Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

করোনা আতঙ্কে তীব্র হাহাকার, প্রতিযোগিতার প্রথম পুরস্কারও এখন টয়লেট পেপার!

শুধু হংকং নয়, করোনা-সঙ্কটে টয়লেট পেপার নিয়ে হাহাকার পড়ে গিয়েছে সিঙ্গাপুর, জাপান, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া-সহ বহু দেশেই।

সিডনির একটি স্টোরে উধাও টয়লেট পেপার (বাঁ দিকে)। অস্ট্রেলীয় দৈনিকের সেই ফাঁকা পাতা। সোশ্যাল মিডিয়া

সিডনির একটি স্টোরে উধাও টয়লেট পেপার (বাঁ দিকে)। অস্ট্রেলীয় দৈনিকের সেই ফাঁকা পাতা। সোশ্যাল মিডিয়া

সংবাদ সংস্থা
সিডনি শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২০ ০৪:০৮
Share: Save:

গত মাসের মাঝামাঝি। হংকংয়ের একটি দোকানে আচমকাই হানা দেয় এক দল সশস্ত্র দুষ্কৃতী। অস্ত্র দেখিয়ে বলে, ‘‘যা আছে সব দিয়ে দাও, না হলে গুলি চালিয়ে দেব...।’’ বাধা দেওয়ার সাহস দেখাননি কেউ। দোকানের সব টয়লেট পেপার রোল ডাকাতি হয়ে যায়।

শুধু হংকং নয়, করোনা-সঙ্কটে টয়লেট পেপার নিয়ে হাহাকার পড়ে গিয়েছে সিঙ্গাপুর, জাপান, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া-সহ বহু দেশেই। বাসিন্দাদের আতঙ্ক, শেষে না ‘শৌচাগার-বন্দি’ হয়ে মরতে হয়!

হাহাকার এই পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, লোকের বাড়ির শৌচাগার থেকেও চুরি যাচ্ছে টয়লেট পেপার। সোনাদানা নয়, চোরের পছন্দ ওই ‘মহামূল্যবান’ কাগজটি। সিডনির এক সুপারমার্কেটে গত বুধবার টয়লেট পেপার কেনা নিয়ে এক রকম হাতাহাতি বেধে গিয়েছিল। ছুরি নিয়ে হামলা করে এক যুবক। শেষে ঝামেলা থামাতে পুলিশ ডাকতে হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় লোকজনের #টয়লেটপেপারগেট, #টয়লেটপেপারক্রাইসিস দিয়ে একের পর এক পোস্ট, কমেন্টের বন্যা। ছবি-ভিডিয়োতে হাসি-মস্করাও চলছে— যেমন, প্রেমিকাকে টয়লেট পেপার উপহার দিয়ে বিয়ের প্রস্তাব।

দোকানে বাড়ন্ত, অনলাইনে দাম চড়েছে ওই বিশেষ কাগজের। সিডনির একটি রেডিয়ো চ্যানেলে আবার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। প্রথম পুরস্কার— তিনটে টয়লেট পেপার রোল। অস্ট্রেলিয়ার একটি সংবাদপত্র আরও এক ধাপ এগিয়ে। তারা খবরের কাগজে আলাদা করে আট পাতা দিয়েছে। কোনও খবর লেখা নেই তাতে। জলছাপ দেওয়া পাতাগুলোর নীচে রয়েছে একটি বিশেষ বার্তা, ‘‘টয়লেট পেপার হিসেবে ব্যবহার করুন।’’ সোশ্যাল মিডিয়ায় সে নিয়ে কমেন্টের বন্যা। সংবাদ সংস্থাটি নিজেরাই টুইটারে পোস্ট করেছে তাদের ওই অভিনব উদ্যোগের ভিডিয়ো। তিন লক্ষ মানুষ ভিডিয়োটি দেখেছেন। হাজার হাজার লাইক। শ’য়ে শ’য়ে কমেন্ট। কেউ লিখেছেন, ‘‘এই জন্যই কাগজটাকে এত পছন্দ করি।’’ কেউ আবার লিখেছেন, ‘‘জিনিয়াস!’’

গত বছর ডিসেম্বরের শেষে প্রথম নোভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে চিনের উহানে। তার পর থেকে এক-এক করে ভাইরাস ছড়াতে থাকে বহু শহরে। সংক্রমণ রুখতে শহরগুলোকে ‘তালাবন্ধ’ করে দেয় চিন। বাড়িতে ‘বন্দি’ করা হয় বাসিন্দাদের। গত দু’মাস ধরে এ ভাবেই কাটাচ্ছেন চিনের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ। পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে ভাল। কিন্তু সম্প্রতি দৈনন্দিন সামগ্রীর অভাব দেখা গিয়েছে বন্দি শহরগুলোয়। বিশেষ করে টয়লেট পেপারের আকাল। চিনের দেখাদেখি এখন সংক্রমণ রুখতে শহর ‘তালাবন্ধ’ করার পথে হাঁটছে ইটালির মতো ইউরোপের দেশগুলোও। ফলে ভয় দানা বেধেছে পশ্চিমে। যদি কোয়ারেন্টাইন হতে হয়... হলে যদি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আকাল দেখা দেয়...। কিন্তু খাবার, পানীয়ের থেকেও দুশ্চিন্তা বেশি টয়লেট পেপার নিয়ে। ‘‘দু’দিন না খেয়ে থাকা যাবে, সপ্তাহ দুয়েকও কাটানো যাবে, কিন্তু প্রকৃতির ডাক উপেক্ষা করবেন কী করে!’’ —এমনই বলছেন বাসিন্দারা। তাই ‘হাত ও জলের কাজে’ অনভ্যস্ত সাহেব-মেমেরা হন্যে হয়ে কিনছেন টয়লেট পেপার। শপিং মলে ক্রেতাদের ট্রলি উপচে পড়ছে টয়লেট পেপারে। গৃহবন্দি হতে হলেও শৌচাগারে যেন বন্দি হতে না হয়!

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Toilet Paper Hong Kong
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy