চিত্রসাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি। ফাইল চিত্র।
‘‘ভারতীয়দের একেবারেই সহ্য করতে পারে না তালিবান।’’
কথাগুলি যিনি বলছিলেন, আফগান সেনাবাহিনীর সেই কমান্ডার বিলাল আহমেদ নিহত ভারতীয় চিত্রসাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকির শেষ মুহূর্তের সাক্ষী। আফগানিস্তানের কন্দহরের স্পিন বোল্দাকে সেনা এবং তালিবানের গুলিযুদ্ধের মধ্যে পড়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রাণ হারিয়েছেন সংবাদ সংস্থা রয়টার্সে কর্মরত পুলিৎজ়ার জয়ী দানিশ। সে সময়ে আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীর বিশেষ শাখা ‘আফগান স্পেশাল ফোর্সেস’-এর সঙ্গে ঘুরছিলেন তিনি। সেই বাহিনীর কমান্ডার বিলাল। গত পাঁচ বছর আফগান সেনাবাহিনীতে রয়েছেন বিলাল। তাঁর দাবি, তালিবান যতই অস্বীকার করুক, তাদের গুলিতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৩৮ বছর বয়সি চিত্রসাংবাদিক। এবং পুরো ঘটনাটি তাঁর চোখের সামনেই হয়েছে, দাবি করেছেন বিলাল।
একাধিক গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল দানিশের শরীর। তার জেরেই মৃত্যু— কাবুলে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের দেওয়া দানিশের মৃত্যুর শংসাপত্রে লেখা এমনটাই। তবে শুধু গুলি করেই শান্ত হয়নি তালিবান। অনেকেরই সন্দেহ, দানিশের দেহটি যে-ভাবে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়, তা থেকে এটা অন্তত স্পষ্ট যে পরে আরও অত্যাচার চালানো হয়েছে দেহটির উপর। ‘প্রত্যক্ষদর্শী’ বিলালের দাবিও তেমনই।
বিলালের বয়ান, পাকিস্তান সীমান্তবর্তী ওই অঞ্চলে তালিবানের ছোড়া গুলিতে কিছুক্ষণের ব্যবধানে প্রাণ হারান এক আফগান কমান্ডার এবং দানিশ। তালিবান কমান্ডারেরা দানিশের পরিচয় জানার সঙ্গে সঙ্গেই তেতে ওঠেন। তাঁর কথায়, ‘‘পরিচয়পত্র থেকে দানিশ ভারতীয় জানতে পেরেই তাঁর দেহটি বিকৃত করে দেওয়ার নির্দেশ আসে। সেই মতো দানিশের মাথার উপর দিয়ে চালিয়ে দেওয়া হয় একটি গাড়ি! তার আগেই অবশ্য মৃত্যু হয়েছিল তাঁর।’’ ভারত এবং ভারতীয়দের প্রতি ‘বিশেষ ঘৃণা’ থেকেই এই কাজ করা হয়েছে বলে জোর গলায় দাবি করছেন বিলাল।
তবে বিলাল যাই বলুন না কেন, দেহ বিকৃত করা তো দূরের কথা, দানিশের মৃত্যুর জন্য যে তারা দায়ী সে কথাই স্বীকার করেনি তালিবান। গত বৃহস্পতিবার থেকেই এই দাবিতে অনড় তালিবান। সম্প্রতি ফের সেই সুরেই তালিবানের মুখপাত্র মৌলানা ইউসুফ আহমাদি এক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে ফোনে জানিয়েছেন, ‘‘আমরা ওঁকে (দানিশ) মারিনি। তিনি শত্রুপক্ষের বাহিনীর সঙ্গে ছিলেন। কোনও সাংবাদিক যদি এখানে এসে থাকেন, তাঁর উচিত আমাদের সঙ্গে কথা বলা। আমরা নিয়মিত সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি।’’
শুক্রবার দুপুরে রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির হাতে দানিশের ক্ষতবিক্ষত দেহটি তুলে দিয়েছিল তালিবানই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy