হাচিকো এবং সেই অধ্যাপককে নিয়ে তৈরি ছবি হাচি: আ ডগ’স টেল-এর একটি দৃশ্য।
মালিক ফিরবে, এই আশায় হাসপাতালের বাইরে একটি বেঞ্চের পাশে কয়েক দিন ধরে ঠায় বসে থাকতে দেখা গেল একটি কুকুরকে। ওই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন এক ব্যক্তি। হাসপাতালের বাইরের বেঞ্চে বসে থাকার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার পর ওই হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর। কুকুরটি তার মালিককে শেষ বারের মতো ওই বেঞ্চেই বসে থাকতে দেখেছিল। মালিক ফেরেনি। কিন্তু তার অপেক্ষায় বেঞ্চের পাশ থেকে একটুও নড়তে দেখা যায়নি তাকে। ঠিক যেন বাস্তবের ‘হাচিকো’।
ঘটনাটি পুয়োর্তো রিকোর। দিন কয়েক আগে ওই ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন। নিজের ঘরবাড়ি না থাকলেও, লিও নামে একটি কুকুরই ছিল তাঁর সব সময়ের সঙ্গী। নিজের থেকেও বেশি যত্ন করতেন লিও-র। দু’জনের মধ্যে একটা অটুট বন্ধন তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সেই বাঁধন ছিঁড়ে গিয়েছে কয়েক দিন আগেই।
হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে বছর ষাটের ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। যে বেঞ্চে তিনি বসেছিলেন, সেই বেঞ্চের পাশেই কুকুরটিকে ঠায় বসে থাকতে দেখেন হাসপাতালেরই এক চিকিৎসক। যাতায়াতের পথে কুকুরকটিকে ওই বেঞ্চের পাশে গত কয়েক দিন ধরে লক্ষ্য করায় কৌতূহল হয় হোসে অ্যান্তোনিও নামে ওই চিকিৎসকের। খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন, কুকুরটি একটি ভবঘুরের। কয়েক দিন আগেই হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। চিকিৎসকের আর বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে, পোষ্যটি তার মালিকের আসার অপেক্ষা করছে। চিকিৎসক জানান, লিও-র একটি পায়ে ক্ষত ছিল। এক জন পশু চিকিৎসককে এনে সেই ক্ষতের চিকিৎসাও করান। লিও-কে নিজের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার বহু চেষ্টা করেও কোনও লাভ হয়নি। ওই বেঞ্চের পাশ থেকে কিছুতেই তাকে সরানো যায়নি।
এই ঘটনা মনে করিয়ে দেয় ‘হাচিকো’র ঘটনাকে। টোকিয়ো বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিভাগের অধ্যাপক হিদেসাবুরে উয়েনোর পোষ্য ছিল হাচিকো নামে একটি কুকুর। হাচিকো অধ্যাপকের ফেরার আগে প্রতি দিন শিবুয়া স্টেশনে হাজির হত সে। ১৯২৫ সালের মে পর্যন্ত এ ভাবেই মালিককে আনতে স্টেশনে অপেক্ষা করতে দেখা যেত হাচিকোকে। কিন্তু হঠাৎই অধ্যাপক মারা যান। হাচিকো কিন্তু তার প্রতি দিনের অভ্যাস বদলাতে পারেনি। মালিক যে ট্রেনে আসতেন ঠিক সেই সময়েই ওই স্টেশনের সামনে হাজির হত সে। এ ভাবে ন’বছর মালিকের জন্য ঠিক একই জায়গায় অপেক্ষা করতে করতে এক দিন মৃত্যু হয় তার। পুয়োর্তো রিকোর ভবঘুরের পোষ্যের ঘটনা যেন হাচিকোর স্মৃতি উসকে দিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy