E-Paper

কানাডা প্রশ্নে জি২০ ঘোষণাই ঢাল নয়াদিল্লির

কানাডা-কাণ্ডের জেরে এক দিকে ‘মিত্র’ রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে কূটনৈতিক দৌত্য চালিয়ে ট্রুডোর দেশের উপরে পরোক্ষ চাপ তৈরি করার চেষ্টা করছে ভারত।

An image of Narendra Modi and Justin Trudeau

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং জাস্টিন ট্রুডো। —ফাইল চিত্র।

প্রেমাংশু চৌধুরী ও অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:৪৮
Share
Save

খলিস্তানি নেতার হত্যায় ‘ভারতের হাত’ রয়েছে বলে জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ
তোলার পর থেকে ভারত-কানাডা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অগ্নিগর্ভ। কেন্দ্রের আশঙ্কা, এর জেরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘বিশ্বগুরু’ ভাবমূর্তি ধাক্কা খেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে ক্ষত মেরামতে জি২০-র দিল্লি ঘোষণাপত্রকে ঢাল হিসেবে ব্যবহারের কৌশল নিল নয়াদিল্লি।

কানাডা-কাণ্ডের জেরে এক দিকে ‘মিত্র’ রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে কূটনৈতিক দৌত্য চালিয়ে ট্রুডোর দেশের উপরে পরোক্ষ চাপ তৈরি করার চেষ্টা করছে ভারত। অন্য দিকে সরাসরি কানাডাকে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, একশো চল্লিশ কোটি দেশবাসীর বিশাল বাজারসমৃদ্ধ এই রাষ্ট্রের সঙ্গে শত্রুতা করলে তার ফল ভাল হবে না। তাই এখনও পর্যন্ত ভিসা বন্ধ করে দেওয়া, দেশ থেকে কানাডার কূটনীতিকদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার মতো আক্রমণাত্মক নীতিই নিতে দেখা যাচ্ছে সাউথ ব্লককে।

এই চাপানউতোরে এ বার জি২০-র দিল্লি ঘোষণাপত্রকেও অস্ত্রের মতো ব্যবহার করল
নয়াদিল্লি। ওই ঘোষণাপত্রে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছিল। আজ ভারত মনে করিয়ে দিয়েছে, কানাডাও সেই ঘোষণাপত্রের অংশীদার ছিল। জি২০-তে ভারতের শেরপা অমিতাভ কান্ত আজ দিল্লিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় বলেন, ‘‘জি২০ সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছিল, কোনও দেশকেই সন্ত্রাসবাদীদের স্বর্গরাজ্য হতে দেওয়া যাবে না। জঙ্গিদের কোনও আর্থিক বা রাজনৈতিক মদত দেওয়া চলবে না। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে সহযোগিতা মজবুত করা হবে। কানাডা তার অংশীদার ছিল।’’ বৃহস্পতিবারই বিদেশ মন্ত্রক অভিযোগ তুলেছিল, কানাডা সন্ত্রাসবাদীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। আজ অমিতাভ কান্ত সুকৌশলে মনে করিয়েছেন, ঠিক এটিরই বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল জি২০। আর নিজে দিল্লিতে এসে তাতে শামিল হয়েছিলেন ট্রুডো।

জি২০-র ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছিল, আন্তর্জাতিক স্তরে সন্ত্রাসবাদে আর্থিক মদত রুখতে
এই সংক্রান্ত নজরদারি সংস্থা এফএটিএফ (ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স)-কে সাহায্য করা হবে। সন্ত্রাসবাদীরা যাতে আর্থিক নয়ছয় থেকে পাওয়া অর্থ লুকিয়ে রাখতে না পারে বা তা কাজে লাগাতে না পারে— সে জন্য এফএটিএফ-এর মানদণ্ড মেনে চলা হবে। অমিতাভ কান্তের বক্তব্য, জি২০-তে ভারতের সভাপতিত্বের মেয়াদ শেষ হতে আরও দু’মাস বাকি রয়েছে। এই সময়কালে এফএটিএফ-এ যাতে জি২০ ঘোষণাপত্র অনুযায়ী কাজ হয়, সেই দাবি তুলে ভারত সরব হবে। মোদী নিজেও বলেছেন যে, জি২০-র ঘোষণাপত্র এফএটিএফ-এ কার্যকর করতে হবে।

সমস্যা হল, এই জি২০ ঘোষণাপত্রে সই করা আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্সের মতো রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে কানাডার কৌশলগত এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক অত্যন্ত পোক্ত। কানাডা-সহ এই রাষ্ট্রগুলির অনেকেই জি৭-এর সদস্য। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রণনীতিতে চিনকে চাপে রাখতে ভারতকে আমেরিকার প্রয়োজন ঠিকই। রাশিয়ার সঙ্গে দর-কষাকষির প্রশ্নেও এই মুহূর্তে উপযোগিতা রয়েছে নয়াদিল্লির। ভারত আপাতত ভূ-কৌশলগত মানচিত্রে নিজের প্রভাব একটা পর্যায় পর্যন্ত যে খাটাতে পেরেছে, তা জি২০-র ঘোষণাপত্রে ঐকমত্যে পৌঁছনো থেকেই প্রমাণিত। কিন্তু ভারতের কারণে বা জি২০ ঘোষণাপত্রকে ধ্রুবক জ্ঞান করে পশ্চিমি বিশ্ব কানাডার সঙ্গে বৈরিতা বাড়াবে, এমনটা মনে করছেন না পর্যবেক্ষকেরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

PM Narendra Modi Justin Trudeau G20 Summit 2023

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।