Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

চিনের ট্রায়াল ‘ব্যর্থ’, বিতর্ক

যে ওষুধটির ব্যর্থতা নিয়ে বিতর্ক, তার নাম রেমডেসিভিয়ার। ওষুধটি তৈরি করছিল ‘গিলিড সায়েন্সেস’ নামে একটি সংস্থা।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিউ ইয়র্ক
সংবাদ সংস্থা  শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২০ ০৫:২৭
Share: Save:

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে প্রতিষেধকের সন্ধানে মরিয়া বিজ্ঞানীরা। আমেরিকা, চিন, জার্মানির পরে গত কাল থেকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করেছে ব্রিটেনও। এরই মধ্যে এল ‘দুঃসংবাদ’। চিনের একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ব্যর্থ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে আজ।

এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। খবরটি ফাঁস করে দু’টি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা। তারা জানিয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র ওয়েবসাইটে কিছু ক্ষণের জন্য ভেসে উঠেছিল গবেষণা ব্যর্থ হওয়ার একটি রিপোর্ট। কিন্তু তড়িঘড়ি তা ওয়েবসাইট থেকে মুছে দেওয়া হয়। রিপোর্ট যে প্রকাশ করা হয়েছিল, প্রমাণ হিসেবে স্ক্রিনশট দিয়েছে সংস্থা দু’টি।

যে ওষুধটির ব্যর্থতা নিয়ে বিতর্ক, তার নাম রেমডেসিভিয়ার। ওষুধটি তৈরি করছিল ‘গিলিড সায়েন্সেস’ নামে একটি সংস্থা। তারা অবশ্য ওই খবরের যৌক্তিকতা উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেছে, বেশ কিছু সম্ভাবনার কথা উঠে এসেছে তাদের গবেষণা থেকে।

আরও পড়ুন: ‘জীবাণুনাশক ইঞ্জেকশন নিন’, ফের বেফাঁস ডোনাল্ড ট্রাম্প

গবেষণার যে রিপোর্টটি হু-র ওয়েবসাইটে ফাঁস হয়েছিল, সেই অনুযায়ী— চিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালটিতে ২৩৭ জন রোগী যুক্ত ছিলেন। ১৫৮ জনকে ওষুধটি দেওয়া হয়েছিল। বাকি ৭৯ জন রোগীকে রাখা হয়েছিল কন্ট্রোল গ্রুপে। কন্ট্রোল গ্রুপ হল এমন এক দল, যাদের উপর পরীক্ষাধীন ওষুধটি প্রয়োগ না করে অন্য দলটির সঙ্গে তুলনা করর জন্য রাখা হয়। কিন্তু প্রথম ১৮ জনকে রেমডেসিভিয়ার দেওয়ার পরেই তাঁদের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তা ছাড়া কন্ট্রোল গ্রুপের সঙ্গে তুলনা করে আলাদা উন্নতিও চোখে পড়েনি রোগীদের মধ্যে। মাস গড়াতে আরওই অবনতি। রেমডিসিভিয়া দেওয়া হয়েছিল এমন রোগীদের ১৩.৯ শতাংশ লোক মারা যান। সেখানে কন্ট্রোল গ্রুপে থাকা রোগীদের মধ্যে মারা যান ১২.৮ শতাংশ।

রিপোর্টটি সম্পর্কে হু-কে প্রশ্ন করা হলে তারা জানায়, বিষয়টি নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। ভুলবশত আগেই প্রকাশ হয়ে গিয়েছিল। ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থাটির এক মুখপাত্রের কথায়, ‘‘আমাদের বিশ্বাস ওই রিপোর্টে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য খুব কম লোক নাম নতিভুক্ত করেছিল। তাই পরীক্ষাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। গবেষণাটি অসম্পূর্ণ। তাই এ ভাবে ওষুধটি সম্পর্কে বলা অর্থহীন। বরং ‘গিলিড সায়েন্সেস’-এর ওই মুখপাত্রের কথায়, ‘‘গবেষণাটি অসম্পূর্ণ হলেও তা থেকে পাওয়া তথ্যে বেশ কিছু সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে। বিশেষ করে যাঁদের দ্রুত চিকিৎসা শুরু হয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে ভাল ফল মিলেছে।’’

রেমডেসিভিয়ার নিয়ে গবেষণা সবার প্রথমে শুরু হয়েছিল। অনেকে এর সাফল্যের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। ‘লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন’-এর অধ্যাপক স্টিফেন ইভান্স বলেন, ‘‘যদি এ রকমই হয় যে, রোগীকে দ্রুত ওষুধ দিলে তবেই সে ভাল হবে, তা হলে তার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ আছে।’’

কোভিড-১৯ সংক্রান্ত একাধিক গবেষণা চলছে বিশ্বে। ব্রিটেন ও নিউজ়িল্যান্ডের একটি দল নাকে থাকা দু’ধরনের কোষ চিহ্নিত করেছেন। তাতে কিছু প্রোটিন থাকে যা করোনা-সংক্রমণ তরান্বিত করে। নেচার-এ প্রকাশিত হয়েছে রিপোর্টটি। ফ্রান্সে আবার নিকোটিন নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। কিছু ধূমপানকারী রোগী দ্রুত সুস্থ হয়েছেন। তা থেকেই আন্দাজ করা হচ্ছে, ভাইরাসটির সঙ্গে যুঝতে কার্যকরী দাওয়াই হতে পারে নিকোটিন।

প্রথম সারির জার্নাল ‘ল্যানসেট’-এর প্রধান সম্পাদক রিচার্ড হর্টনের কথায়, ‘‘ভ্যাকসিনের সন্ধানে বিশ্ব জুড়ে চলা গবেষণাগুলো ছাড়া-ছাড়া। যে যার মতো নিজের গবেষণাটুকু করছেন। হু-র নেতৃত্বে একে অপরের সঙ্গে সমন্বয় না রাখলে সমস্যা।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Clinical Trial China WHO
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy