মঙ্গলবার নোবেল ব্যাঙ্কোয়েটে পরিবেশন করা হয়েছিল এই সব পদ। ছবি: নোবেল ওয়েবসাইট।
নোবেল লরিয়েট এস্থার দুফলো ও অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আমুদে’ বলে সুনাম রয়েছে। নাচগান, পার্টি, এ সব কিছুতে যথেষ্ট উৎসাহ রয়েছে অধ্যাপক দম্পতির। গত কাল নোবেল অনুষ্ঠানের পরে সিটি হলে ব্যাঙ্কোয়েটের সময়ে সুইডিশ টিভির সঞ্চালক তাঁদের জিজ্ঞাসা করেন— ‘‘আপনারাই তা হলে সকলের আগে ডান্স ফ্লোরে নামছেন, আর সকলের শেষে নাচের জায়গা ছাড়ছেন?’’ হাসিতে ফেটে পড়েন এ বছরের অর্থনীতির দুই নোবেলজয়ী। বলেন, ‘‘ইচ্ছে তো তা-ই ছিল। কিন্তু কাল খুব সকালে ছেলেমেয়েরা ফ্রান্স চলে যাচ্ছে। তাই সাতসকালে আমাদেরও ঘুম থেকে উঠতে হবে। ফলে তাড়াতাড়ি ডান্স ফ্লোর ছেড়ে যাওয়া ছাড়া আর উপায় কী!’’ সঞ্চালকের মন্তব্য— ‘‘অন্তত সবার প্রথমে নাচ শুরু করে দিন তা হলে।’’ ‘অবশ্যই,’’ জবাব দেন এস্থার।
ব্যাঙ্কোয়েটের পরে সিটি হলের দোতলায় বল নাচের অনুষ্ঠান। ব্যাঙ্কোয়েটে আমন্ত্রিত অতিথিরা তো বটেই, অংশ নেন সুইডিশ রাজা-রানিও। আজ ভোর পর্যন্ত চলেছিল বল নাচের সেই অনুষ্ঠান।
ব্যাঙ্কোয়েট হলে কোনও সাংবাদিক বা সংবাদমাধ্যমের প্রচার নিষিদ্ধ। শুধু সুইডিশ টেলিভিশনেরই সেখানে প্রবেশ ও প্রচারের অনুমতি রয়েছে। ব্যাঙ্কোয়েটের ফাঁকে ফাঁকে চ্যানেলের সাংবাদিকেরা নোবেল লরিয়েটদের একান্ত সাক্ষাৎকারে ডেকে নেন। অভিজিৎ ও এস্থারকে তাঁদের পোশাকের জন্য অভিনন্দন জানান সাংবাদিক। কাল লাল ব্লাউজ ও সবুজ শাড়ি পরেছিলেন এস্থার। সঙ্গে হাল্কা সোনার গয়না। অভিজিৎ পরেছিলেন ক্রিম রঙা ধুতি-পাঞ্জাবি, তার উপরে একটি কালো বন্ধগলা।
এ বারে প্রতিটি নোবেল পুরস্কারেরই প্রাপক একাধিক। এক একটি বিষয়ের জন্য এক জন করে নোবেল বিজেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। অর্থনীতির ত্রয়ীদের হয়ে ব্যাঙ্কোয়েটের ‘নোবেল অ্যাক্সেপটেন্স স্পিচ’ দেন এস্থার দুফলো। বলেন, ‘‘আমরা একটি আন্দোলনের প্রতিনিধি। আমাদের থেকে সেই আন্দোলন অনেক, অনেক বড়। নোবেল-মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমি
সেই হাজার হাজার গবেষকেরই প্রতিনিধিত্ব করছি।’’
এস্থার আরও বলেন, ‘‘মহিলাদের, বিশেষ করে কমবয়সি মেয়েদের বলব, বাইরের দুনিয়াটা দেখুন। যতটা সম্ভব মাটির কাছাকাছি গিয়ে কাজ করুন।’’ সুইডিশ তরুণীদের প্রতি তাঁর বার্তা— ‘‘কোনও উন্নয়নশীল দেশে যান। স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করুন, কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাতে যোগ দিন। দেখবেন, অন্য একটা পৃথিবী আপনার সামনে খুলে যাবে।’’ সম্মিলিত শ্রোতা-অতিথিদের উদ্দেশে অভিজিৎ বলেন, ‘‘যেটা ভালবাসেন, সেটাই করুন, যেটা করছেন, সেটাকে ভালবাসুন।’’
একান্ত সাক্ষাৎকারে সুইডিশ সাংবাদিক অভিজিৎকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘শুনেছি, আপনারা যখন এক সঙ্গে কাজ করেন মাইকেল ক্রেমার (অর্থনীতিতে এ বারের তৃতীয় নোবেলজয়ী) মতাদর্শের তত্ত্বের দিকটি তুলে ধরেন, এস্থার কাজটা খাতায়-কলমে করেন। আপনার ভূমিকা কী?’’ অভিজিতের সহাস্য উত্তর— ‘‘হিন্দিতে একটা কথা আছে— কাবাব মে হাড্ডি (মানে কী, ব্যাখ্যা করেন), আমার ভূমিকা অনেকটা সে রকম। আমি হচ্ছি কাবাবের মধ্যে সেই হাড্ডি। দু’টুকরো মাংস ধরে রাখি।’’ একটু থেমে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘মনে হয় ভাবনা-চিন্তাটা শুরু করি আমি-ই। তার পরে ওঁরা কাজটা চালিয়ে নিয়ে যান।’’
আজ, বুধবার, নোবেল লরিয়েটদের সম্মানে রাজপ্রাসাদে বিশেষ ভোজের আয়োজন করেছেন সুইডেনের রাজা ষোড়শ কার্ল গুস্তাফ এবং রানি সিলভিয়া।
রাজকীয় ভোজ
• স্টার্টার বা প্রথম পাতে: ক্যাভিয়ারের মতো এক ধরনের দুষ্প্রাপ্য মাছের ডিম, পোশাকি নাম— ‘কালিক্স ভঁদস রো’, সঙ্গে মুলোর সস
• মেন কোর্স: লেবু ও টাইম মাখানো পুরভরা হাঁসের রোস্ট, সঙ্গে রসুন দেওয়া আলুভাজা, মশলাদার বিট আর বেকড পেঁয়াজ
• ডিজ়ার্ট বা শেষ পাতে: রাজ়বেরি মুস, চকোলেট মুস, রাজ়বেরি সোর্বে
• সঙ্গে নানা ধরনের ওয়াইন, চা এবং কফি
(তালিকা অসম্পূর্ণ)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy