করোনা রোগীদের চিকিৎসা চলছে চিনে। -ফাইল ছবি।
বাজারে অনেক দিন ধরে চালু এইচআইভি ও ফ্লুয়ের কয়েকটি ওষুধ কোভিড-১৯ রোগীকে সারিয়ে তুলতে ব্যর্থ হল। চিনে সাম্প্রতিক একটি ট্রায়ালে এইচআইভি ও ফ্লুয়ের কয়েকটি ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছিল করোনা রোগীদের উপর। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। বরং দেখা গিয়েছে, ওই ওষুধগুলির পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া রয়েছে কোভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘ডেলি মেল অনলাইন’ এই খবর দিয়ে জানিয়েছে, ৮৬ জন করোনা রোগীর উপর প্রয়োগ করা হয়েছিল এইচআইভি-র দু’টি ওষুধ ‘লোপিনাভির’ ও ‘রিতোনাভির’। গবেষণা চালিয়েছেন গুয়াংঝাউ প্রদেশের সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজেস অফ গুয়াংঝাউ এইটথ পিপল্স হসপিটালের চিকিৎসকেরা।
ওই ট্রায়ালে ফ্লুয়ের ওষুধ ‘আরবিডল’ নিয়েও পরীক্ষানিরীক্ষা চালানো হয়। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে বানানো এই ওষুধের চল রয়েছে এখন শুধুই চিন ও রাশিয়ায়।
কিন্তু তিনটি ওষুধই কোভিড রোগীদের সারিয়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে। যাঁদের উপর ওষুধগুলি প্রয়োগ করা হয়েছিল, দেখা গিয়েছে, পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ায় তাঁদের কারও হয়েছে ডায়েরিয়া বা কেউ তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছেন। আবার কারও খিদে কমে গিয়েছে। ট্রায়ালের পর গবেষকরা জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ রোগীদের সারিয়ে তুলতে এই ওষুধগুলি ব্যবহার না করাই ভাল। এর আগে অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ ‘রেমডেসিভির’ও কোভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।
আরও পড়ুন: রিপোর্টের ক্ষেত্রে আশা করি কেন্দ্রীয় দল নিরপেক্ষ হবে: মুখ্যসচিব
আরও পড়ুন: কিট দেওয়ার নাম নেই, বদনামের চক্রান্ত: মমতা
সহযোগী গবেষক লিংহুয়া লি বলেছেন, “আমরা দেখেছি, লোপিনাভির, রিতোনাভির বা আরবিডল কোনওটাই কাজ করছে না কোভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে। বরং ওই সব ওষুধ প্রয়োগের ফলে নানা ধরনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার শিকার হতে হয়েছে রোগীদের।’’
গবেষকরা অবশ্য এও জানিয়েছেন, তাঁরা পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছেন যাঁরা সবে বা দিনকয়েক হল আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। তবে যে সব করোনা রোগী প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছেন, তাঁদের উপর এই সব ওষুধ হয়তো বা কার্যকর হতে পারে।
এর আগে একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, ‘লোপিনাভির’ ও ‘রিতোনাভির’ গবেষণাগারে কোভিড-১৯ ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি রুখতে পারে।
এই ওষুধগুলি কোভিড-১৯ রোগীদের সারিয়ে তুলতে পারে কি না, তা খতিয়ে দেখতে ব্রিটেনেও চলছে একটি ট্রায়াল, যার নেতৃত্বে রয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। যে ট্রায়ালের নাম দেওয়া হয়েছে ‘রিকভারি’।
চিনা গবেষকরা ৮৬ জন করোনা রোগীকে তিনটি দলে ভাগ করেছিলেন। একটি দলে ছিলেন ৩৪ জন। তাঁদের উপর প্রয়োগ করা হয়েছিল লোপিনাভির ও রিতোনাভির। ৩৫ জনের আর একটি দলের উপর প্রয়োগ করা হয়েছিল আরবিডল। বাকি ১৭ জনকে দেওয়া হয়েছিল অন্যান্য ওষুধ। ১৪ দিন পর তিনটি দলের রোগীদের ক্ষেত্রেই ফলাফল হয়েছে একই রকমের। গবেষকরা জানিয়েছেন, লোপিনাভির, রিতোনাভির বা আরবিডলের প্রয়োগে করোনা রোগীদের জ্বর বা কফ কমতে দেখা যায়নি। দেখা যায়নি ফুসফুসের প্রদাহ কমতেও।এর আগে ব্রিটিশ দৈনিক ‘ফিনান্সিয়াল টাইমস’-এর একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছিল, ‘রেমডেসিভির’ চিনের ২৩৭ জন চিনের রোগীর উপর প্রয়োগ করা হয়েছিল। তার মধ্যে ১৫৮ জনকে সরাসরি ওষুধ দেওয়া হয়েছিল এবং ৭৯ জনকে একটি নিয়ন্ত্রিত দলে রেখে প্রয়োগ করা হয়েছিল। অর্থাৎ এই ৭৯ জনকে দু’তিনটি দলে ভাগ করে একটি দলকে রেমডেসিভির এবং অন্য দলগুলিকে প্রচিলত ওষুধ দিয়ে বা কোনও ওষুধ না দিয়ে পার্থক্য বোঝার চেষ্টা হয়েছিল। এক মাস পর দেখা যায়, নতুন ওষুধ দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে মৃত্যুর হার বেশি। মৃত্যুর হার ১২.৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৩.৯ শতাংশ হয়ে যায়। এ ছাড়া ১৮ জন রোগীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় তাঁদের ওষুধ প্রয়োগ করা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই কারণেই এই টিকা ব্যর্থ বলে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy