মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
সংক্রমণ বেড়েই চলেছে আমেরিকায়। দেশের নানা প্রান্ত থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ফের ৬০ হাজার নতুন সংক্রমণের খবর মিলেছে বলে জানিয়েছে জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ লক্ষ ছুঁইছুঁই। মৃতের সংখ্যা এখন ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ছাড়িয়েছে। পরিসংখ্যান যা-ই বলুক, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, ‘‘সংক্রমণ তো বাড়বেই। কারণ গোটা বিশ্বের মধ্যে এখন আমেরিকাতেই সবচেয়ে বেশি পরীক্ষা হচ্ছে। রাশিয়া, চিন, ভারত, ব্রাজিলের মতো বড় বড় দেশের চেয়ে অনেক বেশি।’’ মৃত্যুর হারও অনেক দেশের থেকে আমেরিকার কম বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
তবে রীতিমতো আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি আমেরিকার দুই প্রদেশের— ফ্লরিডা ও ক্যালিফর্নিয়া। সংক্রমণের নয়া ভরকেন্দ্র হিসেবে ফ্লরিডার মায়ামির নাম উঠে এসেছে। যেখানকার অন্তত ৪৮টি হাসপাতালে আর একটিও আইসিইউ শয্যা ফাঁকা নেই বলে খবর। সংক্রমণ রুখতে ক্যালিফর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট গভর্নর গ্যাভিন নিউসম কাল থেকেই প্রদেশের সব ইন্ডোর রেস্তরাঁ, বার, সিনেমা হল, সালঁ, ধর্মস্থান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। পেনসিলভ্যানিয়ার ফিল্যাডেলফিয়া শহরের মেয়র জিম কেনি সাফ জানিয়েছেন, ২০২১-এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শহরে সব বড় সমাবেশ ও অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
কাল পর্যন্ত শোনা যাচ্ছিল, ট্রাম্প প্রশাসনের করোনা টাস্ক ফোর্সের শীর্ষে থাকা সংক্রমণ-বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউচির সঙ্গে প্রেসিডেন্টের মতবিরোধ এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, ফাউচিকে আর রোজকার করোনা-ব্রিফিংও করতে দিয়ে চায় না হোয়াইট হাউস। গুঞ্জন ওঠে, ফাউচিকে শীঘ্রই দায়িত্ব থেকে সরানো হতে পারে। ট্রাম্প অবশ্য আজ যাবতীয় জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘ওঁকে (ফাউচি) তো আমি ব্যক্তিগত ভাবে খুবই পছন্দ করি। আমাদের সম্পর্ক বেশ ভাল।’’ অথচ এই ট্রাম্পকেই গত সপ্তাহে এক টিভি সাক্ষাৎকারে বলতে শোনা গিয়েছিল, ফাউচি নাকি নানা ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছে তাঁর প্রশাসনকে। এখন হোয়াইট হাউস বলছে, প্রেসিডেন্ট নিশ্চিত ভাবেই ফাউচির যাবতীয় পরামর্শ শুনবেন। প্রয়োজনে মানবেনও। টাস্ক ফোর্সেই থাকছেন ফাউচি। প্রেসিডেন্ট করোনা-টেস্ট নিয়ে ঢাক পেটালেও, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর, রোজ যে ভাবে নমুনার পাহাড় জমছে, তাতে করোনা-পরীক্ষার ফল পেতে-পেতে সাত দিন পর্যন্ত সময় লাগছে। সম্প্রতি এ নিয়ে নড়ে বসেছে টাস্ক ফোর্স। চেষ্টা চলছে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সন্দেহভাজনের করোনা-পরীক্ষার ফল ঘোষণার।
আরও পড়ুন: চিন সাগর নিয়ে বেজিংকে কড়া বার্তা আমেরিকার
সংক্রমণের ছবিটা কম-বেশি সব দেশেই সমান। গত ৫ দিনে বিশ্ব জুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লক্ষ ছাড়িয়েছে। ব্রাজিলে এক সপ্তাহে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষ ৬০ হাজার জন। ভারতে চার দিনেই এক লক্ষ! মেক্সিকোয় ৩ লক্ষের গণ্ডি ছাড়িয়েছে সংক্রমণ। এ দিকে ইংল্যান্ডের এক দল বিজ্ঞানী আজ জানিয়েছেন, আগামী শীতে আরও ভয়ঙ্কর চেহারা নিতে চলেছে কোভিড-১৯। তাঁদের হিসেব বলছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে আগামী জুনের মধ্যে লক্ষ ছাড়াবে মৃতের সংখ্যা। পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে সব ইন্ডোর সমাবেশে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার কথা ভাবছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ। ২৪ জুলাই থেকে দেশের সব দোকানে মাস্ক পরা বাধ্যমূলক ঘোষণা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও। সংক্রমণের তৃতীয় ঝড় ওঠার আশঙ্কায় আজ থেকেই ফের কড়াকড়ির পথে হংকং প্রশাসন। সোমবার সেখানে ৫২ জনের শরীরে ভাইরাস মিলেছিল, যার মধ্যে ৪১ জনেরই কোনও সাম্প্রতিক ভ্রমণ ইতিহাস নেই। সেই কারণেই ফের গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা ছড়াচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy