বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল ছবি।
গত দু’বছরের মতোই এ বারেও রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার বার্ষিক বিতর্কে নিজে যোগ দেবেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর প্রতিনিধি হিসাবে বক্তৃতা করবেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। কেন এই পদক্ষেপ, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে নানা মহলে। তবে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সম্মেলনে সরাসরি যোগ না দিলেও ওই সময়ে নিউ ইয়র্কে হাজির থাকবেন মোদী। ২২শে সেপ্টেম্বর লং আইল্যান্ডে ১৬ হাজার দর্শকাসন সম্পন্ন একটি প্রেক্ষাগৃহে বিশাল এক ‘কমিউনিটি ইভেন্ট’-এ তিনি বক্তৃতা দেবেন। সেখানে থাকবেন ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা। পাশাপাশি রাষ্ট্রপুঞ্জ আয়োজিত ‘সামিট অব দ্য ফিউচার’-এও বক্তৃতা দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর।
জুলাই মাসে যখন রাষ্ট্রপুঞ্জের পক্ষ থেকে একটি সম্ভাব্য বক্তার তালিকা প্রকাশ করা হয়, সেখানে মোদীর নাম ছিল। ২৬ সেপ্টেম্বর তাঁর বক্তৃতার সময় ধার্যও ছিল। কিন্তু তিনি পিছু হটেছেন। পরিবর্ত হিসেবে জয়শঙ্করের বক্তৃতা দেওয়ার কথা ২৮ তারিখ। মোদী এই মঞ্চে শেষ বার বক্তৃতা দিয়েছিলেন ২০২১-এ। কেন এ বারে তাঁর নাম থাকা সত্ত্বেও তিনি সরে দাঁড়ালেন, তা নিয়ে মুখ খোলেনি সাউথ ব্লক। গত বারে রাষ্ট্রপুঞ্জের সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার কারণ হিসেবে ঘরোয়া ভাবে জানানো হয়েছিল, পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট এবং তার পর লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি। কিন্তু এ বছর সে রকম কোনও চাপ তো নেই-ই, তার থেকেও বড় কথা, ওই সময়েই আমেরিকা সফরে যাচ্ছেন মোদী। তা হলে বক্তৃতা নয় কেন?
একটি মহলের মতে, এর সম্ভাব্য কারণ হতে পারে এখনকার আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি। লাগাতার ভূকৌশলগত সংঘাতের আবহে ভারত যে ভারসাম্যের কূটনীতি নিয়ে এগোচ্ছে, তা ক্রমশই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে বলে এই মহলের দাবি। পাশাপাশি ভারতের প্রতিবেশী বলয়ও ক্রমশ অগ্নিগর্ভ হচ্ছে। আপাতত বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন পূর্ব লাদাখে ভারতের ভূখণ্ডে চিনা সেনার দখলদারি, ভারতের দৌত্য ও মোদীর সফরের মধ্যেই ইউক্রেনের উপরে রাশিয়ার বার বার হামলার মতো বিষয়গুলি অস্থির রেখেছে সাউথ ব্লককে। এই অবস্থায় বিশ্বের সর্বোচ্চ মঞ্চকে কাজে না লাগিয়ে জয়শঙ্করকে এগিয়ে দেওয়াটা কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি না হওয়ার চেষ্টা কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে।
অন্য দিকে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের তরফে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সম্মেলনের মধ্যে পার্শ্ববৈঠকে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বসতে চাওয়ার অনুরোধ নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে নয়াদিল্লির তরফে। তবে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে ইতিবাচক সক্রিয়তা দেখা যায়নি। বিদেশ মন্ত্রকের একাংশের বক্তব্য, এই বৈঠক আদৌ হবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
ইউনূসের ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকার ভাল ভাবে নেয়নি সাউথ ব্লক। তিনি ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনার সমালোচনা করে কার্যত ভারতকেই দুষেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। হাসিনার আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলকেই ভারত ইসলামি মৌলবাদী বলে মনে করে— এই অভিযোগ করেছেন ইউনূস। তাঁর মন্তব্যের কোনও জবাব এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে দেয়নি নয়াদিল্লি। কিন্তু ঘরোয়া ভাবে জানানো হয়েছে, এই ধরনের মন্তব্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy