Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Jatindra Mohan Sengupta

যতীন্দ্রমোহনের বাড়ি জাদুঘর হচ্ছে চট্টগ্রামে

কংগ্রেস নেতা এবং যশস্বী আইনজীবী যাত্রামোহন সেনগুপ্ত চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জে এই বাড়িটি করেছিলেন।

বুলডোজারে ক্ষতিগ্রস্ত যতীন্দ্রমোহনের (ইনসেটে) বাড়িটি। নিজস্ব চিত্র

বুলডোজারে ক্ষতিগ্রস্ত যতীন্দ্রমোহনের (ইনসেটে) বাড়িটি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৫২
Share: Save:

অবিভক্ত ভারতের কংগ্রেস নেতা যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তের চট্টগ্রামের বাড়িটি অধিগ্রহণ করল বাংলাদেশ সরকার। ব্রিটিশ-বিরোধী স্বাধীনতার লড়াই এবং মুক্তিযুদ্ধের জাদুঘর নির্মাণ হবে এখানে।

কংগ্রেস নেতা এবং যশস্বী আইনজীবী যাত্রামোহন সেনগুপ্ত চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জে এই বাড়িটি করেছিলেন। যতীন্দ্রমোহন তাঁর পুত্র। যতীন্দ্রমোহনের স্ত্রী বিশিষ্ট কংগ্রেস নেত্রী নেলী সেনগুপ্ত ১৯৭২ সাল পর্যন্ত এই বাড়িতে আসাযাওয়া করেছেন। তার পরে সেটি ‘শত্রু সম্পত্তি’র তালিকায় পড়ে। বেশ কিছু পরিবার জবরদখল করে বাড়িটিতে বসবাস করতে থাকেন। ছোটদের একটি বেসরকারি স্কুলও শুরু হয়েছিল বাড়িটিতে। কয়েক সপ্তাহ আগে এক ব্যবসায়ী বুলডোজার এনে বাড়িটি ভাঙতে শুরু করায় হইচই বেঁধে যায়। আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্তের নেতৃত্বে এলাকার মানুষ প্রতিরোধে নামেন। আদালত বাড়ি ভাঙায় স্থগিতাদেশ জারি করায় ওই ব্যবসায়ী দলবল নিয়ে ফিরে যান। তত ক্ষণে বাড়ির সামনের অনেকটা অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে।

এর পরেই চট্টগ্রামের বিভিন্ন সামাজিক ও সাস্কৃতিক সংগঠন বাড়িটি অধিগ্রহণ করে সংরক্ষণের দাবি তুলে রাস্তায় নামেন। তাঁদের কথায়, চট্টগ্রামের ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনের স্মারক এই বাড়ি। মুক্তিযোদ্ধারাও আশ্রয় নিয়েছেন এই বাড়িতে। যাত্রামোহন সেনগুপ্ত শুধু কংগ্রেস নেতাই ছিলেন না, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাও। বহু বার তাঁর বাড়িটি অধিগ্রহণ ও সংরক্ষণের দাবি তোলা হয়েছে প্রশাসনের কাছে। এ বার এক ব্যবসায়ী নিজেকে এই বাড়ির মালিক দাবি করে সেটি ভেঙে ফেলতে চলে এলেন। আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়ে যাত্রামোহনের বাড়ি অধিগ্রহণের দাবিকে সমর্থন করেন চট্টগ্রামের বাসিন্দা শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁরা এই দাবি পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেন।

গত শনিবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলাশাসক বদিউল আলম ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনী আক্তার পুলিশ বাহিনী নিয়ে রহমতগঞ্জে হাজির হয়ে বাড়িটির গায়ে অধিগ্রহণের নোটিস লাগান। আর একটি নোটিসে বলা হয়, ‘স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থান’। এর পরে পুলিশ বাড়িটিতে বসবাসকারী জবরদখলকারী পরিবারগুলিকে উচ্ছেদ করে পাহারা বসায়। অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, “বাড়িটি ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক নিদর্শন। প্রশাসন এটির দায়িত্ব নিচ্ছে। ২০১৮ সালে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সভায় এই বাড়িটি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এখন তা বাস্তবায়ন করা হবে। জাদুঘর নির্মাণের জন্য বাড়িটিকে চিহ্নিত করা হল।” প্রশাসনের এই পদক্ষেপে বিজয়োৎসব পালন করেন আন্দোলনকারীরা। দ্রুত তাঁদের দাবি মেনে নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

অন্য বিষয়গুলি:

Bangladesh Congress Leader Jatindra Mohan Sengupta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy