সিলেট রামকৃষ্ণ মিশনে পুজোর প্রস্তুতি। —নিজস্ব চিত্র।
বাংলাদেশের সিলেট জেলায় দুর্গাপুজোর সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে। ২০২১ সালে ৬০৫টি মণ্ডপে পুজো হয়েছিল। গত বছর হয়েছিল ৬১১টিতে। এ বার আরও ছ’টি বেড়ে ৬১৭টি পুজো নথিভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সর্বজনীন পুজো ৫৬৯টি, বাকি ৪৮টি পারিবারিক। সিলেট মহানগর ও তার বাইরের পুজোর হিসেব ধরলে সংখ্যাটি যথাক্রমে ১৫১ ও ৪৬৬।
সিলেটে আগে মূলত বনেদি বাড়িতেই দুর্গাপুজো হত। এখন সে সব বাড়ির অধিকাংশেই আর দুর্গোৎসব হয় না। শেখঘাটের লাল ব্রাদার্স বাড়ি, নয়া সড়কে রাজকুমার সেনের বাড়ি ও চৌধুরী পরিবার, হাওয়াপাড়ার ঘোষ ভবন, জামতলায় দেবেন্দ্র মহাজনের বাড়ি, চৌহাট্টায় সেন্ট্রাল ফার্মেসির বাড়ি, শিবগঞ্জে সুধীর দের বাড়িতে শারদবন্দনা হলেও আগের জৌলুস নেই। এখন মূলত দর্শনার্থীরা ভিড় জমান সিলেট রামকৃষ্ণ মিশন ও আশ্রম, শ্রীশ্রী দুর্গামন্দির বালুচর, শিববাড়ি সিলেট প্রভৃতি পুজোমণ্ডপে।
সিলেট রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক স্বামী চন্দ্রনাথানন্দ মহারাজ জানান, দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে রাত সাড়ে দশটায় মন্দিরের সদর দরজা বন্ধ করা হয়। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দর্শনার্থীতে ঠাসা থাকে পূজাপ্রাঙ্গণ। মহানবমীতে হয় মহাপ্রসাদ বিতরণ। অসংখ্য ভক্ত সে দিন প্রসাদ গ্রহণ করেন।
চা বাগানগুলিতেও শ্রমিকেরা দুর্গাপূজার আয়োজন করেন। বিশেষ করে মালিনীছড়া, দলদলি, লাক্কাতুরা, খাদিম চা বাগানে পুজোর দিনগুলিতে মেলা বসে। এই সময়ে সিলেটের বাজারে পুজোর কেনাকাটার ভিড়। বিশেষ করে, জামাকাপড়ের দোকানে অনেক রাত পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। দাড়িয়ামুখের তরুণ সোহাগ দাস সিলেট শহরের এক বস্ত্রবিপণীতে কাজ করেন। বললেন, বছরের অন্য সময় রাত আটটাতেই ছুটি মেলে। দুর্গাপুজো ও ইদের সময়ে সাড়ে দশটাতেও বেরোনো যায় না। একই কথা শোনালেন মণিপুরি পল্লীর নিউ নীলাচলের কর্ণধার জাবেদ খানও।
পুলিশ জানায়, পুজোয় আইনশৃঙ্খলা ও সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সিলেট মহানগরী শাখা স্থানে স্থানে সম্প্রীতি সভা করছে। পুজোর চার দিন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি থাকবে সাদা পোশাকের গোয়েন্দাবাহিনী। অধিকাংশ মণ্ডপে লাগানো হবে সিসি ক্যামেরা। জেলা প্রশাসন এই সময়ে অতিরিক্ত নজরদারির ব্যবস্থা করে। জেলাশাসকের কার্যালয়ে থাকে হটলাইন। প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ, জেনারেটর রাখা-সহ উনিশটি নির্দেশ পালনের অনুরোধ করা হয়েছে। সিলেট চাঁদনিঘাটে রাত ৯টা পর্যন্ত এবং অন্যত্র সন্ধ্যার আগে প্রতিমা নিরঞ্জন শেষ করে নিতে হবে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ইলিয়াস শরিফের কথায়, প্রকৃত অর্থেই ‘সম্প্রীতির নগরী’ সিলেট। দুর্গোৎসব এখানে সম্মিলিত ভাবে উদ্যাপন করা হয়। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপকুমার দেব বলেন, দেশ জুড়ে কেন্দ্রীয় থেকে কোতোয়ালি স্তর পর্যন্ত রয়েছে দুর্গাপূজা উদ্যাপন কমিটি। তারা সবাই দুর্গোৎসবের আগে বার্ষিক প্রতিনিধিসভা করে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে তারাও শান্তিশৃঙ্খলার দিকে নজর রাখে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy