নিহত নারী অধিকাররক্ষা কর্মী ফ্রোজ়ান সাফি।
এক নারী অধিকাররক্ষা কর্মী-সহ চার আফগান মহিলার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হল একটি বাড়ি থেকে। উত্তর আফগানিস্তানের মাজ়ার-ই-শরিফ শহরের ঘটনা। দুষ্কৃতীরা গত সপ্তাহে ওই হত্যালীলা চালালেও বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে আজ। তালিবান সরকারের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের মুখপাত্র কারি সইদ খোস্তি টুইটারে জানিয়েছেন, দু’জন সন্দেহভাজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাটির আদালতে বিচার হবে।
কে বা কারা এই খুনগুলিতে জড়িত, তা প্রকাশ্যে আনেনি তালিবান সরকার। তবে জানা গিয়েছে, যে চার জনকে খুন করা হয়েছে, তাঁদের আমন্ত্রণ জানিয়ে ওই বাড়িতে ডেকেছিল ধৃতেরা। কারা খুন হয়েছেন, তা-ও জানানো হয়নি। তবে মাজ়ার-ই-শরিফের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে এক জন সেখানকার পরিচিত মুখ। নারী অধিকাররক্ষা কর্মী ফ্রোজ়ান সাফি। বছর উনত্রিশের ফ্রোজ়ান একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি পড়াতেন। তালিবান দ্বিতীয় বারের জন্য আফগানিস্তানে সরকার গঠন করার পর থেকেই ভয়ে থাকতেন ফ্রোজ়ান। চেষ্টা করছিলেন বিদেশে পালিয়ে যেতে। দুষ্কৃতীরা সেই সুযোগই নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সপ্তাহ তিনেক আগে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ফ্রোজ়ান। তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁকে বিদেশে যাওয়ার বন্দোবস্ত করে দিচ্ছে কয়েক জন ব্যক্তি। সে জন্য যাবতীয় নথি নিয়ে একটি বাড়িতে তাঁকে দেখা করতে বলা হয়। তিনি ভেবেছিলেন, তাঁর জার্মানিতে যাওয়ার আবেদন হয়তো মঞ্জুর হয়েছে। সেই মতো গত ২০ অক্টোবর সমস্ত নথি নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোন ফ্রোজ়ান। তার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ফ্রোজ়ানকে গুলি করে মেরে তাঁর মুখ পুরো ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর পোশাক দেখে শনাক্ত করা হয়। বাকি তিন জন নিহত মহিলার পরিচয় জানা যায়নি। যে দেহগুলি উদ্ধার হয়েছে, তার মধ্যে বাকি তিন জনই মহিলা কি না তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। বাল্খ প্রদেশের তথ্য ও সংস্কৃতি
মন্ত্রকের মুখপাত্র জ়বিহুল্লা নুরানি অবশ্য আগে ভাগেই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে।
তবে গোটা ঘটনার পরে শিউরে উঠছেন আফগানিস্তানের নারী অধিকাররক্ষা কর্মীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানাচ্ছেন বিদেশে চলে যেতে তাঁদের সাহায্য করা হবে বলে নথি চেয়ে অনেকের কাছেই ফোন আসছে। এমনই এক জন বলেন, ‘‘ওরা আমাকেও ফোন করেছিল। আমার সম্পর্কে সবই জানে বলে মনে হল। অনেক নথি চেয়েছিল, বলল দেশ ছাড়তে ওরা আমায় সাহায্য করবে। আমার সন্দেহ হওয়ায় আমি নম্বর ব্লক করে দিই। আমাকে ওরা যে কোনও সময় খুঁজে বার করে মেরে ফেলবে। আতঙ্কে আছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy