Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Corona Virus

প্রাণপণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি আমরা

যুবরাজ চার্লস, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, স্বাস্থ্যসচিব ম্যাট হ্যানকক ইতিমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত। ভারতীয় বংশোদ্ভুত অর্থমন্ত্রী চ্যান্সেলর ঋষি সুনক করোনা রোগীর সংস্পর্শে এসে গৃহবন্দি। প্রধানমন্ত্রী জনসন গৃহবন্দি অবস্থাতেই কাজ করছেন।

ছবি: রয়টার্স

ছবি: রয়টার্স

চন্দ্রকণা সিংহ ও ময়ুখ ভট্টাচার্য
নিউ ক্যাসল ও লন্ডন (ব্রিটেন) শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৩৬
Share: Save:

ইংল্যান্ডে কোভিড-১৯ ঢুকে পড়েছিল অনেক আগেই। প্রাথমিক জড়তা, বিতর্ক ইত্যাদি কাটিয়ে সরকার যত দিনে সক্রিয় হয়েছে, তত দিনে রোগটা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। লন্ডন হয়ে উঠেছে করোনার কেন্দ্র। ২৩ মার্চ থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে। যুবরাজ চার্লস, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, স্বাস্থ্যসচিব ম্যাট হ্যানকক ইতিমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত। ভারতীয় বংশোদ্ভুত অর্থমন্ত্রী চ্যান্সেলর ঋষি সুনক করোনা রোগীর সংস্পর্শে এসে গৃহবন্দি। প্রধানমন্ত্রী জনসন গৃহবন্দি অবস্থাতেই কাজ করছেন।

জরুরি জিনিসপত্র পাওয়া যায় না, এ রকম সব দোকানপাট বন্ধ। রাস্তায় গাড়ি আট শতাংশেরও কম। জরুরি পরিষেবা বাদে সবাইকে বাড়ি থেকে কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেট্রো রেল চললেও সংখ্যায় খুব কম।

সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। পড়ুয়ারা বাড়ি থেকেই অনলাইনে ক্লাস করছে। থিয়েটার, পাব, জিম, পার্ক— বন্ধ সব কিছুই। অনলাইন শপিং সংস্থাগুলি বাড়ির দরজায় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দিচ্ছে। একটি বাড়ি থেকে মাত্র এক জনকে নিকটবর্তী দোকান বা সুপারমার্কেটে যেতে দেওয়া হচ্ছে। সুপারমার্কেটে লম্বা লাইন। কারণ, দু’মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হচ্ছে। জীবনযাত্রা হঠাৎ করে সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। সত্যি বলতে গেলে, আমরা এখন বাঁচার জন্য লড়ছি। এখন বুঝতে পারছি, স্বাধীনতার আসল মানে কী!

ন্যাশন্যাল সেল্থ সার্ভিসে, হাসপাতালে, ক্লিনিকগুলোয় কাজের ধরন হঠাৎ ভীষণ বদলে গিয়েছে। সমস্ত রুটিন কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে। অন্য সমস্ত ক্লিনিক বাতিল করে ফিভার ক্লিনিক খোলা হয়েছে। হাসপাতালে অন্যান্য রোগের ওয়ার্ডগুলোকে কোভিড-১৯ ওয়ার্ডে পরিণত করা হয়েছে। অপারেশন থিয়েটারগুলোকে পাল্টে আইসিইউ করা হয়েছে। সমস্ত কনভেনশন সেন্টারে এবং কিছু কিছু ছোট এয়ারপোর্টে অস্থায়ী হাসপাতাল বানানো হয়েছে। কয়েকটা ছোট এয়ারপোর্টে অস্থায়ী মর্গও তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্সদের করোনা রোগীর চিকিৎসায় নিয়োগ করা হচ্ছে। সদ্য অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের পুনর্নিয়োগ করা হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন না হলে করোনা রোগী ছাড়া অন্য রোগী দেখা বারণ হয়ে গিয়েছে। অন্যান্য রোগীর চিকিৎসা টেলিফোন, ভিডিয়ো কল ও টেলিমেডিসিনের মাধ্যমেই করতে হচ্ছে। মেডিক্যাল স্কুল ও রয়্যাল কলেজগুলোয় সমস্ত পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। সমস্ত মেডিক্যাল ক্লাস ও কনফারেন্সও বাতিল হয়েছে।
ইমার্জেন্সি ও আইসিইউয়ে প্রবল চাপ। করোনা রোগীর চিকিৎসা করা ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।অনেকে মারা গিয়েছেন। স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য মাস্ক ও সুরক্ষা পোশাকের অভাব সর্বত্র। এই নিয়ে সরব হয়েছে মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-ও। সরকার বলেছে খুব তাড়াতাড়ি প্রচুর মাস্ক, পিপিই ও কোভিড-১৯ কিটের ব্যবস্থা হবে। স্বাস্থ্যকর্মীদের সহজে ও দ্রুত কোভিড-১৯ পরীক্ষাও করা হবে।

সীমিত সাধ্যের মধ্যে এ ভাবেই আমরা স্বাস্থ্যকর্মীরা লড়ে চলেছি।


(দুই লেখকই চিকিৎসক)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona Virus United Kingdom
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy