝালকাঠির দমকল বিভাগ খবর পেয়ে ৭টি ইঞ্জিন নিয়ে নেমে পড়ে।
এর পরে সকালে আগুন নেভানো গেলেও তার মধ্য থেকে ৪১টি ঝলসানো মৃতদেহ মিলেছে। সেগুলির এমনই হাল, সারা দিন চেষ্টা করেও ৩৬টিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। আহতদের মধ্যে ১৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঢাকা থেকে এক দল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঝালকাঠি পৌঁছেছেন পুড়ে যাওয়া যাত্রীদের শুশ্রূষার জন্য। অগ্নিকাণ্ডের তদন্তে দু’টি কমিটি গড়েছে সরকার। নৌপরিবহণ মন্ত্রক সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করে দ্রুত রিপোর্ট দিতে বলেছে। দমকল বিভাগ আলাদা করে তদন্তের জন্য দ্বিতীয় দলটি গড়েছে। নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এ দিন সকালেই ঝালকাঠিতে পৌঁছে যান। প্রত্যেক মৃতের জন্য এককালীন দেড় লক্ষ টাকা করে সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন তিনি। বরগুণা জেলা প্রশাসন দেহ সৎকারের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং
রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আব্দুল হামিদ ঘটনায় শোক জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy