শুল্কের পর এ বার দেশগুলিকে ‘শুল্ক-বহির্ভূত অপরাধ’ নিয়েও হুঁশিয়ারি আমেরিকার! রবিবার এ ধরনের আটটি ‘অপরাধ’-এর একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যেখানে দেশগুলিকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, উপরোক্ত অপরাধগুলি করলে আমেরিকার সঙ্গে আজীবনের মতো সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে! চিন ছাড়া বাকি সব দেশের উপর চাপানো নয়া শুল্কনীতিতে ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ ঘোষণার দু’সপ্তাহের মাথায় এ বার এমনটাই জানাল আমেরিকা।
আটটি অপরাধের তালিকায় রয়েছে ইচ্ছাকৃত ভাবে মুদ্রার হার বদল, পণ্যের উপর আমদানি-শুল্কের মতো মূল্যযুক্ত কর (ভ্যাট) চাপানো, উৎপাদন মূল্যের কমে রফতানি এবং অন্যান্য সরকারি ভর্তুকি, প্রতিরক্ষামূলক কৃষি ব্যবস্থা (যেমন ইউরোপে জিনগত ভাবে উৎপাদিত ভুট্টা না থাকা), প্রতিরক্ষামূলক প্রযুক্তি (জাপানের ‘বোলিং বল’ পরীক্ষা, যা ব্যবহার করে জাপান মার্কিন গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে জাপানি গ্রাহকদের কাছে বিক্রির জন্য প্রতারণা করে বলে অভিযোগ), জাল নোট তৈরি, পাইরেসি এবং শুল্ক এড়াতে দফায় দফায় পণ্য রফতানি। দেশগুলিকে এই মর্মে হুঁশিয়ারি দিয়ে আমেরিকা জানিয়েছে, উপরোক্ত অপরাধগুলি করলেও আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে দেশগুলির।
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, এর আগেও চিন-সহ কয়েকটি দেশের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত ভাবে মুদ্রার হার কমানোর অভিযোগ এনেছিলেন ট্রাম্প। তাঁর দাবি, কিছু কিছু দেশ তাদের রফতানিকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে ইচ্ছাকৃত ভাবে তাদের মুদ্রার অবমূল্যায়ন করে, যার ফলে বিদেশে মার্কিন পণ্যের দাম আরও বেড়ে যায়। কোনও কোনও দেশ আবার আমদানির উপর মূল্যযুক্ত কর (ভ্যাট) চাপালেও রফতানিতে ভর্তুকি দেয়। আবার জাপানের ‘বোলিং বল পরীক্ষা’-র উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিরক্ষামূলক প্রযুক্তি সম্পর্কেও সতর্ক করেছেন ট্রাম্প। ট্রাম্প প্রথম ২০১৮ সালে জাপানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছিলেন। তাঁর দাবি, জাপান এই পদ্ধতি ব্যবহার করে মার্কিন গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে জাপানি গ্রাহকদের কাছে বিক্রির বিষয়ে প্রতারণা করে। ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘ওরা শূন্যে প্রায় ২০ ফুট উপর থেকে একটি বল গাড়ির হুডের উপর ফেলে দেয়। যদি হুডে ফুটো হয়ে যায়, তা হলে গাড়িটি কেনা হয় না।’’ শুল্কযুদ্ধের আবহে আরও এক বার সেই প্রসঙ্গ টেনেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
চলতি মাসের শুরুতেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক চাপানোর ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ৯ এপ্রিল থেকে তা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। যদিও তার এক দিন আগে সামগ্রিক শুল্কনীতি সাময়িক ভাবে স্থগিত করেন ট্রাম্প। তবে বেজিঙের উদ্দেশে এখনও ক্রমাগত শুল্কবাণ ছুড়ে যাচ্ছেন তিনি। চিনা পণ্যের উপর শুল্কের পরিমাণ ১৪৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৪৫ শতাংশ করতে চলেছে ট্রাম্প সরকার। বাকি সব দেশের উপর শুল্ক আরোপ ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। সেই আবহে এ বার নতুন করে আক্রমণ শানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।