প্রতীকী ছবি।
ফাইজ়ার ও বায়োএনটেক-এর তৈরি প্রতিষেধকের পরে ইউরোপে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সিদের টিকাকরণে এ বার থেকে ব্যবহার করা যাবে মডার্নার টিকাও। শুক্রবার ‘স্পাইকভ্যাক্স’ নামে এই কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনকে কিশোর-কিশোরীদের উপর প্রয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছে ইউরোপীয় ওষুধ নিরীক্ষণ সংগঠন ‘দ্য ইউরোপিয়ান মেডিসিন্স এজেন্সি’ (ইএমএ)।
প্রাপ্তবয়স্কদের মতই ১২-১৭ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রেও চার সপ্তাহের ব্যবধানেই টিকার দু’টি ডোজ় দেওয়ার নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। স্পাইকভ্যাক্স নেওয়ার পর ১৮-২৫ বছরের তরুণ-তরুণীদের শরীরে যতটা অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে বলে দেখা গিয়েছে এই বয়সসীমার ক্ষেত্রেও তা প্রায় সমান সমান। তাদের এক পরীক্ষায় এমনটাই উঠে এসেছে বলে দাবি ইএমএ-র। ছাড়পত্র দেওয়ার আগে কমপক্ষে ৩৭৩২ জন বাচ্চার উপর স্পাইকভ্যাক্সের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
‘জেনেটিক মেটিরিয়াল’ বা জিনগত উপাদানের মাধ্যমে শরীরের কোষগুলির কাছে কোভিড-১৯ সৃষ্টিকারী সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের মতো ‘স্পাইক প্রোটিন’ তৈরিরবার্তা পাঠায় এই স্পাইকভ্যাক্স। যার ফলে নিজে থেকেই কোভিড প্রতিরোধক ক্ষমতা গড়ে ওঠে শরীরের ভিতর। এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা।
গত মে মাসে কিশোর-কিশোরীদের উপর প্রয়োগের ছাড়পত্র পেয়েছিল ফাইজ়ারের টিকাটি। আর জুলাইয়ের শেষে মডার্নাও সেই দলে যোগ দেওয়ায় খুশি ইউরোপের স্বাস্থ্যকর্তারা। খুশি প্রশাসনও। এখনও পর্যন্ত ইউরোপে ২০ কোটি মানুষের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে বলে বৃহস্পতিবারই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। প্রাপ্তবয়স্কদের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক ইতিমধ্যেই টিকার দু’টি ডোজ় পেয়েছেন। যদিও এই গ্রীষ্মের মধ্যে ৭০ শতাংশ মানুষের টিকাকরণ সম্পূর্ণ করার যে পরিকল্পনা ছিল তা পূরণ করা যায়নি বলেই জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
এ দিকে ভিয়েতনামে করোনার বাড়তে থাকা চোখ রাঙানির মধ্যে রাজধানী হ্যানয়-তে শনিবার থেকে ১৫ দিনের লকডাউন ঘোষণা করল প্রশাসন। শুক্রবার রাতে জারি করা লকডাউন নির্দেশিকায় দু’জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে শহরটিতে। খোলা থাকবে শুধুমাত্র হাসপাতাল এবং জরুরি পরিষেবা। হঠাৎ করে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চলতি সপ্তাহের গোড়া থেকেই বাইরে বেরোনোর উপর কড়াকড়ি বাড়িয়েছিল প্রশাসন। অপরিহার্য নয় এমন পরিষেবা এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রাখার নির্দেশ ছিল। তা সত্ত্বেও গত ২৪ ঘণ্টায় ৭০ জনের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে হ্যানয়-তে। এখনও পর্যন্ত যা এই শহরের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ।
অন্য দিকে, করোনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আসায় আস্তে আস্তে লকডাউন বিধি তুলে নিচ্ছে ব্রাজ়িলের বিভিন্ন প্রদেশ। এমনকি রিয়ো ডি জেনিরোর মেয়র এ-ও জানিয়েছেন যে, এ বছর নিজস্ব ছন্দেই হবে ব্রাজ়িলের বর্ষবরণ উৎসব!
তবে শুক্রবারই ডেল্টা ভেরিয়েন্টে সংক্রমিত ১৪০ জনের হদিস মিলেছে ব্রাজ়িলে। সবচেয়ে জনবহুল তিনটি শহরেই এই স্ট্রেনে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, পর্যাপ্ত পরিমাণে পরীক্ষা হচ্ছে না ব্রাজিলে, হলে দেখা যেত, আসল সংখ্যাটা আরও বেশি। তার মধ্যেই প্রশাসনের এই উদাসীন মনোভাবে প্রশ্ন উঠছে, দেশ জুড়ে যখন টিকাকরণের হার একেবারে তলানিতে, সেখানে এ ভাবে চললে বিশ্ব জুড়ে ত্রাহী ত্রাহী রব তোলা ডেল্টা ভেরিয়েন্টের দাপট সামাল দেওয়া যাবে তো? বিশেষজ্ঞরা অবশ্য সন্দিহান। সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্যের অধ্যাপক গনজ়ালোর ভেসিনার আশঙ্কা, ‘‘আমরা একটু বেশি তাড়াতাড়িই সব খুলে দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরায় জোর দিচ্ছি। সংক্রমণের নয়া ঢেউ এ বার আছড়ে পড়ল বলে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy