—প্রতীকী চিত্র।
কী হবে যদি বাতাস থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড শুষে না নেয় গাছেরা? কিংবা কী হবে যদি তারা অক্সিজেন ফিরিয়ে না দেয়? উত্তর সকলেরই জানা। সেই মৃত্যুর দিকেই ক্রমশ এগিয়ে চলেছে জীবকূল। লক্ষণ স্পষ্ট। ঝড়ে পড়ছে গাছের পাতা। কমছে সবুজ। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সালোকসংশ্লেষ কমতে শুরু করেছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে ‘প্রাণ হারাচ্ছে’ ক্রান্তীয় অরণ্য।
ক্রান্তীয় অরণ্যকে বলা হয় ‘পৃথিবীর ফুসফুস’। এরা বাতাস থেকে বিপুল পরিমাণ ক্ষতিকর কার্বন-ডাইঅক্সাইড গ্যাস শুষে নিয়ে অক্সিজেন ফিরিয়ে দেয় প্রকৃতিতে। যাকে বলা হয় ফটোসিন্থেসিস বা সালোকসংশ্লেষ। এ হেন ক্রান্তীয় অরণ্য দীর্ঘ দিন ধরেই বিপদের মুখে। দাবানল, অনিয়ন্ত্রিত ভাবে গাছ কাটা, বন্যপ্রাণ হত্যা, খরা— এমন অসংখ্য কারণে অরণ্যের শ্বাসরুদ্ধ হয়ে যাওয়ার দশা। এর মধ্যে নয়া আতঙ্ক উষ্ণায়ন। ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, তাপমাত্রা এতটাই বাড়ছে, যা ক্রান্তীয় অরণ্যের পক্ষে অসহনীয় হয়ে উঠেছে। ঊর্ধ্বমুখী তাপমাত্রা বিপদসীমা ছাড়ানোর মুখে। এর পরে গাছেরা সালোকসংশ্লেষ করার ক্ষমতা হারাবে (ইতিমধ্যেই তা শুরু হয়েছে)। কার্বন ডাইঅক্সাইড, জল ও সূর্যালোক মিলিয়ে যে ‘রেসিপি’-তে খাবার তৈরি করে গাছেরা, তা-ই বন্ধ হওয়ার জোগাড়। সালোকসংশ্লেষ কমলে বাতাসে অক্সিজেন ফিরিয়ে দেওয়াও কমবে। ফলে সামগ্রিক ভাবে বাস্তুতন্ত্র ভেঙে পড়বে।
এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত চ্যাপম্যান ইউনিভার্সিটির জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক গ্রেগরি আর গোল্ডস্মিথ বলেন, ‘‘আমরা বহু আগে থেকেই জানি, গাছের পাতার তাপমাত্রা একটি নির্দিষ্ট সীমায় পৌঁছলে, সালোকসংশ্লেষ করার পদ্ধতি ভেঙে পড়ে। কিন্তু এই গবেষণায় প্রথম প্রমাণিত হল, ক্রান্তীয় অরণ্য বিপদসীমার খুব কাছে চলে এসেছে।’’ তাপমাত্রা ১১৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়ালে সালোকসংশ্লেষ পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। পরিণতি গাছের মৃত্যু। নতুন গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, ইতিমধ্যেই কিছু ক্রান্তীয় অরণ্যে তাপমাত্রা বিপদসীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের হুঁশিয়ারি, বিশ্ব উষ্ণায়ন রুখতে রাষ্ট্রনেতারা যদি এখনও তৎপর না হন, আরও বেশি গাছ সালোকসংশ্লেষ করার ক্ষমতা হারাবে। ক্রমে গাছের পাতা মরতে থাকবে।
গাছ কমবে।
এই গবেষণায় যুক্ত আর এক বিজ্ঞানী, ‘স্মিদসোনিয়ান ট্রপিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-এর ফরেস্ট ইকোলজিস্ট মার্টিন স্লট বলেন, ‘‘৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের থেকে অনেক কম তাপমাত্রাতেই সালোকসংশ্লেষ কমতে থাকে। তবে বিষয়টি ‘রিভার্সিবল’। অর্থাৎ তাপমাত্রা আবার কমতে শুরু করলে স্বাভাবিক হারে সালোকসংশ্লেষ হওয়া শুরু হবে।’’ অতএব বাঁচার পথ এখনও রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy