E-Paper

ব্রিটেনে মহিলাদের ভোটাধিকার আন্দোলনের কান্ডারি সোফিয়া দিলীপ সিংহের বাড়িতে ‘ব্লু প্লাক’

শুক্রবার দুপুরে ‘মার্চিং টুগেদার, সিস্টার সাফ্রাজেট’ গানের সুরের সঙ্গেই ফ্যারাডে হাউসে উন্মোচিত হয় সোফিয়ার নামে বসানো ব্লু প্লাকটি।

An image of Princess Sophia Duleep Singh’s London home honoured with commemorative Blue Plaque

সোফিয়া দিলীপ সিংহের বাড়িতে বসল ‘ব্লু প্লাক’। নিজস্ব চিত্র।

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৩ ০৮:১৫
Share
Save

ব্রিটেনে মহিলাদের ভোটাধিকার আন্দোলনের কান্ডারি ‘সাফ্রাজেট’দের অন্যতম পুরোধা, সোফিয়া দিলীপ সিংহের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর বাসভবন, ফ্যারাডে হাউসের সামনে বসানো হল ‘ব্লু প্লাক’। ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদের সম্মান জানিয়ে তাঁদের স্মৃতি-বিজড়িত ভবনগুলিকে ‘ব্লু প্লাক’ দিয়ে চিহ্নিত করার কাজটি করে চলেছে ‘ইংলিশ হেরিটেজ সোসাইটির স্কিম’।

মহারাজ রঞ্জিত সিংহের নাতনি, শিখ সাম্রাজ্যের শেষ মহারাজা দিলীপ সিংহের কন্যা সোফিয়া। তাঁকে ধর্মকন্যার স্বীকৃতি দেন ব্রিটেনের তৎকালীন রানি ভিক্টোরিয়াও। রানিই ১৮৯৬ সালে সোফিয়া এবং তাঁর বোনেদের থাকার জন্য তাঁদের লন্ডনের দক্ষিণ-পশ্চিমে, হ্যাম্পটন কোর্ট প্রাসাদের কাছে এই ফ্যারাডে হাউসটি উপহার দিয়েছিলেন।

শুক্রবার দুপুরে ‘মার্চিং টুগেদার, সিস্টার সাফ্রাজেট’ গানের সুরের সঙ্গেই ফ্যারাডে হাউসে উন্মোচিত হয় সোফিয়ার নামে বসানো ব্লু প্লাকটি। ভবনটির প্রাঙ্গণ তখন ভেসে যাচ্ছিল উপস্থিত দশর্কদের করতালি এবং আনন্দধ্বনিতে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই পরেছিলেন ‘ভোটস ফর উইমেন’ লেখা ব্যাজ। ফ্যারাডে হাউসের বাইরে প্লাকটির উপরে লেখা, ‘প্রিন্সেস সোফিয়া দিলীপ সিংহ এখানে বাস করতেন, ১৮৯৬-১৯৪৮।’ অনুষ্ঠানে ‘ইংলিশ হেরিটেজ সোসাইটির স্কিম’-এর ডিরেক্টর আনা ইভি বলেন, ‘‘ব্রিটিশ ইতিহাসের এক চমকপ্রদ ব্যক্তিত্ব রাজকুমারী সোফিয়া। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁকে আমরা ভুলতে বসেছিলাম। এই ব্লু প্লাক আমাদের মনে করিয়ে দেবে, মেয়েদের ভোটাধিকারের দাবিতে তাঁর লড়াইয়ের কথা।’’ আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সোফিয়ার জীবনীকার অনিতা আনন্দ এবং সাফ্রাজেটদের নেত্রী এমেলিন প্যাঙ্কহার্স্টের নাতনি হেলেন প্যাঙ্কহার্স্ট।

১৮৪৯ সালে দ্বিতীয় অ্যাংলো-শিখ যুদ্ধের পরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে রাজ্যপাট তুলে দিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন সোফিয়ার বাবা মহারাজা দিলীপ সিংহ। তখন তাঁর বয়স মাত্র দশ। সিংহাসনের পাশাপাশি পঞ্জাবের রাজ কোষাগারের চাবিও ব্রিটিশদের কাছে হস্তান্তর করতে বাধ্য হন তিনি। যেখান থেকে বহুমূল্য কোহিনুর হিরেটি চলে যায় ব্রিটিশদের দখলে। এর পর সপরিবার ব্রিটেনে চলে আসেন দিলীপ।

১৮৭৬ সালে ইংল্যান্ডে জন্ম সোফিয়ার। মেয়েকে সব রকম সুখ-সুবিধার মধ্যেই বড় করছিলেন দিলীপ। ১৯০৭ সালে ভারতে বেড়াতে আসেন সোফিয়া। সে সময়ে একাধিক স্বাধীনতা সংগ্রামীর সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। অধিকার আন্দোলনের প্রতি সেখান থেকেই আগ্রহের জন্ম সোফিয়ার মনে। নিজের দেশে ফিরে এসে ‘উইমেন্স সোশ্যাল অ্যান্ড পলিটিক্যাল ইউনিয়ন’ (ডব্লুএসপিইউ) এবং ‘উইমেন্স ট্যাক্স রেজ়িস্ট্যান্স লিগ’ (ডব্লুটিআরএল)-এ নাম লেখান সফিয়া। ডব্লুটিআরএল-এর স্লোগান ছিল ‘নো ভোট, নো ট্যাক্স’। ভোটাধিকার না-পাওয়া পর্যন্ত কর না-দেওয়ার পণ নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন সোফিয়া। এই কাজের জন্য বহুবার প্রশাসনের রোষের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। তবে শেষমেশ এই আন্দোলনের মাধ্যমেই ব্রিটেনে মহিলাদের ভোটধিকার প্রাপ্তির স্বপ্ন সত্যি হয়। এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত মহিলাদের উল্লেখ করা হত ‘সাফ্রাজেট’ নামে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Blue Plaque Honour Sophia London

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।