ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথায় এ বার সেটাই বাস্তবায়িত হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে! ‘টাইম ম্যাগাজিন’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, ক্রাইমিয়া রাশিয়ার সঙ্গেই থাকবে! শুধু তা-ই নয়, ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের দাবিও নস্যাৎ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
সামরিক দৃষ্টিতে ক্রাইমিয়ার অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৪ সালে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে সামান্য সংঘর্ষের পরে দক্ষিণ ইউক্রেনের ক্রাইমিয়া উপদ্বীপ দখল করেছিল রুশ সেনা। পরে গণভোট করিয়ে ওই অংশকে রুশ ভূখণ্ডের সঙ্গে জুড়ে নিয়েছিল ভ্লাদিমির পুতিনের সরকার। সেখানকার কৃষ্ণসাগর উপকূলের সেবাস্তিপোল বন্দর শীতের সময়ও সচল থাকে। মূল রুশ ভূখণ্ডের কোনও বন্দরে সে সুবিধা নেই। সমুদ্র ভেসে আসা বরফের চাঁইয়ের কারণে বছরভর সেগুলি সচল রাখা সম্ভব নয়। সেই সামরিক অবস্থানগত গুরুত্বের কারণে এ বারের যুদ্ধের গোড়া থেকেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কির বাহিনী বারে বারে নিশানা করেছে ক্রাইমিয়াকে। ২০২৩ সালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ক্রাইমিয়ার সেবাস্তিপোল বন্দরে রুশ বাহিনীর মজুত তেলের ভান্ডার ধ্বংস করে দিয়েছিল ইউক্রেন সেনা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ক্রাইমিয়া নিজের দখলে আনতে পারেনি ইউক্রেন। এ বার ট্রাম্প জানাল, ক্রাইমিয়ায় রুশ দখলদারি মেনে নেবে আমেরিকা!
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকেই দায়ী করলেন ট্রাম্প। রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাত নিরসনের জন্য ক্রাইমিয়া ছেড়ে দিতে রাজি না হওয়ায় জ়েলেনস্কির সমালোচনা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁর কথায়, ‘‘তারা (ইউক্রেন) ফিরিয়ে আনতে পারবে? ক্রাইমিয়ার মানুষ মূলত রুশ ভাষায় কথা বলেন। বহু বছর ধরে সেখানে রাশিয়ার ডুবোজাহাজ রয়েছে।’’ ট্রাম্প আরও দাবি করেন, জ়েলেনস্কিও ‘বোঝেন’ ভবিষ্যতে ক্রাইমিয়া রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণেই থাকবে।
আরও পড়ুন:
ইউক্রেনের দীর্ঘদিনের দাবি, মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার। কিন্তু ট্রাম্প মনে করেন, জ়েলেনস্কির এই কল্পনা কখনই বাস্তাবায়িত হবে না! মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘আমি মনে করি না ইউক্রেন কখনও ন্যাটোতে যোগ দিতে পারবে। আমার মনে হয়, যুদ্ধ শুরুর অন্যতম কারণই ছিল ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার দাবি। যদি তারা এই দাবি না করত, তবে যুদ্ধই শুরু হত না।’’