কাবুলে নিহত ম্য়াক্সটন সোভিয়াকের পোস্ট করা শেষ ছবি। ছবি: সংগৃহীত।
তালিকায় মোট ১৩ জন। তাঁদের মধ্যে ১১ জনই এলিট কমান্ডো বাহিনী মেরিন কোরের সদস্য। রয়েছেন আমেরিকার স্থল এবং নৌবাহিনীর এক জন করে সেনাও। বৃহস্পতিবার রাতে কাবুল বিমানবন্দরে আইএস-কে জঙ্গি হানায় মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের শেষ পর্যায়ে এই প্রাণহানির ঘটনা ফের আলোড়ন তুলেছে আমেরিকায়। নিহতদের পরিবারের তরফেও বাইডেন সরকারের আফগান নীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এখনও পেন্টাগনের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে কাবুল বিমানবন্দর সন্ত্রাসে নিহত সেনাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। তবে আমেরিকার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ইতিমধ্যেই তাঁদের কয়েক জনকে ‘খুঁজে’ বার করেছে। প্রকাশ্যে এনেছে নিহত সেনাদের পরিজনের প্রতিক্রিয়াও।
কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে আইএস-কে জঙ্গিদের বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছেন রায়লি ম্যাককলাম। ২০ বছরের ওই মেরিনস কমান্ডো ওয়াইমিং প্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যেই সন্তানের জন্ম দিতে চলেছেন তিনি। একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘‘খবরটা শোনার পর ও উচ্ছ্বসিত হয়েছিল। এক জন ভাল বাবা হতে চেয়েছিল।’’ রায়লির ভাই জানিয়েছেন, জেনে বুঝেই মেরিন কোরে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
আর এক নিহত সেনা ম্যাক্সটন সোভিয়াক সম্ভবত কাবুলে পৌঁছেই পরিস্থিতির গুরুত্ব আঁচ করেছিলেন। নেটমাধ্যমে শেষ পোস্টে তাঁর মন্তব্য, ‘মারতে হবে অথবা মরতে হবে। অবশ্যই হত্যাকারী শিবিরে থাকার চেষ্টা করব’। আফগানিস্তান থেকে সেনা ও অসামরিক নাগরিকদের মসৃণ ভাবে দেশে ফেরাতে কাবুলে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নিজে ফিরতে পারলেন না।
ম্যাক্সটনের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর দিদি মেরিলিন লিখেছেন, ‘আমি রাজনীতির মানুষ নই। তবুও বলছি, আমার ছোট্ট ভাই খুবই বুদ্ধিমান এবং সংবেদনশীল মনের ছিল। ভালবাসত নিজের ড্রামে তাল তুলতে। কিন্তু অন্যদের বাঁচাতে গিয়ে তার জীবন চলে গেল।’ ম্যাক্সটনের পরিজনেদের অনেকেই বাইডেন সরকারের আমেরিকা নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন। রিপাবলিকান সেনেটর রব পোর্টম্যানও সেই প্রসঙ্গ তুলে বিঁধেছেন সরকারকে।
কাবুলে নিহত ২২ বছরের মেরিনস হান্টার লোপেজ রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। তাঁর বাবা দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার রিভারসাইড কান্ট্রির ডেপুটি শেরিফ ছিলেন। পরিজনের জানিয়েছেন, হান্টারের ইচ্ছে ছিল তাঁর বাবার অবসরের পরে তিনি শেরিফের ডেপুটি হবেন। কিন্তু সেই সুযোগ আর পেলেন না তিনি।
ক্যালিফোর্নিয়ার টেলর হভার, ডেগান ইউলিয়ামের মতো মেরিন কোরের কমান্ডোরাও রয়েছেন বৃহস্পতিবারে আইএস-কে হামলায় মৃতদের তালিকায়। নেটমাধ্যমে পরিজন এবং বন্ধুদের স্মৃতিচারণায় এসেছেন তাঁরা। এসেছেন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনেও। আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের পরে হামলার জন্য দায়ী জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আর পদক্ষেপের সম্ভাবনা থাকবে কি না, সে প্রশ্নও উঠেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy