প্রেসিডেন্ট তাইপ এর্ডোয়ান হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, রাস্তায় জঙ্গিপনা বরদাস্ত করা হবে না। সেই শাসানি উপেক্ষা করেই তুরস্কের ইস্তানবুলে লক্ষ লক্ষ মানুষ রাস্তায় নামলেন শুক্রবার রাতে। শহরের মেয়র একরেম ইমামোগলুর গ্রেফতারের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ। গত এক দশকে তুরস্কের রাস্তায় এত বড় মাপের বিক্ষোভ আর হয়নি।
ইমামোগলুর গ্রেফতারির বিরোধিতায় টানা তিন রাত প্রতিবাদ চলছে ইস্তানবুলে। শুক্রবারের জমায়েতে তিন লক্ষ মানুষ যোগ দেন বলে দাবি করছেন প্রধান বিরোধী নেতা ওজগুর ওজেল। জনতার করতালির মধ্যে বক্তৃতা দিতে দিতে তিনি বলেন, এটা বিরোধী দল সিএইচপি-র কোনও সমাবেশ নয়। সব দলের মানুষই জড়ো হয়েছেন, ইমামোগলুর প্রতি সংহতি জানাচ্ছেন। এঁরা সকলেই গণতন্ত্রের পক্ষে। তাঁর অভিযোগ, “বিচারবিভাগকে অস্ত্র করে ইমামোগলুর হাত মোচড়ানোর চেষ্টা করছেন এর্ডোয়ান এবং শহরের এই ভবন (সিটি হল) দখল করতে চান। আমরা এটি সরকারের নিযুক্ত ট্রাস্টির হাতে হস্তান্তর করব না!”
ওজেলের বক্তৃতার ফাঁকেই পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। দু’জন আহত হন। আঙ্কারা ও পশ্চিম উপকূলীয় শহর ইজমিরেও পুলিশ বিক্ষোভকারীদের উপর জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগ করেছে বলে জানা গিয়েছে। অন্তত ৪০টি প্রদেশে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়েরলিকায়া জানান, শুক্রবারের বিক্ষোভে ৯৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২০২৮ সালে তুরস্কে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। ইমামোগলু সেখানে বিরোধী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে স্থির হয়েছে। অন্য দিকে সরকার তাঁকে গ্রেফতার করেছে কুর্দি জঙ্গি সংগঠনকে সাহায্য করার অভিযোগে। যদিও বিক্ষোভরত জনতার মধ্য থেকে অনেকেই বলছেন, তাঁরা সরকারের এই দাবি বিশ্বাস করেন না। ইমামোগলুর মুক্তির দাবি দেশজোড়া প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন ওজেল। তারই পাল্টা হুঁশিয়ারিতে এর্ডোয়ান বলেছেন, রাস্তায় জঙ্গিপনা বরদাস্ত করা হবে না।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)