সরানো হচ্ছে এমএইচ ১৭ কাণ্ডে নিহতদের দেহ। সোমবার গ্রাবোভোয়। ছবি: এএফপি
তীব্র পচা গন্ধ! ট্রেনের কামরার দরজা খুলতেই গা গুলিয়ে উঠেছিল পর্যবেক্ষকদের। সঙ্গে চিন্তা তা হলে কি দেহগুলো আর পরীক্ষা করার মতো অবস্থাতেও নেই? খতিয়ে দেখে অবশ্য নিশ্চিন্ত তাঁরা। জানালেন রবিবার যে বিশেষ ট্রেনে দেহগুলি তুলে দিয়েছিল জঙ্গিরা, তার হিমঘরে ‘ভাল’ই আছে সেগুলি। সোমবারও দুর্ঘটনাস্থল থেকে নতুন ২১টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। সেগুলিও সেই ট্রেনে রাখা হয়। ইউক্রেন সরকার জানিয়েছে, সোমবার রাতে ট্রেনটি খারকিভ শহরের দিকে রওনা হয়ে গিয়েছে। সেখান থেকে দেহগুলি নেদারল্যান্ডসে পাঠানো হবে।
মালয়েশীয় বিমানটির ব্ল্যাক বক্সও মালয়েশিয়া সরকারের হাতে তুলে দিতে রাজি জঙ্গিরা। এ কথা জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। আন্তর্জাতিক চাপেই জঙ্গিরা এই পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আজই দুর্ঘটনাস্থলে আন্তর্জাতিক তদন্তকারীদের যাওয়ার দাবি জানিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পাশ হয়েছে।
গত কাল থেকে যে প্রশ্ন দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল, তা হল দেহভর্তি এই ট্রেন কবে খারকিভ শহরের বিশেষ বিপর্যয় কেন্দ্রে পৌঁছবে? আর কবেই বা সেগুলি পাবেন নিহতদের পরিজনেরা? আজ তিন ডাচ বিশেষজ্ঞ-সহ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের যে দলটি দেহগুলি দেখতে গিয়েছিল তার কোনও কোনও সদস্য জানিয়েছিলেন, সোমবার রাতের দিকেই ট্রেনটিকে ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল জঙ্গিরা। কিন্তু এখন প্রশ্ন, যে কামরায় দেহগুলি পাঠানো হয়েছে তাতে আদৌ সংরক্ষণের উপযুক্ত ব্যবস্থা রয়েছে কি? এ দিন সকালে ওই ট্রেনেরই এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, গত কাল রাত ভর বিদ্যুৎ ছিল না কামরাগুলিতে। ফলে ঠান্ডা রাখার ব্যবস্থাও কাজ করেনি। এ হেন অবস্থায় দেহগুলির অবস্থা কী দাঁড়াবে তা নিয়ে বিস্তর চিন্তায় পড়ে যান পর্যবেক্ষকরা। কিন্তু পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সন্তুষ্ট দলের প্রধান পিটার ভ্যান ভিলে। বলেন, “দেহগুলি ভাল ভাবেই রয়েছে।” অথচ ওই দলেরই মুখপাত্র পরে জানান, চড়া রোদ ও গনগনে তাপে পড়ে থাকতে থাকতে অন্য কিছু দেহাংশ নষ্টও হয়ে গিয়ে থাকতে পারে।
এতেই শেষ নয়। ইউক্রেন প্রশাসন জানিয়েছে, এমএইচ-১৭-র ধ্বংসাবশেষের একটা বড় অংশ ক্রেনে করে সরিয়েছে জঙ্গিরা। একাধিক যাত্রীর দেহও লোপাট করেছে তারা। তবে পর্যবেক্ষক দলের কারও কারও মতে, দুর্ঘটনার পর চার দিন কেটে যাওয়ায় এমনিতেই বহু তথ্যপ্রমাণ হারিয়ে যেতে পারে বা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ইউক্রেনের দাবি, এটা জঙ্গিরাও জানে। আর তাই তদন্তে বাধা দিয়ে দেরি করাচ্ছে তারা। রুশপন্থী জঙ্গিদের নেতা আলেকজান্দার বোরোদাই কোনও অভিযোগই মানেননি।
তবে এই সংঘর্ষের থেকেও ইউক্রেন প্রশাসন ঢের বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সদ্য ফাঁস হওয়া একটি টেলি-কথোপকথনকে। আসলে এটি যে রুশ মদতের অন্যতম প্রমাণ, সে কথা বিলক্ষণ জানে ইউক্রেন। এবং তা সামনে আসার পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে ক্ষোভ যে আরও বাড়বে, তা নিয়েও নিশ্চিত ছিল তারা। হয়েছেও ঠিক তাই। যার জবাবে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন পুতিন। তবে দেহগুলি পাওয়ার আশা জেগেছে নিহতদের পরিজনদের মনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy