লকডাউনে বাড়ছে গার্হস্থ্য অশান্তি, হিংসা, বিবাহবিচ্ছেদের আবেদনও। ছবি শাটারস্টকের সৌজন্যে।
লকডাউনে দীর্ঘ দিন ধরে ঘরবন্দি হয়ে থাকতে থাকতে দম্পতিদের মধ্যে বাড়ছে গার্হস্থ্য অশান্তি ও হিংসার ঘটনা। বাড়ছে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদনও। চিনের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর, লকডাউনের সময় চিনের বিভিন্ন আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন সবচেয়ে বেশি জমা পড়েছে গত মার্চে। মধ্য চিনের দু’টি শহর শিয়ান ও দাঝাউয়ে গত মাসের গোড়ার দিকে যত বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন জমা পড়েছে, তা সর্বকালীন রেকর্ড। হুনান প্রদেশের একটি সরকারি ওয়েবসাইটের খবর, সেখানকার মিলুয়োতে মার্চে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন জমা দেওয়ার যা লাইন হয়েছিল, চিনা সংবাদমাধ্যমের খবর, তা সামলাতে জল খাওয়ারও ফুরসত পাননি আদালতের কর্মীরা। মূলত বিবাহবিচ্ছেদের মামলা লড়েন সাংহাইয়ের এমন এক আইনজীবী স্টিভ লি জানিয়েছেন, লকডাউনের সময় মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত তাঁর হাতে আসা মামলার সংখ্যা ২৫ শতাংশেরও বেশি বেড়ে গিয়েছে।
বেজিংয়ের অসামরিক বিষয় মন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, ২০০৩ সাল থেকেই চিনে উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন। সংশ্লিষ্ট আইনকানুন আগের চেয়ে অনেকটাই শিথিল হওয়ায়। ২০০৩-এ চিনে বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছিল ১৩ লক্ষ দম্পতির। তার পর থেকে টানা ১৫ বছর ধরে সেই সংখ্যা উত্তরোত্তর বেড়েছে। ২০১৮-য় চিনে বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছিল ৪৫ লক্ষ দম্পতির। আর গত বছরে চিনে বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছিল ৫০ লক্ষ দম্পতির।
বেজিং আশা করেছিল, লকডাউনের ফলে হয়তো দেশে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদনের সংখ্যা একটু কমবে। দম্পতিরা দিনের প্রায় সবটুকু সময়ই এক সঙ্গে এক ছাদের তলায় থাকার সুযোগ পাচ্ছেন বলে হয়তো তাঁদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির মাত্রা কিছুটা কমবে। কিন্তু বিভিন্ন চিনা সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট বলছে, লকডাউনের ফলে উল্টোটা হয়েছে। দিনের বেশির ভাগ সময়টাই দম্পতিরা এক সঙ্গে এক ছাদের তলায় কাটানোয় তাঁদের মধ্যে বিরোধ বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই যা গার্হস্থ্য অশান্তির গণ্ডি ছাড়িয়ে গার্হস্থ্য হিংসায় পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন- করোনা: মৃত্যুর সংখ্যায় ইটালিকেও ছাপিয়ে গেল আমেরিকা, মৃত ২০ হাজারেরও বেশি
আরও পড়ুন- আট হাজার ছাড়িয়ে গেল দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, মৃত আরও ৩৪
প্রবীণদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ৭১ বছর আগেকার ‘শুধুই একটি শিশু’ আইন চিন কিছুটা শিথিলও করেছে বছরকয়েক আগে। কিন্তু তাতে বিশেষ ফল মেলেনি।
লকডাউনে চিনে বাড়ছে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন। ছবি- শাটারস্টকের সৌজন্যে।
আইনজীবী স্টিভ লি জানিয়েছেন, লকডাউনের সময় চিনে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন জমা পড়ার ঘটনা খুব বেড়ে যাওয়ার কারণ মূলত দু’টি। দীর্ঘ দিন ঘরবন্দি হয়ে থাকার ফলে মানসিক অবসাদ। এবং কর্মক্ষেত্র বা উপার্জন নিয়ে উদ্বেগ, আতঙ্ক বৃদ্ধি। যা দম্পতিদের ভবিষ্যতকে আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে।
চিনা সংবাদমাধ্যমগুলি জানিয়েছে, লকডাউনের সময় প্রবীণদের তুলনায় বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন জানানোর আগ্রহ অনেক বেশি দেখা গিয়েছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। সেটা নিছকই কোনও তুচ্ছ ঘটনার জেরেও হতে দেখা যাচ্ছে।
ফলে, এই পরিস্থিতিতে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদনগুলি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য চিনের আদালতগুলিও ‘একটু সময় নেওয়া’র নীতি গ্রহণ করেছে। কোনও আবেদন জমা পড়লেই তা গ্রহণ করা হচ্ছে না। আবেদনকারীকে আর এক বার ভেবে দেখার জন্য ৬ মাস সময় দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে সেই দম্পতি যদি তরুণ প্রজন্মের হয়।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy