Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
India-Bangladesh

ভারত ‘জিআই’ তকমা পেতেই নড়েচড়ে বসল বাংলাদেশ! টাঙ্গাইলের স্বত্ব নিয়ে লড়াই দুই প্রতিবেশীর

ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল শাড়ির ‘জিআই’ তকমার জন্য জেনিভায় ওয়র্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজ়েশন (উইপো)-এর কাছে আবেদন করে সম্প্রতি তা পেয়েছে ভারত।

An image of Tant Saree

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:১২
Share: Save:

রূপসী বাংলার শাড়ি কার— তা নিয়ে দর কষাকষি ভারত এবং বাংলাদেশের। আরও খোলসা করলে বাংলা এবং বাংলাদেশের মধ্যে।

ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল শাড়ির ‘জিআই’ তকমার জন্য জেনিভায় ওয়র্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজ়েশন (উইপো)-এর কাছে আবেদন করে সম্প্রতি তা পেয়েছে ভারত। ঢাকার দাবি, ভারত তথা বাংলা নয়, টাঙ্গাইল শাড়ি তাদের পণ্য। কারণ, টাঙ্গাইলের ভৌগোলিক অবস্থান বাংলাদেশে। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে, দেরিতে হলেও এ নিয়ে তৎপর হয়েছে বাংলাদেশ। তারা এই বিষয়ে উইপো-র সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে টাঙ্গাইলের স্বত্বের জন্য আবেদন করেছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়ম অনুসারে, একাধিক দেশ একই স্বত্বাধিকারের জন্য উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ সমেত উইপোয় আবেদন করতে পারে। এমনকি, প্রথমে অন্য দেশ করলে তার পর আর এক দেশও তা করতে পারে। এ সব ক্ষেত্রে উইপো-র নির্দিষ্ট কমিটি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেয়।

গত মাসের গোড়ায় টাঙ্গাইল শাড়িকে পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক নির্দেশকপণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীন পেটেন্ট, ডিজ়াইন অ্যান্ড ট্রেড মার্কস বিভাগের তরফে এ কথা ঘোষণা হয়। সুন্দরবনের মধুও এই রাজ্যটির নিজস্ব পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ‘জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন রেজিস্ট্রি’র তথ্য বলছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হস্তশিল্প বিভাগ এর জন্য আবেদন করে ২০২০-র সেপ্টেম্বরে। টাঙ্গাইল শাড়িকে ধরা হয়েছে নদিয়া ও পূর্ব বর্ধমানের পণ্য হিসেবে। এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা দেন।

কিন্তু এই সংবাদ প্রকাশ্যে আসার পরই ক্ষুব্ধ বাংলাদেশে। প্রতিবাদে টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সামনে সচেতন নাগরিক সমাজের উদ্যোগে মানববন্ধন হয়। কর্মসূচি শেষে সেখানকার সদস্যেরা বলেন, ‘‘টাঙ্গাইলের শাড়ি আমাদের অহংকার। এই শাড়ির স্বীকৃতি ভারত কখনওই পেতে পারে না। ভারতের এই দাবি অযৌক্তিক। যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। টাঙ্গাইলের শাড়ির বিশেষত্ব মানেই টাঙ্গাইলে তৈরি। টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই পাওয়ার দাবিদার বাংলাদেশ।’’

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শাড়ির উৎপত্তিস্থল হিসেবে উঠে আসছে পাথরাইল, নলশোধা, ঘারিন্দা-সহ টাঙ্গাইলের এমন বাইশ-তেইশটি গ্রামের নাম। এদের একদা বাইশগ্রাম বলা হত। এ সব গ্রামেই ঠিকানা ছিল তাঁতিদের। যাদের পদবি ছিল ‘বসাক’। স্বাধীনতার পরে বসাক সম্প্রদায়ের বড় অংশ ভারতে চলে আসে। তাদের বসতি নদিয়ার ফুলিয়া গ্রাম এবং পূর্ব বর্ধমানের ধাত্রী গ্রাম ও সমুদ্রগড়ে। ফলে সেখানেই এই টাঙ্গাইল শাড়ি শিল্পটি পরিচিতি লাভ করে

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের মোট জিআই পণ্যের সংখ্যা এখন ১৭। ২০২৩ সালে নিবন্ধিত জিআই পণ্য হল— নাটোরের কাঁচাগোল্লা। বাংলাদেশের শীতলপাটি, রাজশাহি সিল্ক, রংপুরের শতরঞ্জি, কালিজিরা চাল, দিনাজপুরের কাটারীভোগ চাল এবং নেত্রকোনার সাদামাটি এই তালিকায় রয়েছে। এ ছাড়া বাগদা চিংড়ি, বগুড়ার দই, নবাবগঞ্জের ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আমও রয়েছে। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো জিআই পণ্য হিসেবে ২০১৬-এ স্বীকৃতি পায় জামদানি। এর পরে ২০১৭ সালে ইলিশ, ২০১৯ সালে খিরসাপাতি আম, ২০২০ সালে ঢাকাই মসলিনকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এরপর থেকে এই পণ্যগুলি বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পাচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Tant Sarees Bangladesh new delhi India GI Tag
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy