করোনা-বিধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। পোশাকি নাম, ‘স্বাধীনতার দাবিতে একজোট’। শনিবার লন্ডনে। রয়টার্স।
‘স্বাধীনতার দাবিতে একজোট’। এই নামেই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামলেন ব্রিটিশদের একাংশ। আজ, শনিবার সেন্ট্রাল লন্ডনের রাস্তায় আছড়ে পড়ল হাজার হাজার মানুষের ভিড়। স্লোগান উঠল, ‘‘বন্দিদশা নয়, স্বাধীনতা চাই। নিউ নর্ম্যাল জীবন চাই না। হেল্থ পাসপোর্ট চাই না।’’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র সাবধানবার্তা উড়িয়ে সম্প্রতি কড়াকড়ি অনেকটাই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্রিটেনে। খুলে দেওয়া হয়েছে আউটডোর কাফে, রেস্তরাঁ। চালু হয়েছে জিম। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে খুলেছে চিড়িয়াখানা। অর্থনীতির চাকা ঘোরাতেই এই সরকারি সিদ্ধান্ত। নতুন মিউট্যান্ট স্ট্রেন নিয়ে বারবার সাবধান করছে হু। কারণ, বহু ক্ষেত্রে শোনা যাচ্ছে, মিউটেশন ঘটিয়ে ভাইরাস এতটাই শক্তিশালী হয়েছে যে, প্রতিষেধকে কাজ দিচ্ছে না। কিন্তু স্রেফ দ্রুত গতিতে চলা টিকাকরণের ভরসায় করোনা-বিধি লঘু করেছে সরকার। যদিও তাতেও খুশি নন বাসিন্দারা। সম্পূর্ণ স্বাধীনতার দাবিতে তাই আজ পথে নামা।
কোনও পারস্পরিক দূরত্ব ছিল না বিক্ষোভ সমাবেশে। ছিল না মুখে মাস্ক। বিক্ষোভকারীদের অনেকের হুঙ্কার, ‘‘শনিবার শহরের সবচেয়ে বড় স্ট্রিট পার্টি দেখবে লন্ডনবাসী।’’ ‘পার্টি’-তে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে খোলা চিঠিতে লেখা হয়েছিল: ‘‘তোমাদের বাজনা নিয়ে এসো, সুর নিয়ে এসো, স্বর নিয়ে এসো, হৃদয় নিয়ে এসো। স্বাস্থ্য স্বাধীনতা চাই। কোনও স্বাস্থ্য পাসপোর্ট চাই না।’’
সম্প্রতি ব্রিটেন সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, যাঁদের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে, তাঁদের ভ্যাকসিন পাসপোর্ট দেওয়া হবে। পাসপোর্টধারী কাজে যোগ দিতে পারবেন, এক জায়গা থেকে অন্যত্র যাওয়ার সুযোগ সুবিধাও পাবেন। কিছু পর্যবেক্ষক সংস্থা এ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বলেছিল, এ হেন পদক্ষেপে সমাজে বিভাজন তৈরি হবে। যাঁরা সদ্য ব্রিটেনে আশ্রয় নিয়েছেন, কৃষ্ণাঙ্গ ও সংখ্যালঘুরাই আর্থিক ভাবে পিছিয়ে রয়েছেন ব্রিটেনে। সমাজের এই দরিদ্র অংশই এখনও টিকা পায়নি। তাঁরা বৈষম্যের চোখে দেখতে পারেন সরকারের এই সিদ্ধান্তকে।
বস্তুত সেটাই হয়েছে আজ। পুলিশ-প্রশাসন আগে থেকেই তৈরি ছিল। মেট্রোপলিটন পুলিশের এক মুখপাত্র জানান, একাধিক দল বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে। এ ভাবে বিক্ষোভ দেখানোয় বিপদ আরও বাড়ছেই। তবে পরিস্থিতি অনুধাবন করে এই বিক্ষোভকে বেআইনি তকমা দেওয়া হয়নি। বরং মেট্রোপলিটন পুলিশ টুইটারে ঘোষণা করে: ‘‘বিক্ষোভের কথা মাথায় রেখে সেন্ট্রাল লন্ডনে আজ পুলিশ বেশি থাকবে। যাঁরা বিক্ষোভে যোগ দিতে আসছেন, তাঁরা জেনে রাখুন, এই বিক্ষোভ বেআইনি নয়। তবে সংক্রমণের বিপদ কিন্তু থাকছে।
ও দিকে, ব্রিটেনে সর্বপ্রথম টিকা দেওয়া শুরু হলেও টিকাকরণে সবচেয়ে এগিয়ে ইজ়রায়েল। বিশ্বে প্রথম। প্রাপ্তবয়স্কদের ৮১ শতাংশের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। গোটা দেশের জনসংখ্যা ধরলে ৫৩ শতাংশ মানুষ পেয়ে গিয়েছে ‘রক্ষাকবচ’। তার সুফলও মিলছে। দেশজুড়ে সংক্রমণ এখন অনেকটাই কম। ইজ়রায়েল সরকার জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার এক জনেরও মৃত্যু হয়নি এ দেশে। গত বছর জুন মাসের পরে এই প্রথম মৃত্যুহীন হল ইজ়রায়েল। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইউলি এডেলস্টেন বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতর নজির গড়েছে। দেশবাসীর জন্য অভূতপূর্ব ঘটনা। আমরা এক সঙ্গে এই ভাইরাসকে নাশ করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy