করোনা-ত্রাস। ছবি: এএফপি।
করোনাভাইরাসের হানায় লাফিয়ে লাফিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে চিনে। সে দেশের জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব বলছে, রবিবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫৬। গত ২৪ ঘণ্টায় ফের নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। তাঁদের মধ্যে ১৩ জনই হুবেই প্রদেশের। শুধুমাত্র হুবেই প্রদেশেই এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫২ জনের। অন্য দিকে, সাংহাইয়ে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।আক্রান্তের সংখ্যাটাও বাড়ছে হু হু করে। এই সংখ্যাটা প্রায় দু’হাজার।
ইতিমধ্যেই এই ভাইরাস চিনের গণ্ডি ছাড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছে তাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, নেপাল, মালয়েশিয়ায়। সংক্রমণ ছড়িয়েছে ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকাতেও। যে গতিতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে চিনে, তা সামাল দিতে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে সরকারকে। প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং ‘গম্ভীর পরিস্থিতি’ আখ্যা দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কী ভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায় প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে তা নিয়ে জরুরি বৈঠকও করেছেন শি।
চিন প্রশাসন সূত্রে খবর, সংক্রমণ যাতে নতুন করে দেশের অন্য প্রান্তে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য ছোট ছোট দলে বিভিন্ন মেডিক্যাল টিম গঠন করে নজরদারি চালানো হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা উহান ও হুবেই প্রদেশে। আরও বেশ কয়েকটি শহরেও দ্রুত গতিতে সংক্রমিত হচ্ছে এই ভাইরাস। ইতিমধ্যেই ১৮টি শহরকে নজরবন্দি করেছে চিন।
আরও পড়ুন: মমতারাই টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং, বলছেন অমিত শাহ
আরও পড়ুন: নেপালে করোনা, নজরদারি দার্জিলিঙে
চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, উহানের এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ১২৩০ জনের ৬টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। হুবেই প্রদেশে ছয় দিনের মধ্যে হাজার শয্যার হাসপাতাল তৈরি করে আক্রান্তদের চিকিত্সা চালানো হচ্ছে। হুবেই প্রদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৫৮। তাঁদের মধ্যে ৫৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
করোনাভাইরাসের আতঙ্ক ক্রমশ গ্রাস করছে ভারতকেও। চিন-ফেরত একশোর বেশি ব্যক্তির উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। আগাম সতর্কতা হিসেবে দেশের সমস্ত বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনাভাইরাস ঠেকাতে দেশ কতটা প্রস্তুত তা পর্যালোচনা করতেই শনিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্র। ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন ক্যাবিনেট সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, বিদেশসচিব, প্রতিরক্ষা সচিব, স্বাস্থ্যসচিব-সহ বহু শীর্ষ আধিকারিক। উহানে আটকে থাকা ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে ইতিমধ্যেই চিনকে অনুরোধ জানিয়েছে ভারত।
উহান-সহ চিনের হুবেই প্রদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এমন অন্তত ৭০০ ভারতীয় পড়ুয়া আটকে রয়েছেন সংক্রমিত শহরগুলোয়। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে চিনের ভারতীয় দূতাবাস। ভারতে এখনও পর্যন্ত সংক্রমণের খবর না মিললেও চিন-ফেরত আরও ৭ জনকে হাসপাতালে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। কেরলে এ ভাবে নজরবন্দি অন্তত ৯০ জন।
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর রবিবার জানিয়েছেন, বেজিংয়ে ভারতীয় দূতাবাস সেখানকার ভারতীয়দের স্বাস্থ্যের উপর নজর রাখছে। ভারতীয়দের খোঁজখবর রাখতে দুটো হেল্পলাইনও খুলেছে তারা। সেগুলো হল— +৮৬১৮৬১২০৮৩৬২৯ এবং +৮৬১৮৬১২০৮৩৬১৭। এ দিন টুইট করে বেজিংয়ের ভারতীয় দূতাবাস বলে, “হুবেই ও উহান শহরে যে সব ভারতীয়রা রয়েছেন, বিশষ করে পড়ুয়াদের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।” তারা আরও জানিয়েছে, ভারতীয়দের নিরাপত্তার বিষয়ে চিন প্রশাসনের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy