বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। —ফাইল চিত্র।
সোমবার দিল্লি থেকে বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী ঢাকা আসার আগে বিএনপির তিন গণসংগঠনের ভারতীয় হাই কমিশন অভিযানের কর্মসূচি নির্বিঘ্নেই কেটেছে। এ দিন সকালে পুরনো পল্টনে বিএনপির দফতরের সামনে জাতীয়তাবাদী যুবদল, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের ডাকা এই কর্মসূচিতে জনসমাগমে দলটি আরও এক বার বুঝিয়ে দিয়েছে— আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে জামায়াতে ইসলামী নয়, তারাই বাংলাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। তবে বারিধারায় ভারতীয় হাই কমিশনের ধারেকাছে এ দিন হাজার ৫০ লোকের মিছিলটিকে পৌঁছতে দেয়নি পুলিশ। রামপুর সেতুর উপরে ব্যারিকেড গড়ে মিছিল আটকে দেওয়া হয়। তার পরে তিন সংগঠনের ৬ জন প্রতিনিধিকে পুলিশ বারিধারায় নিয়ে যায়। তাঁরা হাই কমিশনের কর্তাদের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন।
রবিবার বিকেলে বাংলাদেশের বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের ব্রিটিশ শাখার একটি অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল বক্তৃতা দেন শেখ হাসিনা। এ দিন ফের তিনি ইউনূস সরকারকে অবৈধ দখলদার বলে উল্লেখ করে বলেন, “ইতিমধ্যেই তারা জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে। মানুষ এদের উপরে তিতিবিরক্ত।” হাসিনা বলেন, “দেশের প্রত্যেকটি সমস্যা নিরসনে এই সরকার ও তাদের উপদেষ্টারা ব্যর্থ। মানুষ তাঁদের চিনে ফেলেছে বুঝে এখন তাঁরা নানা ধরনের উত্তেজক কথাবার্তা বলছেন।” সূত্রের খবর, ঢাকা সফরে আসা ভারতীয় বিদেশ সচিবের কাছে হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাবেন ইউনূস সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারা। অন্তত ভারতে বসে তিনি যাতে রাজনৈতিক কাজকর্ম চালাতে না পারেন, সেটি নিশ্চিত করতে চাইবে ঢাকা।
বিক্রম মিস্রীর ঢাকা সফর উপলক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল ইসলাম রবিবার বলেন, “আমরা চাই ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও ভাল জায়গায় যাক। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক যেন ন্যায্যতা, সমতা এবং মর্যাদাপূর্ণ হয়। দুই দেশের মানুষই যেন এর সুবিধাটা পায়।” ডেপুটি প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গির জানান, ভারতের বিদেশ সচিবের সঙ্গে ইউনূসের সাক্ষাৎ হতে পারে। দু’দেশের সম্পর্কের উত্তেজনা কমাতেই বিক্রম মিস্রী ঢাকা যাচ্ছেন। তার আগে এ দিন বিএনপির কর্মসূচি শুরুর আগে যথারীতি উস্কানিমূলক বক্তৃতা দেন দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি। এর পরে মিছিলটি বারিধারার উদ্দেশ্যে এগোয়। তবে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী এ দিন সকাল থেকেই ভারতীয় হাই কমিশনের সুরক্ষা জোরদার করে। এ জন্য অতিরিক্ত ১০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই ইউনূস সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে দিল্লি। সোমবার মিস্রী ফের সেই বার্তা ঢাকার কাছে দিতে পারেন। কিন্তু এই মুহূর্তে সংখ্যালঘুদের মুখ চট্টগ্রামের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে মুক্তি দেওয়ার কোনও উদ্যোগ সরকারের পক্ষে দেখা যাচ্ছে না। এর মধ্যে শনিবার চিন্ময়কৃষ্ণ ও ১৬৪ জনের নামে হত্যাচেষ্টার নতুন একটি মামলা চট্টগ্রাম ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে করেছেন এনামুল হক নামে হেফাজতে ইসলামের এক স্থানীয় নেতা। আদালত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, চিন্ময়কৃষ্ণকে আদালতে তোলার দিনে গণ্ডগোলের সময়ে মামলার বাদী এনামুলকে সংখ্যালঘুদের উপরে হামলা করতে দেখা গিয়েছে। আইনজীবীরা বলছেন, চিন্ময়কৃষ্ণ বরাবর ছাত্রজনতার আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে এসেছেন। রাষ্ট্র-বিরোধী একটি কথাও কখনও বলেননি। সেই চিন্ময়কৃষ্ণকে কেন সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের ‘অবৈধ’ মামলায় কারাবন্দি করল, তা বোধগম্য নয়। এক আইনজীবীর কথায়, “চিন্ময় দাসের জনপ্রিয়তা এবং লক্ষাধিক জনসমাগমের ক্ষমতাই শাসকদের চক্ষুশূল করেছে তাঁকে। কারণ ওই ছাত্রনেতাদের ডাকে এখন আর একশো মানুষও আসছেন না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy