হাওয়াইয়ের দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯৩ হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
হাওয়াইয়ের দাবানলে মৃতের সংখ্যা এক রাতে লাফিয়ে বেড়ে ৯৩ হয়েছে। আগুনে পুড়ে দেহগুলির অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া সেগুলো চিহ্নিত করার কোনও রাস্তা নেই। গত ১০০ বছরে আমেরিকায় অগ্নিকাণ্ডের জেরে এটাই মৃত্যুর সর্বোচ্চ খতিয়ান বলে মনে করা হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মাউই কাউন্টির লাহাইনা শহরে দাবানল ছড়িয়েছিল। শহরের নিকটবর্তী পাহাড়ে প্রথমে আগুন লাগে। হ্যারিকেন ডোরার ইন্ধনে চোখের নিমেষে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাদদেশের লাহাইনা আর কুলায়। এত মানুষের মৃত্যুতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে।
লাহাইনায় সব মিলিয়ে ১২ হাজার মানুষের বাস। সমুদ্রের ধারে সাজানো শহরটা এই মুহূর্তে পুড়ে খাক। যে দিকে চোখ যায়, সার সার পোড়া বাড়ির ধ্বংসাবশেষ, রাস্তার ধার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে পুড়ে ঝামা হয়ে যাওয়া গাড়ির সারি আর মাঝে মাঝে পোড়া গাছের গুঁড়ির অবশিষ্টাংশ। প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, প্রশাসন যদি আর একটু তৎপর হত, সময়ে সকলকে সতর্কবার্তা পাঠাত, তা হলে এত মানুষের মৃত্যু হত না। লাহাইনার বাসিন্দা ভিলমা রিড বললেন, ‘‘শহরে যে আগুন লেগেছে তা কখন জানতে পারলাম? যখন আমার বাড়ির উল্টো দিকের রাস্তায় দেখলাম আগুন জ্বলছে। মৃত্যু সাক্ষাৎ সামনে দাঁড়িয়ে আছে।’’ ৬৩ বছরের প্রৌঢ়া জানালেন, মেয়ে, নাতি আর দু’টো বিড়াল নিয়ে গাড়িতেই রয়েছে তিনি। ওটাই এখন মাথা গোঁজার একমাত্র আশ্রয়।
লাহাইনার প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, তারা জরুরি পরিস্থিতিতে উদ্ধারকাজে নেমেছে। ঘরহারাদের জন্য খোলা হয়েছে ত্রাণশিবির। আপাতত পোড়া শহরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। পাশাপাশি কুলা এবং লাহাইনার রয়ে যাওয়া হাতে গোনা বাসিন্দাদের বলা হয়েছে, সরবরাহের জল যেন না পান করেন, এমনকি ফুটিয়েও নয়। কারণ, প্রচুর পাইপ ফেটে জলে রাসায়নিক দূষণ ছড়িয়ে থাকতে পারে।
১৯৪৬ সালের সুনামিতে ১৫০ জনের প্রাণ গিয়েছিল হাওয়াইয়ে। তার পরেই আপৎকালীন সতর্কবার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বসানো হয়েছিল সাইরেন। প্রতি মাসের তার শব্দ শোনা যায়, পরীক্ষা হয়— কাজ করছে কি না। এ যাত্রায় প্রাণ নিয়ে সরে যেতে পেরেছেন যাঁরা, কোনও সাইরেনের শব্দই পাননি বলে জানাচ্ছেন। অভিযোগ করেছেন, অবিশ্বাস্য দ্রুততায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। প্রস্তুতির কোনও সময়ই পাননি। আগুনের শিখা চোখে পড়ার পরে বিপদের আঁচ পান। তেমনই এক জন, লেন রবিনসন। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও সতর্কবার্তা ছিল না। কিচ্ছুটি না। কেউ আসেনি। ধারেকাছে দমকলের কোনও গাড়িও দেখা যায়নি।’’ সাইরেন বেজে ওঠার উল্লেখ সরকারি নথিতেও অবশ্য নেই। মোবাইলে বিপদবার্তা গিয়েছিল। ঘোষণা করা হয়েছিল টেলিভিশন আর রেডিয়োয়। কিন্তু বিদ্যুৎ এবং সেলুলার নেটওয়ার্কের বিভ্রাটের জন্য তা অনেক ক্ষেত্রেই পৌঁছয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy