ইফতার এড়িয়ে কি রাজনৈতিক কট্টরবাদকেই আরও তুলে ধরতে চাইলেন ট্রাম্প? প্রশ্ন আমেরিকাতেই। ছবি: এএফপি।
প্রথা ভেঙে দিলেন ট্রাম্প। রমজানে এ বার আর কোনও ইফতার পার্টির আয়োজন হল না হোয়াইট হাউসে। ট্রাম্পের দুই ডেমোক্র্যাট পূর্বসূরি বারাক ওবামা এবং বিল ক্লিন্টন তো বটেই, তাঁর নিজের দল রিপাবলিকান পার্টির তরফ থেকে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়া জর্জ ডব্লিউ বুশও এ প্রথা কখনও ভাঙেননি। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইফতারের বিষয়ে উচ্চবাচ্যই করল না। ইফতারের আয়োজন তো হলই না। এ বার যে রমজানে হোয়াইট হাউসে কোনও ইফতার পার্টি হবে না, সে কথা সরকারি ভাবে জানানোও হল না।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুসলিম বিরোধী ভাবমূর্তি নিয়ে বিতর্ক কম নেই। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে নেমেই নিজের মুসলিম বিরোধী অবস্থান ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। হোয়াইট হাউসে পা রাখার পরও তিনি প্রায় প্রতিটি পদক্ষেপে বুঝিয়ে দিয়েছেন, কট্টরবাদী নীতি থেকে তিনি সরবেন না। সাতটি মুসলিম প্রধান দেশের নাগরিকদের আমেরিকা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির কথা ঘোষণা করে বিশ্বের নানা প্রান্তে সমালোচিত হয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু কট্টরবাদী পথ বদলাতে রাজি হননি। এ বার রমজানে হোয়াইট হাউসে ইফতার পার্টি দেওয়ার রেওয়াজটাও তিনি বন্ধ করে দিলেন।
আরও পড়ুন:সুর পাল্টে ট্রাম্প গুণ গাইলেন ভারতের
আমেরিকার তৃতীয় প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসনের সময়ে প্রথম বার হোয়াইট হাউসে ইফতারের আয়োজন হয়েছিল বলে একাংশের মত। সেটা ১৮০৫ সাল। সে বছর রমজান চলাকালীন সিদি সোলিমান মেলিমেলি নামে এক তিউনিসীয় দূত আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন। তাঁর সম্মানে প্রেসিডেন্ট জেফারসন সূর্যাস্তের পর নৈশভোজের আয়োজন করেন। সিদি সোলিমান মেলিমেলির ধর্মীয় বিশ্বাসের কথা মাথায় রেখেই জেফারসন সূর্যাস্তের পরে নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন। কিন্তু ইফতার হিসেবে ওই নৈশভোজ আয়োজন করা হয়েছিল কি না, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ওবামা গত বছরের রমজানেও ইফতার আয়োজ করেছিলেন হোয়াইট হাউসে।
প্রেসিডেন্ট ওবামার শিবির দাবি করত, ১৮০৫ সালে প্রেসিডেন্ট জেফারসনের দেওয়া ওই সূর্যাস্ত পরবর্তী ভোজ আসলে ইফতারই ছিল। গত বছরের রমজানেও ওবামা হোয়াইট হাউসেই ছিলেন। যথারীতি ইফতারের আয়োজন করেছিলেন। এ বার পরিস্থিতি বদলে গেল।
প্রেসিডেন্ট জেফারসন ১৮০৫ সালে সূর্যান্ত পরবর্তী নৈশভোজ আয়োজনের পর থেকে প্রতি বছর হোয়াইট হাউসে ইফতার পার্টি হয়েছে, এমন নয়। কিন্তু বিল ক্লিন্টনের জমানা থেকে সে পরম্পরায় ছেদ পড়েনি। ১৯৯৬ সালে ক্লিন্টন দম্পতি হোয়াইট হাউসে ইফতারের আয়োজন করেছিলেন। তার পর রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও সে পরম্পরা বজায় রেখেছিলেন। কয়েক দশক পর ট্রাম্প সে পরম্পরায় ছেদ ফেললেন।
রমজান শেষ। রাত পোহালেই ইদ। আর ইফতার আয়োজনের সময়ও নেই। তাই হোয়াইট হাউস থেকে কোনও ঘোষণা না হলেও এ কথা স্পষ্ট যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইফতার এড়িয়েই গেলেন। যে রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে তিনি প্রেসিডেন্ট হয়েছে, সেই অবস্থান থেকে যে নড়বেন না, নীরবে আরও এক বার সেই বার্তা দিতেই ট্রাম্প ইফতার এড়িয়ে গেলেন। বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy